পতনের পিচ্ছিল পথে বাংলাদেশ ক্রিকেট

সালেক সুফী

দেশের মাটিতে দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে বর্ণহীন সিরিজ জয়ের পর বিশ্বকাপের ঠিক আগে যুক্তরাষ্টের মত এসোসিয়েট দেশের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটি হেরে সিরিজ হারা বিশ্বক্রিকেটে বাংলাদেশের পতনের ক্রমধারার প্রতিফলন। বাংলাদেশ খেলতে গেছে বিশ্বকাপ টি ২০ বিশ্বকাপ। সংযুক্ত আরব এমিরেটস এবং অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি ২০ বিশকাপে অনুজ্জ্বল বাংলাদেশের অবস্থা এখন আরো সঙ্গীন।  বিশ্বকাপ শুরু হবার আগে যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে আরো দুবার এবং টুর্নামেন্টের অন্যতম শীর্ষ ফেভারিট ভারতের বিরুদ্ধে একটি অনুশীলন ম্যাচ আছে। দলের টপ অর্ডার বলতে কিছু নেই। তাওহীদ হৃদয় ছাড়া কারো ব্যাটে ধারাবাহিকতা নেই। বোলিং নিয়ে যতটা আশা প্রকাশ করা হয়েছে তার প্রমান মিলছে সামান্যই।  ব্যাটসম্যানদের সক্ষমতার সীমানা ১৫০-১৬০।  এই রান করে টি ২০ ক্রিকেটের বিশ্বায়নের সময়ে কোনো দলের বিরুদ্ধেই জয় লাভের সম্ভাবনা নেই। আমি শংকিত আসন্ন টি ২০ বিশ্বকাপে একটিও ম্যাচ জিততে পারবে কিনা?

বাংলাদেশ কিন্তু বিশ্বকাপের জন্য এখনো ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেনি। ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট সিন্ডিকেটের নীল চোখের লিটন, সৌম্য দুজনই ব্যার্থ। বাকি রইলো স্বল্প অভিজ্ঞ তরুণ তানজিদ তামিম। তিন নম্বরে অধিনায়ক নাজমুল শান্ত রান খরায়। সাকিবের মন নেই ক্রিকেট নিয়ে। অনেকটা দায় সারা ভাবেই ক্রিকেট খেলে এখন। শুধু মাত্র ফর্মে আছে তাওহীদ হৃদয় এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপের মত বৈষয়িক টুর্নামেন্টে সাফল্য পেতে দলে অন্তত ৬-৭ জন বিশ্বমানের মারকুটে ব্যাটসম্যান দরকার। দরকার প্রথম এবং শেষ স্লোগ ওভার গুলোতে নিয়মিত ৭০-৯০ করার সহজাত দক্ষতা। এই হেড কোচের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে ক্রিকেটে সক্রিয় থেকেও টি ২০ বিশ্বকাপে নেই তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম। এবারের বিশ্বকাপে উইকেট গুলো স্পিন সহায়ক হবার সম্ভাবনা থাকলেও দেশের অন্যতম সেরা স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী মিরাজ স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত নেই। একটি ম্যাচে কিছু হালকা বোলিং করায় স্কোয়াড থেকে ছেটে ফেলা হয়েছে পেস বোলিং অল রাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে। টপ অর্ডার ব্যার্থ হিসাবে রান খরায় থাকা নাজমুল শান্ত অধিনায়ক। ৭৫% বা তারও কম ম্যাচ ফিটনেস নিয়ে দলের সহ অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ। এহেন দলকে নিয়ে কোন ভরসায় আশায় বুক বাধবে ভক্ত অনুরাগীরা?

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের অনেক অনেক ক্রিকেট অনুরাগী বন্ধু আছে। ইউসুফ বাবু, নাজমুন নূর রবিন, গোলাম নওশের প্রিন্স, নজরুল কাদের লিন্টুর মত ১৯৭০, ১৯৮০ দশকের অনেক জাতীয় ক্রিকেটার।  তাদের মাধ্যমে এবং অন্যান্য বন্ধুদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বিষয়ে কিছুটা অবগত। ক্রিকেট অবকাঠামো খুব আদর্শ না হলেও বিনোদন ক্রিকেট হয় নিয়মিত। প্রবাসীরা বিশেষত পাক ভারত উপমহাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড থেকে আগত প্রবাসীরা নিয়মিত ক্রিকেট খেলে। এবারের ক্রিকেট দলটি মূলত ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো থেকে আশা ভালো মানের খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত। আমি কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতে নেওয়াকে আপসেট হিসাবে ভাবছিনা। নিঃসন্দেহে যোগ্যতর দল হিসাবেই জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে সব চেয়ে অল্প প্রস্তুত দল। হাতুরাসিংহের হাতুড়াপনায় দলটির এখন ত্রাহি মদুসুধন অবস্থা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × 5 =