সালেক সুফী
সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত প্রাণবন্ত সিলেট জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ শুক্রবার বাংলাদেশ পেস বোলিং তোপে সফরকারি শ্রীলংকাকে চেপে ধরেছিলো। টস হেরে প্রথম ব্যাট করতে এসে ৫৭/৫ উইকেট হারিয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল সফরকারি দল। একটি সহজ ক্যাচ আর দুই একটি আধা সুযোগ হারানোয় ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (১০২) এবং কামিন্দু মেন্ডিসের (১০২) জোড়া শতক এবং ষষ্ট উইকেটে ২০২ রানের জুটির কল্যানে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেয় সফরকারি দল। অভিষিক্ত নবীন পেসার নাহিদ দুই সেঞ্চুরিয়ান সহ তিন উইকেট তুলে নিলে শ্রীলংকান ইনিংস শেষ হয় ২৮০ রানে। দিন শেষে ১০ ওভারে শ্রীলংকা বাংলাদেশের তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছেছে।
টেস্ট ক্রিকেট তার চিরায়ত গৌরব উজ্জ্বল রূপ সুষমায় উপস্থিত ছিল মাঠে। অনুরাগীরা জানে একমাত্র খেলা যেখানে সকাল দেখে দিন চেনা যায় না। টসে জিতে সবুজ ঘাসে ঢাকা মেঘলা আকাশের নিচে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শান্ত। উইকেটে পেস বোলারদের জন্য যথেষ্ট সহায়ক ছিল। বাংলাদেশের বর্তমানে সবচেয়ে দ্রুত বলার নবীন নাহিদ রানা সহ তিন পেসার আর দুই স্পিনার নিয়ে আক্রমণ সাজানো ছিলো বাংলাদেশের। উইকেটের সহায়তা মেলায় প্রথম ঘন্টায় খালেদ, শরিফুল, নাহিদ শিকারীর মত শ্রীলংকা শিবিরে আঘাত হানে। ৫৭ রানে ফিরে যায় মাধুস্কা, করুনারত্নে, কুশাল মেন্ডিস, এঞ্জেলো মাথেউস, দীনেশ চান্দিমাল। ফিরে যেতে পারতো শুরুতেই কামিন্দু মেন্ডিস। শরিফুলের বলে স্লিপে জয় ক্যাচ ফস্কায়। তাইজুল ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে রান আউট করার সুযোগ হারায়। লাঞ্চ বিরতির পর ডি সিলভা -কামিন্দুর প্রচন্ড প্রতি আক্রমণের মুখে বাংলাদেশের আক্রমণ এলোমেলো হয়ে পড়ে। ভালো খেলে দুইজন শত রান তুলে নেয়। ওদের যোগাযোগে ষষ্ট উইকেটে ২০২ রান যোগ হলে যেন জেল মুক্তি হয় সফরকারি দলের। অভিষেকের স্নায়ুর চাপ মুক্ত হয়ে একসময় নাহিদ রানা পর পর আঘাত হেনে তিন উইকেট তুলে নিলে শ্রীলংকার ইনিংস ২৮০ সীমিত থাকে। প্রথম সেশন বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণে ছিল। খালেদ,শরিফুল সুইং সিম দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিলো। নাহিদের বলে গতি ছিল। নিয়ন্ত্রণে কিছুটা ঘাটতি ছিল। প্রথম সেশনে মেহেদী মিরাজ দুইটি এবং জাকির দুটি চমতকর ক্যাচ লুফে নিয়ে ছিল। জয় এবং তাইজুল সুযোগ দুটি না হারালে শ্রীলংকান ইনিংস স্বল্প রানে শেষ হতে পারতো। দ্বিতীয় সেশনে যেভাবে দি সিলভা, মেন্ডিস ঘুরে দাঁড়ায় তার প্রসংশা করতেই হবে। কঠিন উইকেটে দুইজন শত রান ১০২ তুলে নিয়ে দলকে বিপদ মুক্ত করে। একসময় নাহিদ ছন্দ খুঁজে পেলে ওদের দুইজন সহ তিনটি উইকেট তুলে নেয়। ২১ রানে পতন ঘটে শ্রীলকার শেষ পাঁচ উইকেট।
বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে নতুন বলে বিপদে পড়ে। দিনশেষে ১০ ওভার খেলে ৩২ রানে বাংলাদেশ জাকির হাসান । নাজমুল শান্ত এবং মমিনুলের উইকেট হারিয়ে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। কাল সকালের সেশনে বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়তে না পারলে ম্যাচ শ্রীলংকার দিকে ঝুকে পড়বে। উইকেটে অনেক ফাটল আছে। এই উইকেটে চতুর্থ ইনিংস ব্যাটিং করা খুব কঠিন হবে। উইকেটে থাকা মাহমুদ হাসান জয়, লিটন। মেহেদী মিরাজকে কোমর কোষে লড়াই করতে হবে। প্রথম দিন শেষে সফরকারি দল কিছুটা এগিয়ে আছে।
সালেক সূফি, ক্রীড়া সমালোচক