পেনশন স্কিম যেন ভোগান্তি নয়, ভরসা হয়

প্রভাষ আমিন

এখন যেমন বিসিএস মানেই সোনার হরিণ, একসময় তেমনটা ছিল না। তবে সরকারি চাকরির একটা আলাদা কদর সবসময়ই ছিল। সরকারি চাকরি পাওয়া যেমন কঠিন, হারানোও কঠিন। একবার সরকারি চাকরি হয়ে যাওয়া মানে আজীবন নিশ্চিন্তি। নিয়মিত বেতন পাওয়া যাবে, বছর বছর ইনক্রিমেন্ট হবে, বেতন বাড়বে, মহার্ঘ্য ভাতা মিলবে, টিএ/ডিএ পাওয়া যাবে। কোয়ার্টার পাওয়া যাবে, রেশন মিলবে। বড় পদে গেলে গাড়ি মিলবে, নির্ধারিত ছুটি পাওয়া যাবে। তারচেয়ে বড় কথা হলো চাকরি জীবন শেষে প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটির মোটা অঙ্কের টাকা তো পাওয়া যাবেই, পাওয়া যাবে আজীবন পেনশন সুবিধাও।

বেসরকারি চাকরিতে তুলনামূলকভাবে বেতন বেশি ছিল। কিন্তু চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। বসের মেজাজ খারাপ থাকলে ঝাড়ি খেতে হবে, বস পছন্দ না করলে ইনক্রিমেন্ট কম হবে, এমনকি চাকরিও চলে যেতে পারে। বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানেই পেনশনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড থাকলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে তা-ও নেই। অধিকাংশ বেসরকারি চাকরিজীবীকে অবসরে যেতে হয় একেবারে শূন্য হাতে। তবুও অনেকে সারাজীবনের নিশ্চিন্তির সরকারি চাকরির চেয়ে তাৎক্ষণিক বাড়তি বেতনের বেসরকারি বা কর্পোরেট চাকরিই পছন্দ করতেন।

কিন্তু দফায় দফায় বাড়তে বাড়তে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ছুঁয়ে ফেলে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছাড়িয়েও যায়। এখন অবস্থা এমন সরকারি চাকরিজীবীদের বেতনও বেশি, সুযোগ-সুবিধাও বেশি, আজীবন পেনশনের সুবিধাও আছে। বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন এখন সরকারি চাকরিজীবীদের সমান, কিন্তু পেনশনের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়লেও দুর্নীতি কমেনি। উপরি আয়ের সুযোগ, ক্ষমতা; সব মিলে সরকারি চাকরি হয়ে যায় সবার আরাধ্য। বিশেষ করে বিসিএস মানেই যেন সোনার হরিণ। বিয়ের বাজারে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের পেছনে ফেলে বিসিএস ক্যাডাররা শীর্ষস্থান দখল করেছেন অনেক আগেই। বিসিএসে কাস্টমসে সুযোগ পাওয়া এক তরুণ নাকি বন্ধুদের বলেছেন, তার লক্ষ্য চাকরি জীবন শেষে তার কাছে ৩০০ কোটি টাকা থাকবে। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিদের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির গল্পই এখন ডালভাত। তাই হবু কাস্টমস কর্মকর্তার ৩০০ কোটি টাকার স্বপ্ন আর অবাস্তব মনে হয় না।

 

