ইরানের একাধিক সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক কমান্ডারদের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলকে তিক্ত ও বেদনাদায়ক পরিণতির জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
শুক্রবার ভোর থেকে শুরু করে কয়েক দফায় ইসরায়েল ইরানের অন্তত ছয়টি স্থানে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
তেল আবিবের এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা শতাধিক হামলা চালিয়েছেন, নিশানায় ছিল অন্তত ৮টি স্থান।
ইরানের একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় তেল আবিবের হামলার ‘কঠোর জবাব’ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তেহরানের একটি নিরাপত্তা সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজ২৪.কম
“ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হবে কঠোর ও মারাত্মক,” বলেছেন ওই কর্মকর্তা। পাল্টা হামলা আসন্ন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কখন ও কীভাবে হামলা হবে তা নিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
হামলার পাল্টায় ইরানের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে তা বোঝা যাচ্ছে খামেনির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায়। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনায় প্রকাশিত বিবৃতিতে তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, তেল আবিবকে তিক্ত ও বেদনাদায়ক পরিণতি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন সামরিক কমান্ডার ও বিজ্ঞানী শহিদ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
“এই অপরাধের কারণে তিক্ত ও বেদনাদায়ক পরিণতির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে জায়নবাদী শাসকদের, তারা অবশ্যই সেই পরিণতি ভোগ করবে,” বলেছেন তিনি।
আল জাজিরা জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ইরানের ছয়টি স্থানে হামলার খবর নিশ্চিত হতে পেরেছে। এগুলো হচ্ছে তেহরান ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, নাতানজ, তাবরিজ, ইস্ফাহান, আরাক ও কেরমানশাহ। এর মধ্যে নাতানজে ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা।
ইসরায়েলি হামলায় ওই স্থাপনার বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে বেশ কয়েকটি টেলিগ্রাম চ্যানেল দাবি করলেও তেহরানের দিক থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, তারা ইরানের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
“যেসব জায়গায় হামলা হয়েছে তার মধ্যে যে নাতানজের স্থাপনাও আছে তা আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি। তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা কেমন তা জানতে ইরানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি আমরা। আমরা দেশটিতে আমাদের পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি,” বলেছেন তিনি।
এদিকে তেল আবিব বলেছে, তেহরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে একটি দীর্ঘমেয়াদি অভিযানের শুরু হিসেবে এই হামলা চালাল তাদের সামরিক বাহিনী।
তাদের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইরানের যেসব বিজ্ঞানী পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজে যুক্ত, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং নাতাঞ্জের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাকে লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানো হচ্ছে, এটা কয়েক দিন ধরে চলবে।