নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ সমতায় শেষ করলো পাকিস্তান

অধিনায়ক বাবর আজমের ব্যাটিং ও পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বোলিং নৈপুণ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ করলো স্বাগতিক পাকিস্তান। গতরাতে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান ৯ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। বাবরের ৪৪ বলে ৬৯ রানের ইনিংসের পর বল হাতে ৪ উইকেট নেন আফ্রিদি।

লাহোরে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার সাইম আইয়ুবকে হারায় পাকিস্তান। ব্যক্তিগত ১ রানে নিউজিল্যান্ডের পেসার উইল ও’রুর্কের শিকার হন সাইম।

দ্বিতীয় উইকেটে ৪৫ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানকে ভালো অবস্থায় নেন বাবর ও উসমান খান। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ রান করা উসমানকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন নিউজিল্যান্ড স্পিনার ইশ সোধি।

উসমান ফিরলেও, পাকিস্তানের রানের চাকা সচল রাখেন বাবর ও ফখর জামান। এই জুটিতে ৩৫ বলে টি-টোয়েন্টিতে ৩৪তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বাবর। ১৫তম ওভারে বাবরকে বোল্ড আউটে থামান পেসার বেন সিয়ার্স। আউট হওয়ার আগে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৪ বলে ৬৯ রান করেন বাবর। এই ইনিংস খেলার পথে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ চার মারার রেকর্ড গড়েন বাবর। এতে রেকর্ড হাতছাড়া হয় আয়ারল্যান্ডের ওপেনার পল স্টার্লিংয়ের। ১০৭ ইনিংসে বাবর ৪০৯টি এবং ১৩৬ ইনিংসে ৪০৭টি চার আছে স্টার্লিংয়ের।

পাশাপাশি এ ম্যাচে আরও একটি রেকর্ড স্পর্শ করেছেন বাবর। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের  রেকর্ড  স্পর্শ করেন বাবর। দু’জনই সমান ৭৬টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

বাবরের রেকর্ডের দিন পাকিস্তানকে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৮ রানের পুঁজি এনে দেন ফখর ও শাদাব খানরা। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ফখর ৩৩ বলে ৪৩ এবং শেষ দিকে ১টি করে চার-ছক্কায় ৫ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন শাদাব। নিউজিল্যান্ডের পাঁচ বোলার ১টি করে উইকেট নেন।

জবাবে প্রথম ওভারে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার টম ব্লান্ডেলকে (৫) শিকার করে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেন পাকিস্তানের আফ্রিদি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে প্রথম বোলার হিসেবে ম্যাচের প্রথম ওভারে সব মিলিয়ে  ৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন আফ্রিদি।

দ্বিতীয় উইকেটে ৪৫ বলে ৭৬ রানের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে লড়াইয়ে রাখেন আরেক ওপেনার টিম সেইফার্ট ও অধিনায়ক মাইকেল ব্রেসওয়েল। এই জুটিতে ২৯ বলে টি-টোয়েন্টিতে নবম অর্ধশতক করেন সেইফার্ট।

নবম ওভারে সেইফার্টকে থামিয়ে পাকিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার উসামা মীর। ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৩ বলে ৫২ রান করেন সেইফার্ট।

সেইফার্ট ফেরার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ১৩৭ রানে কিউইদের অষ্টম উইকেট পতনে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তানের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান সাত নম্বরে নামা জশ ক্লার্কসন। এক প্রান্ত আগলে লড়াই করে নিউজিল্যান্ডের আশা বাঁচিয়ে রাখেন তিনি। শেষ ওভারে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ১২ রান দরকার পড়ে নিউজিল্যান্ডের।

পেসার মোহাম্মদ আমিরের করা শেষ ওভারের প্রথম ও তৃতীয় বলে নিউজিল্যান্ডের বাকী দুই ব্যাটার রান আউট হলে জয়ের আনন্দে মেতে উঠে পাকিস্তান। ১৬৯ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৬ বলে অপরাজিত ৩৮ রান করেন ক্লার্কসন। ৩০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা এবং সিরিজে ৮ উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড় হন আফ্রিদি।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

thirteen − seven =