মাত্র ১৬ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর জীবন নিশ্চিন্ত, নির্ভার হলেও কোটি কোটি বেসরকারি চাকরিজীবী ও অপ্রাতিষ্ঠানিক পেশাজীবীর জীবন অনিশ্চয়তায় ঠাসা। ফলে সমাজে সৃষ্টি হয় প্রবল বৈষম্য। সেই বৈষম্য ঘোচানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী যখন প্রথম সর্বজনীন পেনশনের কথা বলেছিলেন, আমি ভেবেছিলাম কথার কথা। নির্বাচনকে সামনে রেখেই হয়তো এই রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজির আওয়াজ। ধারণা হিসেবে চমৎকার সন্দেহ নেই। আমার ধারণা ছিল, এই চমৎকার ও উচ্চাভিলাসী ধারণাটি বাস্তবায়িত হতে অনেক সময় লাগবে। এমনিতে আমি খুব আশাবাদী মানুষ। তারপরও আমার ধারণা ছিল সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা হয়তো একসময় চালু হবে, কিন্তু আমাদের জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারবো না।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়েও আমার একই আশঙ্কা ছিল। ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা প্রবল গণআন্দোলনে মাঠের কর্মী ছিলাম। কিন্তু সরকারের বিরূপ আচরণে এই বিচার বাংলার মাটিতে দেখে যেতে পারবো, এমন আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু শেখ হাসিনা আমার সে আশঙ্কা ভেঙে দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে কলঙ্ক ও গ্লানিমুক্ত করেছেন।

শেখ হাসিনা আবারও আমাকে ভুল প্রমাণিত করলেন। উচ্চাভিলাসী মনে হলেও সবার জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালু হয়ে গেছে বাংলাদেশে। এটা এক বিস্ময়কর অগ্রগতি। আমার বিবেচনায় আওয়ামী লীগ সরকারের যত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তার সবার শীর্ষে থাকবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম। পদ্মা সেতু নিয়ে নিয়ে আলোচনা হবে বেশি। কিন্তু উপকারভোগীদের সম্ভাব্য সংখ্যা বিবেচনায় এরচেয়ে বড় জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি আর কিছুই নেই। দেশের চার শ্রেণির প্রায় ১০ কোটি মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে চালু করা হচ্ছে সর্বজনীন পেনশন।

২০২০ সালে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখ, ২০৪১ সালে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৩ কোটি ১০ লাখ। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনতে এবং নিম্ন আয় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত সমাজের ৮৫ শতাংশ মানুষকে সুরক্ষা দিতেই সর্বজনীন পেনশনের ভাবনা। আগে থেকে চলমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সাথে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বড় পার্থক্য হলো, পেনশন কর্মসূচিতে সবার অংশগ্রহণ থাকবে। তাই এটা হবে সম্মানজনক এবং সবাই এটাকে নিজেদের কর্মসূচি মনে করবে। চলমান সামাজিক নিরাপত্তা একধরনের সাহায্য, আরো খারাপ করে বললে ভিক্ষা। আর সর্বজনীন পেনশন স্কিম বয়সী মানুষদের মর্যাদার জীবন নিশ্চিত করবে। সত্যিকারের কল্যাণ রাষ্ট্র হওয়ার পথে বড় এক অগ্রগতি সর্বজনীন পেনশন স্কিম।

