নির্মলেন্দু গুণের ‘কবিতাকুঞ্জ’ এখন শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য কবি নির্মলেন্দু গুণের জন্মস্থান নেত্রকোণা জেলা শহরের মালনী এলাকায় মগড়া নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত ‘কবিতাকুঞ্জ’ শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে। সোমবার (১ আগস্ট) সকালে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রফিকউল্লাহ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত শনিবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উপাচার্য আরও জানান, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত কবি নির্মলেন্দু গুণ নেত্রকোণা জেলা শহরের মালনী এলাকায় মগড়া নদীর তীরে‘কবিতাকুঞ্জ’ নামে প্রতিষ্ঠানটি  করেছেন। কবির নিজ জেলায় গড়ে তুলা এ প্রতিষ্ঠানটিকে কবি বিশ্বকবিতার বাসগৃহ হিসেবে তুলে ধরেছেন। এ গৃহে অন্তত ৯০টি দেশের কালজয়ী কবিদের রচিত প্রায় ২ হাজার কাব্যগ্রন্থ রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায়, বিভিন্ন সময়ে রচিত কাব্যসম্পদ নিয়ে তুলনামূলক গবেষণার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।

ড. রফিকউল্লাহ খান বলেন, সম্পতি কবির পক্ষ থেকে কবিতাকুঞ্জকে নেত্রকোণায় প্রতিষ্ঠিত শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যলয়ের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যলয় কর্তৃপক্ষকে। এ প্রস্তাব এবং বাংলা সাহিত্য ও ইংরেজি সাহিত্যের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে তুলনামূলক সাহিত্য ও বিশ্বকাব্যকে একটি অন্যতম বিষয় হিসেবে চালু করার বিবেচনায় প্রস্তাবটি অনুমোদন হয়। অনুমোদন রেজুলেশনটি সিন্ডিকেট সভার ১০ জন সদস্যের সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে।

কবি নির্মলেন্দু গুণ জানান, তার অবর্তমানে ‘কবিতাকুঞ্জ’ একটি অভিভাবকহীন প্রতিষ্ঠানে যেন পরিণত না হয়- সেই লক্ষ্যেই তিনি শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কবিতাকুঞ্জের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

কবি নির্মলেন্দু গুণ তার ওই প্রস্তাবে উল্লেখ করেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ৮ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে ২০১৬ সালে বিশ্বকবিতার বাসগৃহ হিসেবে ‘কবিতাকুঞ্জ’ নামে এই প্রতিষ্ঠানটি তিনি গড়ে তোলেন। ওই বছরে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারের যে অর্থ পেয়েছিলেন, সে অর্থ ব্যয় করেছিলেন ‘কবিতাকুঞ্জ’ গড়ার কাজে। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলতে প্রয়োজনের তুলনায় এ অর্থ কম থাকায় তখন তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার বহু অনুরাগী-সুহৃদ এই প্রতিষ্ঠানে অর্থসহায়তা দিয়েছেন।

কবিতাকুঞ্জের দেয়ালে অর্থ সহায়তা প্রদানকারীদের নাম ও তাদের দেওয়া অর্থের পরিমাণ তিনটি ডোনার বোর্ডে লিপিবদ্ধ রয়েছে। চতুর্থ ডোনার বোর্ডটি এখন প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। তারা সবাই কবিতাকুঞ্জের সম্মানিত সদস্য হিসাবে গণ্য হন এবং ভবিষ্যতেও হবেন। অর্থ সহায়তা ছাড়াও, যারা কবিতাকুঞ্জকে বিভিন্ন দেশের কাব্যগ্রন্থ এবং কাব্যবিষয়ক আলোচনা গ্রন্থ দিয়ে কবিতাকুঞ্জের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করেছেন, তারাও কবিতাকুঞ্জের সম্মানিত সদস্য আছেন এবং থাকবেন। নেত্রকোণানায় প্রতিষ্ঠিত শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলে ‘কবিতাকুঞ্জ’ প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন সম্ভব ও সহজ হবে ।

ঢাকা পোস্ট

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

nine + 11 =