বর্ষার কোন ফলের কোন গুণ

ছয় ঋতুতে ছয় রঙে সাজে এই দেশ। প্রতিটা ঋতুতেই আলাদা ফুল ও ফলের শোভা তো রয়েছেই। বর্ষায় যেমন বর্ষার ফল পাওয়া যায় তেমন পাওয়া যায় গ্রীষ্মকালের বেশ কিছু ফল। বর্ষার কোন ফল কোথায় ভালো হয়? কোন ফলের কী গুণ? এমন নানা বিষয় নিয়ে মাসুম আওয়ালের প্রতিবেদনে জানবো আমরা।

লটকন

বর্ষার জনপ্রিয় একটি ফল লটকন। এটি একটি টক-মিষ্টি ফল। লটকন গাছ দক্ষিণ এশিয়ায় বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হয়। বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ফলটি বুবি নামেও পরিচিত। তাছাড়া ‘লটকা’, ‘আঁশফল’ ইত্যাদি আঞ্চলিক নামও আছে। ফলটি ত্রিপুরা কাছাড় অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ফলে।

লটকনের জন্য নরসিংদী জেলার রয়েছে দেশজোড়া খ্যাতি। নরসিংদীর শিবপুর ও মরজাল উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকনের আবাদ হয়ে থাকে। লটকনে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘বি’। এতে ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ আছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম এবং ০.২০ মিলিগ্রাম। ফলে পাকা লটকন খাদ্যমানের দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনের কোয়ায় খাদ্যশক্তি থাকে প্রায় ৯২ কিলোক্যালরি। এতে ক্যালরি আছে জাতীয় ফল কাঁঠালের প্রায় দ্বিগুণ।

আমড়া

আমড়া বাঙালির অতি প্রিয় একটি ফল। টক-মিষ্টি মিশ্রণে ভিন্ন এক স্বাদ। কচি অবস্থায় টক। পরিপক্ব হলে খেতে বেশ লাগে। পাকা ফল খুবই মিষ্টি। আমড়া কাঁচা খাওয়া হলেও ভর্তা, আচার, চাটনি আর পরিপক্ব ফল দিয়ে তৈরি করা যায় জুস, জেলি এবং মোরব্বার মতো লোভনীয় খাবার। গ্রামাঞ্চলে কেউ কেউ মাংসের সঙ্গে আমড়া রেঁধে খান। ডালের সঙ্গেও খাওয়া যায়। আমড়ার শাঁস সাদা। পাকলে হলুদ রঙ ধারণ করে। এজন্য একে গোল্ডেন আপেল বলে। আমড়ায় তেমন কোনো রোগ বা পোকার আক্রমণ হয় না। উৎপাদন খরচ কম। অন্য যে কোনো ফলের চেয়ে আমড়া বেশি সময় ধরে সংরক্ষণ করা যায়। এ ফল বেশ স্বাস্থ্যসম্মতও। কৃষকরা আমড়া চাষ করে সহজেই হতে পারেন স্বাবলম্বী। আমড়া সারাদেশেই চাষ করা যায়। তবে বরিশালের আমড়া সারাদেশে বিখ্যাত।

পেঁপে

পেঁপে দেশে একটি দারুণ জনপ্রিয় ফল। এটি সবজি হিসেবে দেশের সর্বত্র সমাদৃত। পেঁপের অনেক ভেষজ গুণও রয়েছে। লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এখন পেঁপে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। তবে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ না করার কারণে এর তেমন ফলন পাচ্ছেন না চাষিরা। আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁপে চাষ করলে ফলন দ্বিগুণ পাওয়া সম্ভব। রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপের চাষ করা হয়। পুষ্টিমানে অত্যন্ত সমৃদ্ধ এই ফল মানবদেহে রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। পেঁপে স্বল্প মেয়াদি ফল, এর চাষের জন্য বেশি জায়গারও প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙ্গিনায় দু’চারটি গাছ লাগালে তা থেকে সারাবছর সবজি ও ফল পাওয়া যায়। এতে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। পেঁপে হজম ক্ষমতা বাড়াতে, ইমিউনিটি বাড়াতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আনারস