এমনিতে বাংলাদেশে পারিবারিক মূল্যবোধ ও বন্ধন অনেক দৃঢ়। সবাই মনে করেন, তিনি কষ্ট করে উপার্জন করবেন, সন্তান বড় করবেন। শেষ বয়সে সন্তানই তাদের দেখভাল করবেন। এটাই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে। যৌথ পরিবারের ধারণাও ভেঙ্গে যাচ্ছে আজকাল। ব্যস্ত সন্তান শেষ বয়সে বাবা-মাকে দেখার সময় বের করতে পারেন না। অনেক সন্তানের সামর্থ্য থাকে না। অনেক সন্তান দেশের বাইরে চলে যান। ফলে সারাজীবন কষ্ট করা বাবা-মাকেও শেষ বয়সে বিপাকে পড়তে হয়। সারাজীবন স্বচ্ছল জীবনযাপন করা মানুষটিও শেষ বয়সে অসহায় হয়ে পড়েন। তারচেয়ে বড় কথা হলো, সন্তান যত ভালো বা যত সামর্থ্যবানই হোক, শেষ বয়সেও নিজের উপার্জিত অর্থে চলার সক্ষমতা যে কাউকে পরিবারে আরো বেশি মর্যাদাবান করবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম তাই সব বয়সের মানুষের মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার বড় ভরসা হতে পারে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রাথমিকভাবে চারটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রবাসীদের জন্য ‘প্রবাস’, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্ম ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিতদের জন্য ‘সুরক্ষা’ এবং বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার নিচে এমন নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ‘সমতা’। সমতায় মাসিক চাঁদা এক হাজার টাকা, যার অর্ধেক দেবে সরকার। অন্য প্যাকেজে এক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দেওয়ার সুযোগ থাকছে। ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত যে কেউ এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। ৬০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে তিনি আজীবন পেনশন পাবেন। আর মারা গেলেই নমিনি তার ৭৫ বছর হওয়া পর্যন্ত পেনশন পাবেন। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় পঞ্চাশ পেরোনো ব্যক্তিরাও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। তবে তাকে অন্তত ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। কেউ যদি ১৮ বছরে অন্তর্ভুক্ত হন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ ৪২ বছর চাঁদা দিতে পারবেন। ‘প্রবাস’ স্কিমে কেউ যদি সর্বোচ্চ ৪২ বছর ১০ হাজার করে চাঁদা দেন, তাহলে মেয়াদ শেষে তিনি প্রতিমাসে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৫ টাকা করে পাবেন। প্রগতি বা সুরক্ষায় কেউ সর্বোচ্চ ৪২ বছর ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দিলে মেয়াদ শেষে তিনি প্রতি মাসে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা করে পাবেন। অফার লোভনীয় সন্দেহ নেই।

প্রকল্পটি উচ্চাভিলাসী মনে হলেও এটা সরকারের জন্য বোঝা তো নয়ই বরং আয়ের বড় সম্ভাবনা নিয়ে আসতে পারে। কারণ আজ থেকে চালু হলেও সরকারকে কমপক্ষে ১০ বছর, সর্বোচ্চ ৪২ বছর পর টাকা শোধ শুরু হবে। আর সবাইকে একসাথে টাকা ফেরত দিতে হবে না। তার মানে আগামী ১০ বছর সরকার শুধু টাকা পাবে, কিন্তু এক টাকাও ফেরত দিতে হবে না। আগামী ১০ বছরে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে যদি সরকার লাভজনক কাজে বিনিয়োগ করে তাহলে কইয়ের তেলে কই ভাজার পরও বাড়তি তেল থেকে যাবে। তাছাড়া ‘প্রবাস’ প্যাকেজে প্রবাসীরা বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা দেবেন। কিন্তু মেয়াদ শেষে ফেরত পাবেন টাকায়। তাই এই স্কিম সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও উৎস হতে পারে। তাছাড়া সফলভাবে এই স্কিম চালু করতে পারলে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় কমে আসবে।

তবে চুন খেয়ে আমাদের মুখ পুড়ে আছে। তাই এখন দই দেখলেও ভয় পাই, সন্দেহ করি বাংলাদেশের আর্থিক খাতে এত অনিয়ম, দেখে কেউ কেউ সর্বজনীন পেনশন স্কিমের তহবিল নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই সংগৃহীত অর্থের সঠিক বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো লুটপাট, অনিয়ম যেন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে। আমার এক সহকর্মী বললেন, বাংলাদেশে সারাজীবন সরকারি চাকরি করে পেনশন পেতেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়, আগের দিনের পাশের টেবিলের সহকর্মীও পরদিন ঘুষ ছাড়া ফাইলে হাত দেন না। সেখানে বেসরকারি চাকরিজীবীদের ৪২ বছর চাঁদা দেয়ার পর পেনশন পেতে কয় বছর ঘুরতে হবে? এটা একটা বড় প্রশ্ন বটে। সরকার বদল হলে এই স্কিমের কী হবে, তা নিয়েও চিন্তা আছে কারো কারো।

