সালেক সুফী
গায়ানার প্রভিডেন্স মাঠের উইকেটে কাল বল গ্রিপ করছিল, স্পিনার্সদের জন্য পর্যাপ্ত সুযুযোগ ছিল। প্রথম ব্যাটিং করে লিটন (৪৯), আফিফ(৫০), রিয়াদ (২২) রানের সুবাদে ১৬৩/৫ চ্যালেঞ্জিং স্কোর করেছিল। অন্তত একজন শেষ নাগাদ উইকেটে থাকলে ১৯০ ছাড়িয়ে যাওয়া সুযোগ ছিল। বাংলাদেশের ইনিংস শেষে ৪ জন নিয়মিত আর দুই জন ওকেশনাল স্পিনার্স নিয়ে জয়ের স্বভাবনা দেখছিলেন কেউ কেউ। নাসুম, মেহেদী আর শাকিব তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। পুরানের একটু কঠিন স্ট্যাম্পিং সুযোগ সোহান কাজে লাগাতে পারলে, সাকিবকে বোলিং কোঠা পূরণ করালে কি হতে পারতো সেকথা নাই বা বলি। কিন্তু যেভাবে দুই মূর্তিমান বাম হাতি মারকুটে ব্যাটসম্যান পূরণ (৭৪*) এবং মায়ার্স (৫৫) তুলোধুনো করলো বাংলাদেশী বোলারদের সেটি ছিল ম্যাচ এবং সিরিজ হাইলাইটস। ৫ উইকেটের বিশাল পরাজয়ে আরো একটি কালো তিলক লাগলো বাংলাদেশের ক্রিকেট ললাটে। তিন ম্যাচের সিরিজ (২-০) জিতে নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিয়েজ। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টি বাগড়া না দিলে হয়তো আরো একটি ধবল ধোলাই হতো। এই মাঠেই খেলা হবে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ। সাকিবকে ছুটি দেয়া হয়েছে। মুশফিক এখন পবিত্র হাজ্ পালন করছেন। ভরসা পাচ্ছি না এই বাংলাদেশকে নিয়ে।
কাল স্পিন সহায়ক উইকেটে প্রথম ব্যাটিং করে বাংলাদেশ ১৬৩/৫ করেছিল। আর একটু রয়ে শোয়ে ব্যাটিং করলে বাংলাদেশ ১৯০ করতে পারতো। উইকেটে স্থিতু হয়েও রিয়াদের রিভার্স সুইপ করা সমীচীন হয়নি। সাকিবের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার বিমান মিস হয়ে যাচ্ছে। তবুও সংগ্রহ সামান্য ছিল না।
নাসুমকে নিয়ে বাংলাদেশের চার নিয়মিত স্পিনার্স ছিল। মাহমুদুল্লাহ এবং আফিফকে যোগ করলে হয় ছয়। ১৫.২ ওভার বোলিং করেছিল স্পিনার্সরা ১৮.২ ওভারের। তবে সাকিবের ৪ ওভার পূরণ না করা ভুল হয়েছে।
দুই দেশের আসন্ন আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিকল্পনা পুরোপুরি সার্থক। কয়েকজন প্রথম চয়েস খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়ে তরুণদের সুযোগ দেয়া কাজে লেগেছে। মায়ার্স নিজেকে নতুন ভূমিকায় মানিয়ে নিয়েছে। পুরান টি২০ ক্রিকেটে সংহারী রূপে বিকশিত হচ্ছে। কিং এবং পাওয়েল আলো ছড়াতে শুরু করেছে। আজারি জোসেফ, হোল্ডার যোগ হলে বোলিং শানিত হবে। ওদের কিন্তু কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলতে হবে।
মূল পর্বে সরাসরি খেলা বাংলাদেশের প্রস্তুতি কিন্তু এখনো অনেক যদি, কিন্তু প্রশ্নের মুখে। পেস আক্রমণ জুসই নয়। টপ অর্ডার বা লেজের ব্যাটিং বলতে কিছুই নেই। কঠিন গ্রুপে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। সিরিজের প্রাপ্তি আফিফের ব্যাটিং এবং লিটনের পরিণত হওয়া। হরহামেশা ছুটিতে থাকা সাবিককে এখন শুধু ঢাকা ওয়াসার ব্যাবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম খানের সঙ্গেই তুলনা চলে।
জানিনা কি বলবে বিসিবি? ওডিআই বাংলাদেশের প্রথম পছন্দের ফরমেট। জানিনা বর্তমান অবস্থায় সেই সিরিজেও জয় পাবে কিনা বাংলাদেশ। সাকিব, মুশফিকের অবর্তমানে নতুনদের যাচাই করার সুযোগ মিলবে।