নামিবিয়ার বীরত্ব কাহিনি দিয়ে শুরু হলো বিশ্বকাপ

সালেক সুফী: টি২০ বিশ্বকাপের সূচনায় অঘটন ঘটালো আফ্রিকার দেশ নামিবিয়া।  সদ্য এশিয়া কাপ জয়ী শ্রীলংকাকে হেসে খেলে ৫৫ রানে পরাজিত করে বিশ্বকাপের শুরুতেই চমক দেখালো ওরা।  বিশাল পরাজয়ে গ্রুপ পর্যায় থেকে কোয়ালিফাই করা দুরূহ হয়ে গেলো দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ দেশটির। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ১৬৩/৮ রানের বিজয় সম্ভব স্কোর করেছিল নামিবিয়া।  জবাবে ওদের তুখোড় বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের মোকাবিলায় মুখ থুবড়ে পরে শ্রীলংকা। শুরু থেকেই ধুকতে থাকা ১৯ ওভার খেলে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা।  সাবাস নামিবিয়া।  দক্ষিণ আফ্রিকার দুই মরকেল ভাই নামিবিয়াকে লড়াকু দলে পরিণত করেছে সন্দেহ নেই। ভালো খেলেই জয় পেয়েছে নামিবিয়া। গ্রুপের অন্য দুই দল নেদারল্যান্ড, ইউএই কিন্তু সহজ দল নয়।

অস্ট্রেলিয়ায় টি২০ বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ছিল ২০১০।  হতে দেয়নি করোনা অতিমারী।  ১২ দলের মাঝে অনুষ্ঠিত হবে মূল রাউন্ড।  অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, নিউ জিলান্ড, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ মূল রাউন্ডে খেলবে সরাসরি। বাকি চারটি স্থানের জন্য দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলছে ৮ দল।  ২০০৭ থেকে শুরু হওয়া আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের এবার ৮ম আসর।  স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া গেলো বার জিতেছে শিরোপা তাসমান প্রতিবেশী নিউ জিল্যান্ডকে পরাজিত করে। এযাবৎ ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে দুই বার।  ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড জিতেছে একবার করে।

সূচনা ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ভিক্টোরিয়া রাজ্যের জিলং স্টেডিয়ামে।  সবুজ ঘাসের গালিচায় ড্রপ ইন উইকেটে পেস বাউন্স ছিল। টস জিতে শ্রীলংকা বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। শুরুতে ৪.৫ ওভারে ঝটফট নামিবিয়ার ৩টি উইকেট পতন ঘটলো ৩৫ রানে। তখন খুব কম মানুষ ভেবেছে কি নাটক হবার অপেক্ষায়। চতুর্থ উইকেটে জান নিকোল আর স্টিফেন বেয়ার্ড ৪১ রান জুড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস যোগালো। এর ১৭ রান যোগ হতেই আরো ৩ টি উইকেট পড়ে যাওয়ায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ক্ষণিকের জন্য শ্রীলংকার হাতে এসেছিলো। কিন্তু ৭ম উইকেট জুটিতে ফ্রাইলিংক (৪৪) এবং জে জে স্মিট ৬ ওভারে ৭০ রান জুড়ে দিয়ে ম্যাচ শ্রীলংকার জন্য দুরূহ করে তুলে। এই উইকেটে ১৬৪ রানের টার্গেট তাড়া করে জয় সহজ ছিল না মোটেও।

ব্যাটিং সাফল্যে উজ্জীবিত নামিবিয়া দুর্দান্ত বোলিং আর  চোখ ধাঁধানো তুখোড় ফিল্ডিং করে। ৩.৩ ওভারেই মাত্র ২১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পরে শ্রীলংকা। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কখনোই হাত ছাড়া করেনি নামিবিয়া। প্রতিটি বোলার নিখুঁত লাইন লেংথ বজায় রেখে বোলিং করে চেপে ধরে লংকানদের। ওয়াইজ (২/১৬), স্ক্লজ (২/১৮), শিকঙ্গ (২/২২), ফ্রাইলিংক (২/২৬) কাকে রেখে কার কথা বলবেন। পুরো দলটি যেভাবে উজ্জীবিত হয়ে খেলেছে তা দেখে অনেক দলের অনেক কিছুই শেখার আছে। যোগ্য দল হিসাবেই জয় পেয়েছে নামিবিয়া।  নাটক দিয়ে শুরু হলো বিশ্বকাপ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × four =