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, ভালুকা, ফুলবাড়িয়া; টাঙ্গাইলের মধুপুর, ঘাটাইল ও জামালপুর সদর উপজেলায় আনারস উৎপাদন হয়। এ অঞ্চলটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম বনাঞ্চল শালবনের একাংশ। শালবন এলাকার মাটি আনারস চাষের উপযোগী। এখানের জলবায়ুও আনারসের অনুকূল। বৃহত্তর ময়মনসিংহে আনারসের চাষ প্রধানত হয় গড় অঞ্চলেই। আনারস পুষ্টির বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আনারস ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে।

বেদানা

বেদানাকে হিন্দুস্তানি, ফার্সি ও পশতু ভাষায় আনার বলা হয়। ইংরেজিতে পমেগ্রেনেট। কুর্দি ভাষায় হিনার এবং আজারবাইজানি ভাষায় একে নার বলা হয়। সংস্কৃত এবং নেপালি ভাষায় বলা হয় দারিম। বেদানা গাছ গুল্ম জাতীয়, ৫-৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাকা ফল দেখতে লাল রঙের। ফলের খোসার ভিতরে স্ফটিকের মতো লাল রঙের দানা থাকে। এর আদি নিবাস ইরান এবং ইরাক। ককেশাস অঞ্চলে এর চাষ প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। সেখান থেকে তা ভারত উপমহাদেশে বিস্তার লাভ করেছে।

স্পেনীয়রা ১৭৬৯ সালে ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যালিফোর্নিয়াতে বেদানা নিয়ে যায়। বর্তমানে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শুষ্ক অঞ্চল, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, দক্ষিণ ইউরোপ এবং ক্রান্তীয় আফ্রিকায় ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। বেদানায় প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। এছাড়া এ ফল মেটাবলিজমকে বাড়িয়ে তোলে এবং হজমে সাহায্য করে।

নাশপাতি

নাশপাতির ইংরেজি প্রতিশব্দ পিয়ার। পাশ্চাত্য জার্মান শব্দ পেরা থেকে উদ্ভূত। ফলের কেন্দ্রস্থলটি বেশ নরম। জ্যাম, জেলি অথবা রসালো অবস্থায় বাজারজাতকরণ করা হয়ে থাকে। শক্ত ভূমিতে নাশপাতি গাছ ভাল জন্মে। ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশ থেকে গাছটির উৎপত্তি ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়। প্রাচীন গ্রিসে নাশপাতি বমন বা বমি দূরীভূতজনিত চিকিৎসাকর্মে ব্যবহার করা হতো। প্রাচীন বিশ্বের উৎপন্ন উদ্ভিদ হিসেবে এটি ইউরোপের পশ্চিমাংশ এবং উত্তর আফ্রিকার পূর্বাংশ থেকে শুরু করে এশিয়া মহাদেশের উপকূল অঞ্চল ও নমনীয় তাপমাত্রার এলাকাসমূহে দেখা যায়। মাঝারি আকৃতির গাছরূপে এটি ১০ থেকে ১৭ মিটার পর্যন্ত উচ্চতাসম্পন্ন। বাংলাদেশেও পাওয়া যায় নাশপাতি। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীর ঠান্ডা রাখে। এছাড়া, জ্বর, সর্দি, কাশি কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইবার থাকে।

পেয়ারা

পেয়ারা দেশের একটি জনপ্রিয় ফল। আমেরিকার নিরক্ষীয় অঞ্চল পেয়ারার আদি জন্মস্থান। পেরু থেকে মেক্সিকো পর্যন্ত এলাকায় দ্রুত এর বিস্তার ঘটে। ভারত, মেক্সিকো, ব্রাজিল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, বার্মা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হাওয়াই, ফিলিপাইন, ফ্লোরিডা প্রভৃতি দেশে ব্যাপকভাবে পেয়ারার চাষ হয়। পেয়ারা গাছের জন্য সর্বোত্তম তাপমাত্রা হচ্ছে ২৩-২৮ ডিগ্রি সে.। তবে পরিণত গাছ ৪৫ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায়ও বেঁচে থাকতে পারে। পেয়ারাতে থাকে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া যে কোনো ইনফেকশন থেকে পেয়ারা শরীরকে সুস্থ রাখে।

