সালেক সুফী: ঠিক যেমনটা ভাবা হয়েছিল টি২০ বিশ্বকাপ ২০২২ প্রথম অনুশীলন ম্যাচেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের কংকাল বেরিয়ে পড়লো। প্রতিপক্ষ এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান। খেলার মাঠ ব্রিসবেনের অ্যালেন বর্ডার ওভাল। সেদিন ভাষ্যকার আলফাজুদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে শামসুল ইসলাম সংযোজিত ডিজিটাল আলোচনায় বলেছিলাম “মেষ শাবকদের পাঠানো হয়েছে কসাইখানায়”।
কাল আফগান দলের স্বাভাবিক নৈপুণ্যে করা ১৬০/৭ স্কোরের মোকাবিলায় ৯৮/৯ করে বাংলাদেশ প্রমাণ করলো অপ্রস্তুত আনকোরা দল নিয়ে তামাশা করতে এসেছে বাংলাদেশ। বিশ্ব দেখছে নামিবিয়া বা স্কটল্যান্ড কতটা প্রস্তুত বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসরে। ভালো ক্রিকেট খেলে ওরা শ্রীলংকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের না আছেই ব্যাটিং দক্ষতা, না আছে অস্টেলিয়ান উইকেটে ভালো বোলিং করার যোগ্যতা। এই দল নিয়ে মূল পর্বে কি করবে বাংলাদেশ সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভালো হয়েছে অনুশীলন ম্যাচগুলোতে দর্শক যেতে পারেনি। কাল আমি ছেলেকে নিয়ে খেলা দেখতে যাওয়ার পূর্বক্ষণে শুনলাম খেলাগুলোতে দর্শক যেতে পারবে না। গেলে আরো বেশি কষ্ট পেতাম।
টস জয় করে মোহাম্মদ নবী ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। উইকেটে যথেষ্ট পেস আর বাউন্স ছিল। তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ (২/২৪) আর তাসকিন (৩/৩০) ভালো বোলিং করে ১৬.২ ওভার পর্যন্ত ৫/১১৩ সীমিত রেখেছিলো আফগানদের। কিন্তু ওই সময় আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীর ব্যাট খোলা তলোয়ার হয়ে ওঠায় শেষ ৩.৪ ওভারে যোগ হলো মূল্যবান ৪৭ রান। ১৬০/৭ রান আফগানদের তুখোড় বোলিংয়ের মোকাবেলায় হিন্দুকুশ পর্বত মালার উপরে সোলাং পাস্ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করার মতো দুরূহ হয়ে গেলো। মোহাম্মদ নবী ৫টি প্রচন্ড ছক্কা আর এক চারে অপরাজিত ৪১ রান করে স্কোর বাংলাদেশের ধরা ছোয়ার বাইরে নিয়ে গেলো।
যে উইকেটে তাসকিন ভালো করেছে সেখানে উদীয়মান তরুণ ফজল হক ফারুকী আগুন ঝরাবে অনুমিত ছিল। ওর সঙ্গী হয়ে অপর পেসার ফরিদ বাংলাদেশের নাভিশ্বাস তুলে দিলো। ১০.২ ওভারে ৭/৪৬ দলের ইনিংস নিয়ে লেখার কি থাকতে পারে? সূচনায় নাজমুল শান্ত যথারীতি ব্যর্থ। এই ম্যাচেও শান্ত-মিরাজকে দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট। ফলাফল শূন্য।
সৌম্য (১), সাকিব (১), আফিফ (০), ইয়াসির (০)। আর কিছু কি বলার আছে? বাংলাদেশ ১০০ রানের কাছাকাছি যেতে পেরেছে মোসাদ্দেকের ৩৩ বল খেলে ২৯ রানের সুবাদে। ৯৮/৯ উইকেট। অজুহাত তোলার কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশকে কেন অস্ট্রেলিয়া সেদেশে ক্রিকেট খেলার আমন্ত্রণ জানায় না সেটি নিজেরা প্রমাণ করে দিলো আরো একবার।
মাঠ থেকে দলের সাথে থাকা একজন বার বার খেলার আপডেট দিচ্ছিলো। বাংলাদেশের এই শোচনীয় অবস্থা দেখে আমার হৃদয় ভাঙছে বার বার। ফারুকী (৩/৪২) ,ফরিদ (২/১২) ধসিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। রাশিদ খান খেললে হয়তো আরো সঙ্গিন হতো বাংলাদেশের অবস্থা।
কাল আবার খেলবে শক্ত প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যারা কাল নিউ জিল্যান্ডকে গুড়িয়ে দিয়েছে। কিছুই বলার নেই। অপ্রস্তুত আনকোরা নবীনদের দিয়ে তামাশা করতে আশা বাংলাদেশের এটিই হওয়ার কথা।