পূজার নাটকে রওনক ও মৌসুমী

সকাল থেকে সেলুনে বসে আছেন মৌসুমী হামিদ। তাঁর গভীর মনোযোগ নরসুন্দরের হাতের ক্ষুরে। কীভাবে ক্ষুর চালিয়ে দাড়ি কামান তিনি, চিরুনি-কাঁচি সহযোগে সুনিপুণভাবে চুলে আনেন নতুন স্টাইল। নানা প্রশ্ন করে তাঁর কাছ থেকে যতটা সম্ভব শিখে নিচ্ছেন মৌসুমী।

কারণ, একটু পরেই তাঁকে নরসুন্দরের ভূমিকায় নামতে হবে। সেলুনে আসা লোকজনের গোঁফ-দাড়ি কামাতে হবে, চুল ছাঁটতে হবে। যদিও সবই হবে ক্যামেরার সামনে, তবু দৃশ্যটি বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে কিছু জানাশোনা তো থাকা চাই।

শুটিং চলছে বরিশালে। নাটকের নাম ‘জাগরণী’। অন্যান্য অভিনয়শিল্পীকে নিয়ে পরিচালক শুটিংয়ে ব্যস্ত। একটু পরে শুরু হবে সেলুনের দৃশ্যের শুটিং। সেই দৃশ্যের প্রস্তুতি হিসেবে নরসুন্দরের কাছে ধরনা দিয়েছেন মৌসুমী। এতে কি তিনি মহিলা নরসুন্দরের চরিত্রে অভিনয় করছেন? মৌসুমী বললেন, ‘নাটকে আমার চরিত্রের নাম দুর্গা। তার স্বামী নরসুন্দর। জীবনের কোনো একটা পর্যায়ে সংসারের হাল ধরতে দুর্গাকে তার স্বামীর কর্মস্থলে গিয়েও কাজ করতে হয়। সে কারণে নাটকে আমাকে এ কাজ করতে হয়েছে। এই অভিজ্ঞতা আমার জন্য প্রথম। তাই শুটিংয়ের আগে নরসুন্দরের কাছে এ কাজের খুঁটিনাটি যতটা পারা যায় শিখে নিয়েছি।’

নাটকের গল্পে স্বামী-সন্তান নিয়ে অভাবের সংসার দুর্গার। কিন্তু অভাবের মলিনতাকে সে জয় করেছে হাসি-আনন্দ-উৎসব দিয়ে। মানুষের বিপদে সবার আগে এগিয়ে যায়। নিজের নামের মতোই দশভুজা হয়ে সবাইকে আগলে রাখে দুর্গা। তবে একটা সময় তাকে ধারণ করতে হয় কঠিন রূপ।

মৌসুমী বলেন, ‘আমরা মেয়েরা, মায়েরা বা বোনেরা—যাঁদের দায়িত্বে পরিবার পরিচালিত হয়; তাঁদেরকে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়।মেয়েরা প্রকৃতির মতো সহনশীল। আমরা যে সারাক্ষণ প্রকৃতির প্রতি অনাচার করছি, পরিবেশকে নোংরা করছি; প্রকৃতি ঠিকই আমাদেরকে আশ্রয় দিচ্ছে। তবে একসময় তো প্রকৃতিও বিরূপ আচরণ করে। অনেক কিছু সহ্য করতে করতে একটা পর্যায়ে সবাইকে দুর্গা হতে হয়। সবাইকে অসুর বধ করতে হয়। এটাই এ নাটকের মূল বিষয়।’

‘জাগরণী’ তৈরি হয়েছে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে। প্রচারিত হবে মাছরাঙা টেলিভিশনে। পাপ্পুরাজের চিত্রনাট্যে নাটকটি বানিয়েছেন সুব্রত সঞ্জীব। এতে মৌসুমীর সহশিল্পী রওনক হাসান। রওনকের সঙ্গে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন মৌসুমী। জুটি হয়েছেন সিনেমায়ও। এ বছর তাঁদেরকে নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ নামের সিনেমা বানিয়েছেন সোহেল রানা বয়াতি। সিনেমাটি মুক্তির অপেক্ষায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

17 − 7 =