কলা

পরিচিত ও সহজলভ্য ফল কলা। এটি মূলত বর্ষার ফল। তবে দেশে সারা বছর পাওয়া যায়। কলাকে প্রাচীন সাহিত্যে কদলি বলা হতো। কলাগাছ, কলাপাতা, কলাগাছের শিকড় ও কলা সবই উপকারী। কলাগাছ ও কলাপাতা শুধুমাত্র পশুখাদ্য নয়, এদের আছে আশ্চর্য ভেষজ গুণ। রোগ নিরাময়ে অদ্বিতীয়। কলার পুষ্টিগুণ প্রচুর। কলা উপাদেয় খাদ্য। কাঁচা পাকা দুই অবস্থায়ই খাওয়া যায়।

জাম

জাম বর্ষাকালের একটি অন্যতম ফল। কালো জাম খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিতেও ভরপুর। লবণ-মরিচ দিয়ে জাম মেখে খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। জাম শরীরের অনেক উপকার করে। ত্বকের সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, রক্তচাপসহ একাধিক রোগভোগ থেকে মুক্তি মিলতে পারে জাম খেলে। আয়রন সমৃদ্ধ কালো জাম হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। এতে ক্যালোরি কম রয়েছে এবং আয়রন, ফোলেট, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন জাতীয় পুষ্টি রয়েছে। বর্ষার সময় কালো জাম খাওয়া ভালো।

ফলসা

ফলসা বা ফেলা বাংলাদেশের একটি অপ্রচলিত ফল। এটি প্রধানত দক্ষিণ এশিয়ার ফল। পাকিস্তান থেকে কম্বোডিয়া পর্যন্ত এর দেখা মেলে। অন্যান্য ক্রান্তীয় অঞ্চলেও এর ব্যাপক চাষ হয়। ফলসা গাছ ‘গুল্ম’ বা ছোট ‘বৃক্ষ’, যা আট মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এর ফুল হলুদ, গুচ্ছাকারে থাকে। ফলসা ফল ড্রুপ জাতীয়, ৫-১২ মিলিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট, পাকলে কালো বা গাঢ় বেগুনি রঙের হয়। ফলসা শব্দটি উর্দু ভাষা থেকে এসেছে। বাংলা, হিন্দি, মারাঠি সহ পৃথিবীর বহু ভাষাতে এটি ফলসা নামেই পরিচিত।

জামরুল

হালকা সবুজ রঙের মিষ্টি ফল। লাল রঙের জামরুলও পাওয়া যায়। এই ফলকে ঢাকাইয়া ভাষায় আমরুজও বলা হয়। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে সাদা জাম, মণ্ডল, নকট হিসেবেও পরিচিত। সাধারণত বীজ থেকে গাছ হয়, কিন্তু ডাল কেটে জলে রাখলে শেকড় জন্মায়। এটি বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সামোয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশে জন্মে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে জামরুলের ব্যাপক চাষ হয়। বাংলাদেশে প্রচুর জামরুল হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, জামরুল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। হাড় ও দাঁতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জামরুলে আছে জামবোসিন। যা রক্তে স্টার্চ থেকে শর্করা তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এ কারণে চিকিৎসকরাও ডায়াবেটিস রোগিদের জামরুল খাওয়ার পরামর্শ দেন। এতে ভিটামিন এ ও সি ছাড়াও আছে প্রচুর পরিমাণ সক্রিয় যৌগ। যা প্রস্টেট ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

কামরাঙ্গা

কামরাঙ্গা ছোট মাঝারি আকৃতির গাছের টকমিষ্টি ফল। গাছ ১৫-২৫ ফুট লম্বা হয়। ঘন ডাল পালা আচ্ছাদিত, পাতা যৌগিক, ১-৩ ইঞ্চি লম্বা। বাকল মসৃন কালো রংঙের। ফল ৩-৬ ইঞ্চি ব্যাসের এবং ভাজযুক্ত। ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলুদ। কামরাঙ্গা টক স্বাদযুক্ত বা টকমিষ্টি হতে পারে। গাছে একাধিকবার বা সারাবছরই ফল পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন এ ও সি এর ভালো উৎস। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারিতে ফল পাওয়া যায়।

