তিনি প্রথমবারেরমত যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে খেলতে নামবেন। দর্শকরা উদগ্রীব হয়ে থাকবে না, তা তো হতে পারে না। তবে ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেল স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতা যে খুবই সীমিত! মাত্র ২০ হাজার ৫১২জন। যে কারণে মেসির অভিষেক ম্যাচ সরাসরি দেখার টিকিটের দাম আকাশ ছুঁয়েছিলো।
বাধ্য হয়ে ফুটবলপ্রেমীদের অবস্থান নিতে হয়েছে টিভির সামনে; কিন্তু একি! জেরার্ডো (টাটা) মার্টিনো মেসিকে শুরুর একাদশেই রাখেননি। ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে শুক্রবার রাতের ম্যাচে মেসির সঙ্গে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রাখা হলো সার্জিও বুস্কেটসকেও।
শেষ পর্যন্ত ভক্ত-সমর্থকদের অপেক্ষার পালা শেষ হলো ৫৪তম মিনিটের সময়। এ সময় বেঞ্জামিন ক্রেমাশ্চিকে তুলে মাঠে নামানো হয় মেসিকে। একই সময় ডেভিড রুইজকে তুলে নিয়ে মাঠে নামানো হয় সার্জিও বুস্কেটসকে।
কিন্তু মাঠে নামলেও মেসির খেলায় দর্শকদের মন ভরছিল না। কারণ, গোলের খেলা ফুটবলে মেসির পা থেকে একটি অতিমানবীয় গোল না এলে কেমন করে হবে! তারওপর, ম্যাচের চিত্র ১-১ গোলে সমতা। তাহলে কী অভিষেকেই জয় বঞ্চিত থাকবেন বিশ্বজয়ী এই তারকা?
শেষ পর্যন্ত ভক্ত-সমর্থকদের সেই অতৃপ্ত বাসনাও তৃপ্তিতে ভরিয়ে দিলেন লিওনেল মেসি। ইনজুরি সময়ে (৯০+৪ মিনিট) নিলেন এক ফ্রি-কিক। আনবিটেবল সেই ফ্রি-কিক ডিফেন্ডারদের দেয়াল এবং প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের ক্ষিপ্রতা- সব ফাঁকি দিয়ে গিয়ে জড়িয়ে যায় ক্রুজ আজুলের জালে।
ঈগলের মত দুই হাত প্রসারিত করে দৌড় দিলেন মেসি। সঙ্গে প্রতিপক্ষরা। কর্ণারের ফ্ল্যাগ লাইনের সামনে দাঁড়িয়ে উৎসবে মাতলেন মেসি এবং তার সতীর্থরা। আর গ্যালারিতে চোখ ডলে সমর্থকরা আত্মস্থ করার চেষ্টা করছেন, কী অসাধারণ এক গোল দেখেছেন তারা!
ফ্রি-কিক থেকে করা দুর্দান্ত এই এক গোল দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের এমএলএস লিগে নিজের অভিষেক রাঙিয়ে দিলেন লিওনেল মেসি। সে সঙ্গে নিজের ক্লাব ইন্টার মিয়ামিকে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয় এনে দিলেন ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে।
মে মাসের ১৪ তারিখের পর কোনো জয় না পাওয়া ইন্টার মিয়ামি যেন মেসিকে পেয়ে উজ্জীবিত হয়ে উঠলো। মেসি প্রথমার্ধে মাঠে না নামলেও বাকিরা ইতিবাচক ফুটবল উপহার দেন। যার ধারাবাহিকতায় ৪৪ মিনিটে আসে প্রথম সাফল্য।
ওই মুহূর্তে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রবার্তো টেলর। সেই গোলের পর সাইডবেঞ্চে বসেই উদযাপন করতে দেখা যায় মেসিকে। তখন কে জানত, নাটকের আরও বাকী!
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৪ মিনিটে তুমুল হর্ষধ্বনির মাধ্যমে সার্জিও বুস্কেটসকে নিয়ে মেসি মাঠে নেমে শুরু থেকেই দুর্দান্ত রক্ষণচেরা পাস, বল নিয়ে চিরচেনা দৌড় এবং ড্রিবলিংয়ের জাদুতে মাতিয়ে দেন তিনি দর্শকদের।
যদিও ৬৫তম মিনিটে একটা গোল পরিশোধ করে ক্রুজ আজুল। ৮৭ মিনিটে একবার অবশ্য সতীর্থকে পাস দিয়ে গোলও করিয়েছিলেন মেসি। যদিও সেটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। তবে ম্যাচের ৯৪ মিনিটে অবশেষে জাদু দেখিযে দিলেন মেসি। ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিকে গোল করে দলকে এনে দিলেন ২–১ গোলের দুর্দান্ত এক জয়।