কিলিয়ান এমবাপ্পে লোটিন ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বেড়ে ওঠেন শহরের কাছাকাছি বন্ডি’তে । ২০১৫ সালে এমবাপ্পে মোনাকোর হয়ে খেলে সিনিয়র ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং লিগ ওয়ান শিরোপা জিতেন। ২০১৭ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে এমবাপ্পে প্যারিস সেন্ট-জার্মেইন এর সাথে ১৮০ মিলিয়ন ইউরোতে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। সেসময় তিনি ছিলেন দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল খেলোয়াড় এবং সবচেয়ে দামি কিশোর খেলোয়াড়। প্যারিসে তিনি চারটি লিগ ওয়ান শিরোপা এবং তিনটি কুপেস ডি ফ্রান্স জিতেছেন এবং ক্লাবের সর্বকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। তিনি ২০২০ সালে পিএসজিকে প্রথম UEFA চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠার কারিগর।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমবাপ্পে ফ্রান্সের হয়ে ২০১৭ সালে ১৮ বছর বয়সে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে এমবাপ্পে সর্বকনিষ্ঠ ফরাসি খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করেন। পেলের পরে তিনিই দ্বিতীয় কিশোর হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেন। ফ্রান্স টুর্নামেন্ট জিতে। ফিফা বিশ্বকাপের সেরা তরুণ খেলোয়াড় এবং বর্ষসেরা ফরাসি খেলোয়াড়ের খেতাব জিতে তিনি যৌথ দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপে ফ্রান্স রানার্স-আপ হয়। এমবাপ্পে ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন। টুর্নামেন্টের গোল্ডেন বুট এবং সিলভার বল জিতেছেন। বিশ্বকাপের ফাইনালে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতাও এমবাপ্পে ।
এমবাপ্পে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে FIFA, FIFPro World11, ২০১৮ সালে UEFA টিম অফ দ্য ইয়ার এবং ২০১৬-১৭, ২০১৯-২০, ২০২০-২১ এবং ২০১৮ এ UEFA চ্যাম্পিয়ন্স লিগ স্কোয়াড-এ খেলেছেন। তিনি ২০২১ সালে গ্লোব সকার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ২০১৭ সালে গোল্ডেন বল জিতেছেন, তিনবার লিগ ওয়ান প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার জিতেছেন এবং চার সিজনে Ligue 1 এর সর্বোচ্চ স্কোরার। বর্তমানে এমবাপ্পে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার।
আজ ২৪-এ পা দিলেন ফ্রান্স সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপ্পে। ২৪ বছরেই সাফল্যে প্রায় পূর্ণ তার ঝুলি। ১৯ বছরে প্রথম দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপ জয়। কাতার বিশ্বকাপে ৮ গোলের রেকর্ড গড়ে সর্বাধিক গোলস্কোরার হিসেবে জিতলেন গোল্ডেন বুট! কাতার বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন এমবাপ্পে। তার পায়ের জাদুতে মুগ্ধ ফুটবলবিশ্ব। দলকে বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পিছনে তার অবদান সত্যিই প্রশংসনীয়। অল্প বয়সেই একের পর এক সাফল্য দেখিয়ে জিতে নিয়েছেন সকলের মন। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনালে মাত্র ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে জোড়া গোল করেন তিনি।
বিশ্বকাপে তার মোট গোল সংখ্যা ৮। অল্প বয়সে একাধিক সাফল্য তার মাথা ঘুরিয়ে দেয়নি। বরং কিছু সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তিনি। অ্যালকোহলের প্রচার করেন না। বিশ্বকাপের অন্যতম স্পনসর ছিল ‘বাডবাইজার’ নামক মদের ব্র্যান্ড। ম্যাচ সেরাদের হাতে যে ট্রফি তুলে দেওয়া হচ্ছিল তাতে বড় বড় করে ‘বাডবাইজার’-এর নাম লেখা। অ্যালকোহলের প্রচার করবেন না বলে ট্রফিটি উল্টোদিকে ঘুরিয়ে ছবি তুলতেন তিনি। লাইম লাইট থেকে দূরেই থাকতে পছন্দ করেন ফরাসি সেনশেসন এমবাপ্পে। তার ব্যক্তিত্ব ও পায়ের জাদুতে মোহিত ফুটবলবিশ্ব।