কদবেল

লবণ-ঝাল দিয়ে কদবেল মাখা ভীষণ মজা। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় একটি ফল এটি। পুষ্টি বিচার করলেও কদবেলের জুড়ি নেই। কদবেল নারী ও শিশুদের কাছে বেশ প্রিয় ফল। শক্ত খোলসযুক্ত ফলের ভেতরে ধূসর রঙের আঠালো শাঁস এবং ছোট সাদা বীজ থাকে। কদবেল টক বা মিষ্টি স্বাদযুক্ত হতে পারে। এটি হালকা সুগন্ধযুক্ত ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং স্বল্প পরিমাণে লৌহ, ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন-সি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কদবেল কাঁঠাল, পেয়ারা, লিচু, আমলকি, আনারসের চেয়েও বেশি উপকারী।

আতা

দেশে খুব সাধারণ ও জনপ্রিয় একটি ফল আতা। ধারণা করা হয়, স্বাদের দিক থেকে কিছুটা নোনতা হওয়ার কারণেই এর এমন নামকরণ হয়েছে। আমেরিকার উষ্ণমণ্ডল ও পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ আতার আদি নিবাস। গাছের আকার খুব বড় নয়; উচ্চতায় ৩ থেকে ৫ মিটার। কাঁচা ফল খাওয়া যায় না। আতাফলে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও শর্করা জাতীয় খাদ্যোপদান রয়েছে। পাকা আতার শাঁস মিষ্টি হয়ে থাকে। খাওয়ার সময় জিভে চিনির মতো মিহি দানা দানা লাগে। পাকা আতার শাঁস বলকারক, বাত-পিত্তনাশক ও বমনরোধক।

আমলকি

আমলকির হাজার গুণ। পরতে পরতে স্বাদ বদল হয়। মুখে দিলে এক স্বাদ, চিবালে আরেক স্বাদ, আবার আমলকি খেয়ে পানি পান করলে মিঠা স্বাদ। আমলকি গাছ ৮ থেকে ১৮ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট হতে পারে, পাতা ঝরা প্রকৃতির। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই দেখা যায়। আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। আমলকির ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। আমলকি খেলে মুখে রুচি বাড়ে। স্কার্ভি বা দন্তরোগ সারাতে টাটকা আমলকি ফলের জুড়ি নেই। এছাড়া পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুবই উপকারী।

ডেউয়া/বন কাঁঠাল

ডেউয়া। অনেকেই বন কাঁটালও বলে ফলটিকে। এর নিজস্ব কোনো আকৃতি নাই, একেকটার একেক আকৃতি। একেবারেই কাঁঠালের মতই এটি। পাকা কাঁঠালের ভেতরে যা যা আছে সবই আছে ডেউয়ায়, শুধু এটা আকারে ছোট। ডেউয়া ধরনের অপ্রচলিত টক-মিষ্টি ফল। এর কাঠ বেশ উন্নতমানের। এর ফল সুস্বাদু এবং উপকারী। ডেউয়া গাছ বহু শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট, বড় আকারের বৃক্ষ।

করমচা

করমচা টক স্বাদের ছোট আকৃতির একটি ফল। কাঁটাময় গুল্মজাতীয় করমচা উদ্ভিদটি এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে পাওয়া যায়। কাঁচা ফল সবুজ, পরিণত অবস্থায় যা ম্যাজেন্টা লাল-রং ধারণ করে। অত্যন্ত টক স্বাদের এই ফলটি খাওয়া যায়, যদিও এর গাছ বিষাক্ত। করমচার ঝোপ দেখতে সুন্দর। বর্তমানে এটি একটি বিলুপ্তপ্রায় গাছ। ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য এ ফল খুব উপকারী। করমচা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা খাবারে রুচি বাড়ায়। মৌসুমী সর্দি-জ্বর নিরাময়ে সাহায্য করে। করমচাতে উপস্থিত ভিটামিন বি গায়ের চুলকানিসহ ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। করমচা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: খাদ্য কথন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 × 4 =