নতুন এক পৃথিবীতে ফারিণ

৩০ জানুয়ারি ছিল তাসনিয়া ফারিণের জন্মদিন। প্রথমবার বিশেষ দিনটি কাটছে দেশের বাইরে। পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা ‘আরও এক পৃথিবী’ দিয়ে বাংলাদেশি এ অভিনেত্রীর বড় পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে। ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি; যে কারণে ১০ দিন ধরে ছবির প্রচারে কলকাতায় আছেন ফারিণ।

সোমবার দুপুরে কলকাতা থেকে প্রথম আলোকে ফারিণ বলেন, ‘জন্মদিন পালন নিয়ে আমার খুব একটা আগ্রহ নেই। আগের পরপর দুটি জন্মদিনও শুটিং লোকেশনে পালন করেছি। এবার দেশের বাইরে সিনেমার প্রচারের মধ্যে জন্মদিন এসেছে। জন্মদিন নয়, কাজই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। জন্মদিনের আগের রাত ১০টায় সিনেমার প্রচার শেষ করে হোটেলে ফিরেছি। এসেই ঘুমে কাদা। সকালে উঠেই কলকাতার একটি কলেজের ফিল্ম ক্লাবের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচার চালিয়েছি। ফাঁকে বন্ধু বা পরিবারের লোকজন ঢাকা থেকে ফোন, টেক্সট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এখানেও ছবির টিমের সবাই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’

অভিনয়ের পাশাপাশি গাইতেও পারেন ফারিণ। মাঝেমাধ্যে ফেসবুকে গান গেয়ে পোস্ট করেন। তবে মঞ্চে কখনো গাওয়া হয়নি। ফারিণ জানালেন, আজ সন্ধ্যার পর ছবির গান প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রথমবার গাইবেন। ‘ছবির “যতটা জীবন দুটো হাতে ধরে” গানটি আমার খুব প্রিয়। অনুষ্ঠানের মঞ্চে গানটি সরাসরি গাইব। একদিন মিউজিকের সঙ্গে গানটির অনুশীলনও করেছি। তারপরও ভয় পাচ্ছি, কী জানি কী হয়।’

টিমের সঙ্গে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, টেলিভিশন চ্যানেল, গণমাধ্যম কার্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচার চালাচ্ছেন ফারিণ। সব জায়গাতেই দারুণ সাড়া পাচ্ছেন বলে জানালেন তিনি, ‘মনে হচ্ছে যেন সবাই আমাকে আগে থেকেই চেনেন। ওটিটিতে আমার কাজগুলো এখানকার দর্শকেরা দেখার সুবাদে প্রচারে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছি। তাই প্রশ্নোত্তর পর্ব খুব উপভোগ করতে পারছি।’

কয়েক দিন আগে প্রচারে গিয়ে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিতের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ওই ঘটনা নিয়ে ফারিণ বললেন, ‘আমাকে দেখেই চিনে ফেলেন। ওটিটিতে আমার কাজ দেখেছেন। বুম্বাদা আমাকে বলেন, “ফারিণ, তোমার অভিনয় ভালো, ধরে রেখো।” আমি এতটুকু মানুষ, তাঁর প্রশংসা আমার জন্য সৌভাগ্যের।’

ভারতের অন্য শহরের মতো কলকাতাতেও এখন বইছে ‘পাঠান’ঝড়। এই উন্মাদনায় ফারিণও শামিল হয়েছেন। ২৬ জানুয়ারি সাউথ সিটির আইনক্সে ছবিটি দেখেছেন, ‘আগে বড় পর্দায় শাহরুখ খানের ছবি কোনো দিন দেখা হয়নি। তাই খুব ইচ্ছা ছিল। ২৫ তারিখে টিকিট পাইনি। ২৬ তারিখে সকাল ৯টার শো দেখেছি। দেখতে বসে শুধুই শাহরুখের দিকেই নজর ছিল। আসলেই এই ছবি দিয়ে “কিং ইজ ব্যাক”। দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, একজন মানুষের মধ্যে কী জাদু আছে, চার বছর পর ফিরে দর্শকদের মুগ্ধ করে চলেছেন!’

এই ‘পাঠান’ উন্মাদনার অন্য একটা দিকও আছে। যশ রাজের হিন্দি ছবিটির কারণে কলকাতার বাংলা সিনেমা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এমন মন্তব্য করেছেন টালিগঞ্জের অনেক নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক। এই পরিস্থিতিতে ফারিণের ছবিতেও কী প্রভাব পড়বে না? এমন প্রশ্নের উত্তরে ফারিণ বলেন, ‘কিছুটা পড়তেই পারে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গজুড়েই অতনু দাদার সিনেমার একটা দর্শক আছে। তাঁরা নিশ্চয়ই ছবিটি মিস করবেন না। বাংলাভাষীরা যে সিনেমাটি দেখতে হলমুখী হবেন, সেটি প্রচারে গিয়ে টের পাচ্ছি। তবে অনেক সময় সিনেমার ব্যবসা ভাগ্যের ওপরও নির্ভর করে। যেকোনো পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার জন্য আমরা  প্রস্তুত।’

মুক্তির আগেই তাঁর প্রথম সিনেমা দেখার সুযোগ ফারিণের হয়েছে। দেখার পর ছবিটি নিয়ে প্রত্যাশা যেমন বেড়েছে, তাঁর নিজের কাজের প্রতিও আস্থা বেড়েছে, জানালেন ফারিণ। বলেন, ‘আমন্ত্রিত অতিথিসহ ছবিসংশ্লিষ্ট সবাই মিলে গত ২৮ জানুয়ারি কলকাতার নন্দনে ছবিটি দেখেছি। আমার কাছে অসাধারণ মনে হয়েছে। আশা করছি দর্শকদের কাছেও ছবিটি ভালো লাগবে।’

‘আরও এক পৃথিবী’ মুক্তির পর আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ফারিণের দেশে ফেরার কথা আছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

14 − seven =