সালেক সুফী
শ্রীলংকা বাংলাদেশ ডাচ বাংলা ব্যাংক টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে তৃতীয় দিন শেষে শোচনীয় পরাজয়ের মুখে স্বাগতিক বাংলাদেশ। শেষ ইনিংসে মাত্র ১৩ ওভার খেলে ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিক দল। এখনো পিছিয়ে ৪৬৪ রানে। অপেক্ষা শুধু পরাজয়ের ভারত মহাসাগর সম ব্যাবধান কমানো।
সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত উইকেটে মেঘে ঢাকা আকাশের নিচে ব্যাটিং শুরু করে শ্রীলংকা প্রাথমিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছিল। কিন্তু অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (১০২) এবং কামিন্দু মেন্ডিসের (১০২) জোড়া শতরান এবং ষষ্ট উইকেট জুটির ২০২ রানের কল্যানে ২৮০ করে সফরকারী দল। জবাবে স্বাগতিক দলের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৮৮ রানে শেষ হয় বাংলাদেশ ইনিংস।
৯২ রান এগিয়ে থেকে ব্যাটিং করে আবারো ১১৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অসুবিধায় পড়েছিল শ্রীলংকা। কিন্তু সেখান থেকে আবারো সেই ধনঞ্জয়া (১০৮), কামিন্দু ( ১৬৪) জুটি। অনবদ্য ব্যাটিং করে দুজনার যুগল শতরান। একই টেস্টে যুগল শত রান করার অনন্য মাইল ফলক। অতিথি দলের ৪১৮ রান করে ৫১১ রানে এগিয়ে যাওয়া। দুর্গম গিরি কান্তার মেরু পেরুনোর মিশনে বাংলাদেশের মুখ থুবড়ে পড়া। তৃতীয় দিন শেষে ৪৭ রানে ৫ উইকেটে হারিয়ে আরও একটি শোচনীয় টেস্ট পরাজয়ের মুখে বাংলাদেশ।
কি নিদারুন উপহাস। যে উইকেটে অতিথি দলের দুই ব্যাটসম্যান উভয় ইনিংসে চাপের মুখে শতরান। খেলায় দুজনের মিলিত সংগ্রহ যেখানে (১০২+১০৮)=২১০+(১০২+১৬৪) ২৬৬=৪৭৬ সেখানে ভাবতে কষ্ট হয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আত্মাহুতি দেখে। স্বীকার করি অভিজ্ঞতা এবং মানে যোজন যোজন ব্যাবধান। কিন্তু যেভাবে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা উভয় ইনিংসে উইকেট বিসর্জন দিয়েছে তার কোনো অজুহাত থাকতে পারে না।
জানিনা কেন ব্যাটসম্যানদের আতঙ্কগ্রস্ত মনে হয়েছে। লড়াই করার ছিটেফোটা যতোকিছু দেখা গেছে একমাত্র লেজের দিকের ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলামের মাঝে। স্বীকার করি এই ধরনের বোলিং সহায়ক উইকেটে দেশের ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হয় না। কিন্তু তাই বলে এভাবে আত্মবিসর্জন দিবে ব্যাটসম্যানরা। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত নিজেই ব্যর্থ উভয় ইনিংসে। লিটন কুমার দাস যেন জাতীয় দলে খেলতে আর আগ্রহী নয়।
আজ চতুর্থ দিনে মোমিনুল আর তাইজুল কতদূর এগুবে আর। হুইল চেয়ারে চড়ে হিমালয় চূড়ায় ওঠার অলীক স্বপ্ন কেউ দেখছে না। দুই যুগ ধরে টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। এখনো টেস্ট খেলার মেজাজটাই গড়ে উঠলো না। এই ম্যাচের কথা ভুলে যান। নির্বাচকমণ্ডলী এবং টিম ম্যানেজমেন্ট কিভাবে দ্বিতীয় টেস্টের দল সাজাবে। অথচ উভয় ইনিংসে শুরুতে ভালো বোলিং করে চাপে ফেলেছিলো অতিথি দলকে। টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবহিকতা গুরুত্বপূর্ণ সেটিই জানে না বাংলাদেশ।
ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কামিন্দু মেন্ডিজের জন্য সিলেট টেস্ট অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। দুই ইনিংসে দলের বিপর্যস্ত মুহূর্তে হাল ধরে যুগল শত রান। গুণেমানে অবশ্যই মাইলফলক অর্জন। ধনঞ্জয়া অভিজ্ঞ কিন্তু কামিন্দুর সবে সূচনা। অনেক দুর যাবে সাহসী এই ব্যাটসম্যান। দুই দলের ব্যাবধান এই যুগলের ব্যাটিং আর লংকান বোলারদের ধারবাহিক আগ্রাসী বোলিং।