একটি সরকার ভালো কাজ যেমন করে, মন্দ কাজও করে। কিন্তু আমাদের দেশে নিয়ম হলো, ভালো-মন্দ যাই হোক; কিছু লোক সরকারের প্রশংসা করবে, কিছু লোক বিরোধিতা করবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম অবশ্যই সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ। আমাদের সবার উচিত নিজেদের স্বার্থে এই স্কিমকে এগিয়ে নেওয়া। সরকার আসবে, সরকার যাবে; কিন্তু রাষ্ট্রের স্বার্থেই কিছু কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা দরকার। কিন্তু এরই মধ্যে পেনশন স্কিম নিয়ে নানা ধরনের সংশয় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সরকার নির্বাচনী ফান্ড জোগাড়ের জন্য এই স্কিম চালু করেছে, এমন উদ্ভট ধারণাও ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। পেনশন স্কিম অবশ্যই নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগকে কিছুটা হলেও সুবিধা দেবে। তবে সরকারের পেনশন স্কিমের টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ফান্ড গড়ার কোনো সুযোগ নেই। একটি মহল পেনশন স্কিমের টাকা সুদের, তাই এটাতে অংশ নেওয়া ঠিক হবে না বলে ছড়াচ্ছে। এটাও একটা কু-তর্ক। বাংলাদেশ নয় শুধু, গোটা বিশ্বের অর্থনীতিই দাঁড়িয়ে আছে সুদের ওপর। তাই শুধু পেনশন স্কিমকে সুদ বলে আলাদা করা উদ্দেশ্যমূলক।

সরকার সাধারণ মানুষের ভালোর জন্যই পেনশন স্কিম চালু করেছে। সাধারণ মানুষেরই উচিত ছিল নিজেদের স্বার্থে এই স্কিমকে সফল করা। কিন্তু পেনশন স্কিমের প্রথম একমাসের পরিসংখ্যান নিলে একে খুব একটা সফল বলার সুযোগ নেই। প্রথম একমাসে ১২ হাজার ৮৭৬ জন এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, নিবন্ধনের সংখ্যা আরো অনেক বেশি হলেও চাঁদা দিয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা আশানূরুপ নয়। অবশ্য জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা এখনও আশাবাদী। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, ‘এক মাস কিন্তু খুব বেশি সময় না। একদম প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত যদি মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পারি, প্রবাসীদের কাছে যদি পৌঁছাতে না পারি, তাহলে তো আমাদের খুব বেশি প্রত্যাশার সুযোগ নেই। আমরা এখন সে চেষ্টাটাই করে যাচ্ছি।’ তিনি বলছেন, অ্যাকাউন্ট খোলার চাইতে পেনশন স্কিম নিয়ে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছানোটাই এই মুহূর্তে তাদের প্রধান লক্ষ্য। আর জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া, প্রচার চালানো, স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নেওয়া, বিদেশি মিশনগুলোর সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।

মানতেই হবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠির কাছে পৌঁছানোর কাজটা এখনও ঠিকমত হয়নি। যেখানে ১০ কোটি মানুষের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রয়েছে, সেখানে একমাসে মাত্র ১৩ হাজারের মতো মানুষের অন্তর্ভুক্তি হতাশারই। আর সরকার পরিবর্তনের পরও এই কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুরক্ষা হলো বেশি মানুষের সম্পৃক্ততা। যত বেশি মানুষ এতে অংশ নেবে, পেনশন স্কিমের ভিত্তি তত শক্ত হবে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে বৃহত্তর জনগোষ্ঠি বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হলে এই স্কিম নিয়ে ওঠা সব শঙ্কা দূর করতে হবে। টাকা দিলে সেটা ফেরত পাওয়া যাবে, এটা নিশ্চিত করতে হবে। পুরো প্রকল্পটি দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে হবে। সুরক্ষিত আইনী কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বা অনিয়ম যেন মহৎ এই উদ্যোগ ম্লান করে না দেয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম যেন মানুষের ভরসার জায়গা হয়, ভোগান্তির নয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × five =