সালেক সুফী
হংকং চীন ৪ বাংলাদেশ ৩
নবরূপে সজ্জিত ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে কাল ছিল উচ্ছাস, আনন্দের অবসানে হতাশার এক রাত। গ্রূপ পর্যায় থেকে এশিয়ান কাপ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে খেলার জন্য বাংলাদেশের জন্য বাচাঁ মরা ম্যাচ ছিল হংকং চায়নার বিরুদ্ধে। গ্রূপের শীর্ষে থাকা অতিথি দল শারীরিক সক্ষমতা, স্কিল, খেলার কৌশলে ছিল এগিয়ে। কিন্তু হামজা, সমিত, ফাহমিদুল, জায়ানের মত দক্ষ প্রবাসী ফুটবলারদের সংযুক্তিতে বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে নিয়ে যৌক্তিক প্রত্যাশা ছিল। কানায় কানায় পূর্ণ ঢাকা স্টেডিয়ামে ছিল ৭০-৮০ দশকের উন্মাদনা। খেলার মাত্র ১৩ মিনিটে হামজার দুর্দান্ত ফ্রি কিক থেকে এগিয়ে গিয়েছিলো বাংলাদেশ। বাঁধভাঙা খুশির জোয়ারে প্লাবিত হয় বাংলাদেশ। কিন্তু রক্ষণ ভাগের ভুলে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ১-১ সমতা আসে। দ্বিতীয়ার্ধে একই ভাবে রক্ষণ ভাগের দুর্বলতায় গোল খেয়ে ১-৩ পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। হাল ছাডড়েনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে সমিত, ফাহমিদুল, জায়ান, জামাল পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসাবে আসার পর ম্যাচের চরিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। হামজা কিছুটা মুক্ত হয়ে আক্রমণে অংশীদার হতে পারে। চমৎকার খেলে জায়ান। প্রথমে মোরসালিন এবং এরপর সমিত গোল করে ৩-৩ সমতা আনে। খেলার ধারা অনুযায়ী ৩-৩ হওয়া উচিত ছিল খেলার প্রকৃত ফলাফল। কিন্তু যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে হৃদয় ভাঙা গোল খেয়ে বসে বাংলাদেশ। ৪-৩ ম্যাচ জিতে হংকং বাংলাদেশকে হতাশার সাগরে ভাষায়। হংকং, সিঙ্গাপুর, ভারত, বাংলাদেশ গ্রূপে ৩ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ এখন তলানিতে। হাতে আছে আরো তিনটি ম্যাচ। কাগজে কলমে সম্ভাবনা থাকলেও বাস্তবে কাজটি অত্যন্ত দুঃসাধ্য।
কি বলবেন ম্যাচটি নিয়ে? হেড কোচ স্প্যানিশ করবেরা কি বিবেচনায় প্রথম একাদশে ফাহমিদুল, সামিত সোম বা জায়ান আহমেদকে রাখেনি। অনেক উঁচু মানের কুশলী হংকং ফরওয়ার্ড, উইঙ্গারদের সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছে রক্ষণ ভাগ। হামজাকে নিচে এসে বার বার রক্ষণ ভাগকে সহায়তা করতে হওয়ায় মাঝ মাঠের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে প্রতিপক্ষের কাছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ খেলায় সার্বিকভাবে অধিকতর সক্ষম হংকং শেষ মুহূর্তের সুযোগ সন্ধানী গোলে বাংলাদেশকে পয়েন্ট বঞ্চিত করেছে। হেড কোচের পরিকল্পনা ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। আশা করি পরের ম্যাচ গুলোতে ভুল ভ্রান্তি শুধরে নিয়ে আরো ভালো খেলবে বাংলাদেশ।
শেষ সেকেন্ডের গোলে ম্যাচ হেরে হতাশা আছে। কিন্তু খেলার মান আর কৌশলে অনেক এগিয়ে থাকা একটি দলের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে লড়াই করাও কম অর্জন নয়।
আমরা যারা ৬০. ৭০, ৮০ দশকে ঢাকা স্টেডিয়ামে নিয়মিত ফুটবল উপভোগ করেছি সুদূর ব্রিসবেন থেকে ডিজিটলি বাংলাদেশের উজ্জীবিত খেলা দেখা ছিল অনেক আবেগ আর ভালোবাসার।