দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ফারুকের

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নব-নির্বাচিত সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, দেশের ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই প্রথম এবং প্রধান কাজ হবে।

আজ বিসিবির সভাপতি নির্বাচিত হবার পর সংবাদ সম্মেলনে ফারুক বলেন, ‘লক্ষ্য অনেক বড়। দেশের ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের এক সাথে কাজ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। যেহেতু অনেক দিন ধরে এ কাজটি চলছে, তাই অনেক প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের সেসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমরা একটি দেশ ও ক্রিকেট প্রিয় জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে চাই। কাজটি সহজ হবে যদি আমরা নিজেদেরকে একটি দল হিসেবে চিন্তা করি এবং আমরা যদি নির্দিষ্ট কাউকে বেশি অগ্রাধিকার না দিয়ে দলকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই। আমরা যেন অন্য দিকে সরে না যাই।’

আজ জরুরি সভায় নাজমুল হাসান পাপন তার পদ থেকে সরে যাবার পর প্রথম সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বোর্ডের আট পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। জালাল ইউনুস এবং আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববির পরিবর্তে এনএসসির মনোনীত বিসিবির পরিচালক হন ফারুক আহমেদ এবং নাজমুল আবেদিন ফাহিম।

সভাপতির পদ থেকে পাপন পদত্যাগ করায় বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ফারুককে সভাপতি নির্বাচিত করতে ভোট প্রদান করেন সভায় উপস্থিত পরিচালকরা।

১৯৯৪ সালে আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ফারুক। বিসিবির প্রধান নির্বাচক হিসাবে দু’বার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৩-২০০৭ সালে প্রথম মেয়াদে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের দলে সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় কান্ডারি হয়ে উঠেন তারা।

এরপর ২০১৩-২০১৬ সালে আবারও প্রধান নির্বাচক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ফারুক। কিন্তু তৎকালীন বিসিবি সভাপতি পাপন দুই স্তরের নির্বাচন প্যানেল তৈরি করলে পদত্যাগ করেন ফারুক। কারন নির্বাচক প্রক্রিয়ায় অযাচিত ক্ষমতা প্রয়োগ করেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

বোর্ডে অতীত তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে সকলকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে বদ্ধপরিকর ফারুক। পাশাপাশি তাদের কাজের জবাবদিহিতার সুযোগও থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ফারুক বলেন, ‘আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি কারো কাজে হস্তক্ষেপ করবো না। তবে প্রত্যেকের কাজই কঠোর তদারকিতে থাকবে। আমরা সবাইকে বড় সাফল্যের জন্য সময় দিবো। কিন্তু যদি সাফল্য না আসে তাহলে এজন্য আপনাকে দায়ী হতে হবে। সভাপতি হিসেবে আমি কিছু উপদেশ দিতে পারি তবে এমন নয় যে নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে তা গুরুত্ব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুক ক্রিকেট দল। শুধুমাত্র ছোট-ছোট বিষয় নিয়ে আটকে থাকলে চলবে না। আমাদের আরও বড় লক্ষ্যের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। আমি রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করতে পারি না। এখানে কতক্ষণ থাকবো সেটিও জানি না। তবে ক্রিকেটই হবে সবকিছুর উর্ধ্বে।’

এমন একটি ব্যবস্থা ফারুক গড়ে তুলতে চান যাতে কোন দুর্নীতি করার সুযোগ না থাকে।

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ প্রক্রিয়ার বিপক্ষে প্রতিবাদ করে আমি বিসিবি থেকে পদত্যাগ করেছি। দুর্নীতির পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না। আমাদের একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, এমন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে যার মাধ্যমে কোন দুর্নীতি করার সুযোগ থাকবে না।’

আইসিসি র‌্যাংকিং অনুযায়ী বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কোথায় দেখতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেন, ‘আগেই বলেছি, আমি ক্রিকেটকে সেরা জায়গায় দাঁড় করাতে চাই। হঠাৎ পাওয়া সাফল্যে আমি খুশি হয়ে যাবো, এমনটা নয়। আমরা যদি পাঁচটি প্রতিদ্বন্দিত্বাপূর্ণ ম্যাচ খেলার পর ষষ্ঠ এবং সপ্তম ম্যাচ জিততে পারি এটিকেই সাফল্য মনে করবো।’

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × two =