তামিমের ব্যাটিংয়ে কুমিল্লাকে হারিয়ে প্লে-অফে বরিশাল   

অধিনায়ক তামিম ইকবালের ব্যাটিং দৃঢ়তায় চতুর্থ ও শেষ দল হিসেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্লে-অফ নিশ্চিত  করেছেন ফরচুন বরিশাল। আজ লিগ পর্বে নিজেদের ১২তম ও শেষ ম্যাচে বরিশাল ৬ উইকেটে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। এই জয়ে ১২ ম্যাচে ৭ জয় ও ৫ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থেকে টেবিলের তৃতীয় স্থান নিশ্চিতের মাধ্যমে  প্লে-অফে খেলবে বরিশাল। ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে চতুর্থস্থানে থেকে প্লে-অফ খেলতে নামবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। টুর্নামেন্টের নিয়মনুযায়ী, টেবিলের তৃতীয় ও চতুর্থ দল প্লে-অফে এলিমিনেটর ম্যাচে মুখোমুখি হবে। সেক্ষেত্রে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি এলিমিনেটর ম্যাচে লড়বে বরিশাল ও চট্টগ্রাম। একই দিন প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে খেলবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল রংপুর রাইডার্স (১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট) এবং কুমিল্লা (১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট)। খবর বাসস

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কুমিল্লার দুই ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারাইন ও অধিনায়ক লিটন দাস।

১৮ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ রান করা নারাইনকে শিকার করেন ক্যারিবীয় পেসার ওবেড ম্যাককয়। ২টি বাউন্ডারিতে ১২ বলে ১২ রান করে স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলে আউট হন লিটন।

দুই ওপেনারের পর সাজঘরে ফিরেন চার নম্বরে নামা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও। তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হন ১ রান করা অঙ্কন।

৪০ রানে ৩ উইকেট পতনের পর কুমিল্লাকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন তাওহিদ হৃদয় ও মঈন আলি। ৩টি চারে ২৫ রান করা হৃদয়কে থামিয়ে ৩০ বলে ৩৬ রান যোগ হওয়া জুটি ভাঙ্গেন ম্যাককয়।

দলীয় ৭৬ রানে হৃদয় ফেরার পর বিপদ বাড়ে কুমিল্লার। ৯৭ রানে সপ্তম ব্যাটারকে হারায় তারা। মঈন ২৩, ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল ১৪ ও ম্যাথু ফোর্ড শূণ্যতে ফিরেন।

অষ্টম উইকেটে মোহাম্মদ এনামুলের সাথে ১৫ বলে ২৭ এবং নবম উইকেটে তানভীর ইসলামকে নিয়ে ৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৬ রান যোগ করে কুমিল্লাকে সম্মানজনক সংগ্রহ এনে দেন জাকের। শেষ ৩ ওভারে ৪২ রানের সুবাদে ৮ উইকেটে ১৪০ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৬ বলে ৩৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন জাকের। বরিশালের তাইজুল ৩টি, ম্যাককয় ও সাইফুদ্দিন ২টি করে উইকেট নেন।

১৪১ রানের জবাবে দ্বিতীয় ওভারে পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদকে ব্যক্তিগত ১ রানে হারায় বরিশাল।

শেহজাদ ফেরার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্সকে নিয়ে বরিশালের জয়ের ভিত গড়েন তামিম। দেখেশুনে খেলে ৫৭ বলে ৬৪ রান যোগ করেন তারা।

১২তম ওভারে মায়ার্স-তামিমের জমে যাওয়া জুটি ভাঙ্গেন কুমিল্লার পেসার মুশফিক হাসান। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৫ বলে ২৫ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন মায়ার্স।

দলীয় ৭৪ রানে মায়ার্সের বিদায়ে ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে তামিমের সাথে ৩২ বলে ৩৯ রান যোগ করে বরিশালকে জয়ের পথে রাখেন মুশফিক। এই জুটিতে   এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন  ৪০ বল খেলা তামিম।

১৭তম ওভারে আউট হওয়ার আগে  ১টি চারে ১৭ বলে ২৪ রান করা মুশফিক। পরের ওভারে রাসেলের শিকার হন ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৮ বলে ৬৬ রান করা তামিম। এই ইনিংস খেলার পথে এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের (৩৮৪) মালিক হন তামিম।

তামিম যখন ফিরেন তখন বরিশালের দরকার ছিলো ১৩ বলে ১৯ রান। পঞ্চম উইকেটে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১১ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৯ রান তুলে বরিশালের প্লে-অফ নিশ্চিত করেন মাহমুদুল্লাহ ও সৌম্য সরকার। ১টি করে চার-ছক্কায় মাহমুদুল্লাহ ১১ বলে ১২ এবং ১টি ছক্কায় ২ বলে ৬ রানে অপরাজিতথাকেন সৌম্য। কুমিল্লার মুশফিক ২টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন তামিম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৪০/৮, ২০ ওভার (জাকের ৩৮*, হৃদয় ২৫, তাইজুল ৩/২০)।

ফরচুন বরিশাল : ১৪১/৪, ১৯.৪ ওভার (তামিম ৬৬, মায়ার্স ২৫, মুশফিক ২/১৯)।

ফল : ফরচুন বরিশাল ৬ উইকেটে জয়ী।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seventeen − six =