দুরারোগ্য ব্যাধিতে শয্যাশায়ী জ্বালানি নিরাপত্তা: রাজনীতিবিদদের দায় এবং দায়িত্ব

দুরারোগ্য সংক্রামক  ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশের টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা এখন মৃত্যু সজ্জায়। প্রাথমিক জ্বালানী সরবরাহ সঙ্কটে দারুন ভাবে বাধাগ্রস্ত বাংলাদেশের টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা।  ছোট ,মদ্ধম শিল্পগুলো আছে অস্তিত্বের সংকটে ,রপ্তানি মুখী শিল্পগুলো চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। দেশি বিদেশী বিনিয়োগ প্রায় স্থবির।  স্থুল বা সুক্ষ দৃষ্টি এবং পর্যালোচনায় বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারের দায় দায়িত্ব থাকলেও মুখ্য দায়িত্ব সরকার তথা রাজনীতিবিদদের।

উন্নত ,উন্নয়নশীল অথবা অনুন্নত সকল দেশেই দীর্ঘ স্থায়ী জ্বালানি নিরাপত্তাকে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত বিবেচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সহ বিশ্ব জ্বালানি অঙ্গনের একজন সরব বিশ্লেষক হিসাবে বলবো বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়টি জাতীয় পর্যায়ে দারুণভাবে উপেক্ষিত।

স্বাধীন বাংলাদেশ ৫৪ বছর বয়সেও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মৌলিক বিষয়গুলোতেও নেই সমন্বিত সঠিক লাগসই পরিকল্পনা। সীমাহীন না হলেও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নদ নদী বিধৌত জ্বালানী সম্ভবা দেশে কয়লা ,গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধান এবং উন্নয়নে নেই সুদূর প্রসারী ,সমন্বিত ,টেকসই পরিকল্পনা। স্বাধীনতার পর থেকে এযাবৎ নানা বিতর্কে স্বাধীনতার মূল মন্ত্র যেখানে নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট প্রভাবে বিতর্কিত সেখানে জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব ,কর্তব্য নির্ধারণ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করন আদৌ সহজ না. তার পরেও আশাবাদী হতে দশ নেই যে নির্বাচনে জয় প্রত্যাশী রাজনৈতিক দল এবং জোট জ্বালানি বিষয়ে জনবান্ধব সঠিক নীতি গ্রহণ করবে। বাস্তবতার প্রেক্ষিতে লাগসই এবং টেকসই সমন্বিত জ্বালানি নীতি গ্রহণ করে বাস্তবায়নের পথ নকশা ঘোষণা করবে।

মূল সমস্যা প্রাথমিক জ্বালানি। যতটুকুই আছে কয়লা ,গ্যাস সেগুলো আধুনিক প্রযুক্তি অবলম্বন করে অনুসন্ধান ,আহরণ এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিক ব্যবহার কৌশল গ্রহণ করতে হবে. বাংলাদেশ অদূর বা সুদূর ভবিষ্যতে প্রাথমিক জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ আমদানি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না. সেখানেও আছে অবকাঠমো চ্যালেঞ্জ ,ভুরাজনীতির চাপ. তবে বড় সঙ্কট অশুভ মাফিয়া সিন্ডিকেটের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত হয়।

রাজনীতিবিদরা আমলা কামলাদের সমন্বিত করে জ্বালানি সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত ,দুর্নীতি মুক্ত করতে না পারলে অর্থনীতি মুক্তি পাবে না.

প্রয়োজন জলে স্থলে দেশি বিদেশী সংস্থাগুলোকে গ্যাস অনুসন্ধানের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা. অবিলম্বে সঠিক টেকনোলজি অবলম্বন করে কয়লা উত্তোলন এবং ব্যবহার, নবায়নযোগ্য জ্বালানি  প্রসার এবং ব্যবহারে বাস্তব সম্মত কার্যক্রম।

সবকিছুতেই প্রয়োজন হবে পর্যাপ্ত  সংখক   দক্ষ কারিগরি জনবল ,সঠিক প্রণোদনা এবং আমলা নিয়ন্ত্রণ মুক্তি। আশা করি নির্বাচন জয়ী হয়ে সরকার গঠনে প্রত্যাশী রাজনৈতিক দলগুলো সুনিদৃস্ট নির্বাচনী মেনিফেস্টো অবিলম্বে সহজ ভাষায় জনগণের সামনে তুলে ধরবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × 5 =