দক্ষিণ ভারতের সিনেমা ও বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির জন্য ২০২২ ছিল সোনার ডিম দেয়া হাঁস। একের পর এক সিনেমা বক্স অফিস মাতিয়েছে। আয় করেছে প্রচুর টাকা। সম্প্রতি কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, দক্ষিণ ভারতের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি ২০২২ সালে আয় করেছে ৩৫০ কোটি ডলারের বেশি। ২০২১ সালের তুলনায় আয় বেড়েছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে সিনেমাই বেশি অবদান রেখেছে। আরআরআর, পোনিয়িন সেলভান, বিক্রম, কানতারা ও কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। এর বাইরে টেলিভিশন, রেডিও, প্রিন্ট মিডিয়ার আয়ও এ রিপোর্টে রয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, দক্ষিণ ভারত তার বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির প্রতিটি ক্ষেত্রেই উন্নতি করেছে। সিনেমার ক্ষেত্রে আয় বেড়েছে ৯৬ শতাংশ। ২০২১ সালে অতিমারীর প্রভাবে বিনোদন খাতের আয় ছিল ৪৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার, ২০২২ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৯৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারে। টেলিভিশন থেকে আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে ১৯ শতাংশ। টেলিভিশন যেখানে নানা জায়গায় পিছিয়ে পড়েছে, সেখানে দক্ষিণ ভারতে আয় বাড়া একটি বড় বিষয়। এ সময়টা স্ট্রিমিংয়ের। সেখানেও এগিয়ে আছে দক্ষিণ ভারত। ২০২১ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ আয় বেড়েছে এ বছর। স্ট্রিমিং থেকে দক্ষিণ ভারতের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির আয় ৩৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এছাড়া মুদ্রণে ৫৯ কোটি ৭০ লাখ ও রেডিওতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে বিনোদন খাতের আয় ৪১০ কোটি ডলার, যার মধ্যে সিনেমা থেকে এসেছে ৩৫০ কোটি ডলারের মতো।
সিনেমার ক্ষেত্রে সেরা নামগুলো কমবেশি সবারই জানা। তবু মনে করিয়ে দেয়া যেতে পারে, কেননা দক্ষিণের রয়েছে কয়েকটি ভাগ। তামিল, তেলুগু, কন্নড় ও মালয়ালম। এর মধ্যে তামিলনাড়ুতে পোনিয়িন সেলভান পার্ট ওয়ান ও বিক্রম ভালো করেছে। ইন্ডাস্ট্রিকে দিয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি ডলার। তেলেগু ইন্ডাস্ট্রির সেরা হয়েছে আরআরআর। এ ইন্ডাস্ট্রির মার্কেট সাইজ ৩০ কোটি ডলারের। কন্নড় ইন্ডাস্ট্রির মার্কেট ১৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের এবং সেখানে ছিল কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু ও কানতারা। মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রি বড় ব্যবসায়িক সিনেমা দেয়নি। তবে তারও অবদান ছিল প্রায় ১০ কোটি ডলারের।
সিনেমা ভালো করার পাশাপাশি দক্ষিণে সিনেমা হলও আছে অনেক। সে কারণেও বেশি অবদান রাখা সম্ভব হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতে মোট স্ক্রিনের সংখ্যা ৮ হাজার ৭০০টি, যার মধ্যে দক্ষিণে আছে ৪ হাজার ২১৬টি। অর্থাৎ মোট স্ত্রিনের ৪৮ শতাংশ। এর মধ্যে ৩ হাজার ৭৮টি সিঙ্গেল স্ক্রিন ও ১ হাজার ১৩৮টি মাল্টিপ্লেক্সের। সব মিলিয়ে দক্ষিণ ভারতের জন্য ২০২২ ছিল স্মরণকালের মধ্যে সেরা বছর। এর মাধ্যমে সামনের বছরগুলো দক্ষিণ ভারতের ইন্ডাস্ট্রি আরো ব্যবসা দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।