গানে গানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে আয়োজন করা হয়েছে কনসার্ট। কনসার্টে গান শোনাতে আসছে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় দুই ব্যান্ড ‘চন্দ্রবিন্দু’ ও ‘ফসিলস’। আগামী ৮ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হবে এই আয়োজন। নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে ওই দিন নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। এ অনুষ্ঠানে আরও গাইবে বাংলাদেশের ওয়ারফেজ ও ব্যান্ড আভাস।
চন্দ্রবিন্দুর গান মানেই হই-হুল্লোড়, সহজ কথায় গভীর বিষয়ের স্বাদ। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, তিন দশকের বেশি সময় ধরে এ ব্যান্ডের গান সমান জনপ্রিয় বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছেও। ‘বন্ধু তোমায় এ গান শোনাব’, ‘যদি বলো হ্যাঁ’, ‘ত্বকের যত্ন নিন’, ‘আদরের নৌকা’, ‘ভিনদেশি তারা’, ‘অঙ্ক কী কঠিন’, ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’, ‘জুজু’, ‘এইটা তোমার গান’সহ চন্দ্রবিন্দুর অনেক গান শ্রোতাদের মুখে মুখে ফেরে।
গানের বাইরেও এ ব্যান্ডের প্রধান তিন সদস্য চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় ও উপল সেনগুপ্ত নানাভাবে জনপ্রিয়। বিতর্ক ও বক্তৃতা দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন চন্দ্রিল, অনিন্দ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে নাম করেছেন আর উপল ছবি এঁকে জয় করেছেন মানুষের মন। সামনাসামনি তাঁদের দেখা ও গান শোনার সুযোগ হবে, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কনসার্ট নিয়ে উৎসাহী শিক্ষার্থীরা।
ভিন্ন ধরনের গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া চন্দ্রবিন্দু কয়েকবার বাংলাদেশে গাইতে এসেছে। এর আগে ঢাকা ক্লাব, ফ্যান্টাসি কিংডম, চট্টগ্রামের ফয়’স লেকে শ্রোতাদের গান শুনিয়েছে ব্যান্ডটি। সর্বশেষ ২০১৪ সালে দেশ টিভির আমন্ত্রণে ঢাকা সফরে এসেছিল তারা। সে হিসাবে প্রায় এক দশক পর ঢাকায় পা রাখছে চন্দ্রবিন্দু।
অন্যদিকে গায়ক রূপম ইসলামের প্রতিষ্ঠিত রক ব্যান্ড ফসিলস। ১৯৯৮ সালে এ ব্যান্ডের আত্মপ্রকাশের পর পশ্চিমবঙ্গে রক মিউজিক নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পায়। ‘নীল রং ছিল ভীষণ প্রিয়’, ‘তোমার চোখের কালো চাই’, ‘কমল মেঘের ওজন’, ‘আরও একবার’, ‘হাসনুহানা’, ‘বিষাক্ত মানুষ’, ‘খোঁড়ো আমার ফসিলস’সহ এ ব্যান্ডের জনপ্রিয় গানের সংখ্যা অনেক।
সংগীতের হাত ধরে এত দূর আসার পেছনে রূপম ইসলাম বাংলাদেশের ব্যান্ডশিল্পীদের প্রতি নানা সময়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ২০১১ সালে দেশ টিভির এক অনুষ্ঠানে গাইতে এসে রূপম বলেছিলেন, ‘আমার অ্যালবাম প্রথম হিট হয়েছিল বাংলাদেশে। ‘‘তোর ভরসাতে’’ নামের অ্যালবামটি ১৯৯৮ সালে প্রকাশ পায়। তখন কলকাতার লোকদের আগে বাংলাদেশিরা আমাকে কাছে টেনে নিয়েছিল। বাংলাদেশের ফিডব্যাক, মাইলস, জেমস ভাই, আইয়ুব বাচ্চু ভাইয়ের গান শুনে শুনে বড় হয়েছি, অনেক কিছু শিখেছি তাঁদের কাছে।’
উল্লেখ্য, এর আগে শোনা গিয়েছিল গত মাসের ২ তারিখ কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হবে। তখন সেখানে গান গাওয়ার কথা ছিল ‘নগর বাউল’ জেমসের। কিন্তু নতুন তারিখের এ সময় কনসার্টের জন্য লন্ডনে অবস্থান করবেন জেমস। তাই ‘নগর বাউল’ জেমসকে ছাড়াই হচ্ছে এ আয়োজন।
কনসার্টের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে আয়োজন করা হয়েছে কনসার্ট। নবীনদের জন্য আলাদা জায়গা থাকবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা শিক্ষার্থী তাদের জন্যও আলাদা জায়গা থাকবে, ছেলে-মেয়ে আলাদা থাকবে। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বন্ধুরাও আসতে পারবে তবে তাদেরকেও নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কঠোর নিরাপত্তা বলয় থাকবে।’