প্রথম দুই ম্যাচ ২০১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৩৭ এবং ৫৭ রানে হেরে সিরিজ খুইয়ে কাল শেষ ম্যাচে ব্যাটিং করে ১৯৬/৬ করেও ৭ উইকেটে হেরে গেলো বাংলাদেশ। আর তাই আরো একটি সিরিজ ধবল ধোলাই লজ্জা নিয়ে শেষ হলো সিরিজ। ইউএইতে সিরিজ পরাজয়ের অন্যতম অজুহাত হিসাবে শিশিরকে চিন্নিত করেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের নিরংকুশ আধিপত্য দেখানো সিরিজ প্রমান করেছে অধিকাংশ দলের বিরুদ্ধে টি ২০ ম্যাচ জেতার সামর্থ নেই বাংলাদেশের।
কাল আবারো টস হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে এবার আগের দুই ম্যাচে ব্যাটিং করে লক্ষ্য বেঁধে দেয়ার পরিবর্তে পাকিস্তান বাংলাদেশকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানায়। দুই তরুণ তানজিদ তামিম আর পারভেজ ইমন ১০.৪ ওভারে প্রথম উইকেট জুটিতে ১১০ রানের উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার পর সবার আশা ছিল অন্তত ২১০-২২০ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু ইমন ৩৪ বলে ৬৬ আর তানজিদ ৩২ বলে ৪৪ রান করে আউট হবার পর তওহীদ হৃদয়, লিটন, শামীম বা মেহেদী মিরাজ পারেনি রানের ধারা বজায় রাখতে। এই উইকেটে ১৯৬/৬ প্রতিরক্ষা করতে যে ধরণের বোলিং এবং ফিল্ডিং দরকার সেটি বাংলাদেশের সামর্থের অতিরিক্ত। মোহাম্মদ হারিস ৮ চার আর ৭ ছয়ে সাজানো ১০৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে একই ধসিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ বোলিং। আগের দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে বার্থ সাঁইযুম আয়ুব করেছে ৪৫ রান। ১৭.২ ওভারে ১৯৭/৩ করে পাকিস্তান দাপুটে ম্যাচ জয় এবং কৃতিত্বপূর্ণ সিরিজ ধবল ধোলাই উপহার দিয়েছে বাংলাদেশকে।
জানি টি ২০ বাংলাদেশের দুর্বলতম ফরমেট।ইতিমধ্যেই রাংকিং ১০ম তলানিতে পৌঁছে গেছে। টি ২০ ম্যাচ জিততে হলে প্রয়োজন টপ অর্ডারে মারকুটে অথচ পরিণত ব্যাটসম্যান, মানসম্মত মিডল অর্ডার এবং শেষ দিকে পাওয়ার হিটার। বাংলাদেশে কিছুই নেই। আর বোলিং ফিল্ডিং আরো দুর্বল। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন শনির দশা। এখন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বিশ্ব বরেণ্য ক্রিকেট প্রশাসককে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা করে ক্রিকেটকে তৃণ মুলে ছড়িয়ে দিতে হবে। ক্রিকেটারদের মধ্যে দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে হবে। খারাপ লাগে যখন একই ভুল বার কেন করে বাংলাদেশ। বয়স ভিত্তিক দল, ডেভেলপমেন্ট স্কোয়াড, এমারজিং স্কোয়াডে কিছু প্রতিশ্রুতি পূর্ণ খেলোয়াড় দেখলাম। জাতীয় দলে যারা পর্যাপ্ত সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ তাদের অপসারণ করে নতুনদের সুযোগ দিয়ে দেখা যেতে পারে। এই সিরিজে শামীম পাটোয়ারী নিয়মিত ব্যর্থ হয়েছে। অথচ পরিণত অভিজ্ঞ নাজমুল শান্তকে পর্যাপ্ত সুযোগ দেয়া হলো না।
পাকিস্তান দলকে কৃতিত্ব দিতেই হয়। ব্যাটিং বোলিং ফিল্ডিং সবকিছুতেই ওরা সম্মিলিত প্রদর্শনী করেছে। পিএসএলে ভালো ফর্ম আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিফলিত করেছে। সাহেবজাদা ফারহান, মোহাম্মদ হারিস, হাসান নাওয়াজ ,সালমান আগা যখন প্রয়োজন বাট হাতে জ্বলে উঠেছে। বাবর আজম বা মোহাম্মদ রিজওয়ানের অনুপস্থিতি উপলব্ধি করা যায়নি। অন্যদিকে শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ সিরিজে প্রয়োন হয়নি হাসান আলী, শাদাব খানের দাপটে। পাকিস্তান এই ধারা বজায় রাখলে টি ২০ ফরম্যাটে আবারো দুধর্ষ হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশ দল নিয়ে আর স্বপ্ন দেখার অবকাশ আছে বলে মনে করিনা। ঝরা পালকের ধ্বংস স্তুপ থেকেই ক্রিকেটকে গড়ে তুলতে হবে আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে নতুন বিসিবিকে। কাজটি কিন্তু অনেক চ্যালেঞ্জিং।