বাংলাদেশের মেয়ে ফুটবলারদের অনন্য মাইলফলক অর্জন

পাহাড়ী কন্যা ঋতুপর্ণা চাকমার দর্শনীয় দুটি গোলে স্বাগতিক মায়ানমারকে ২-১ পরাজিত করে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বাংলাদেশের গৌরব মেয়ে ফুটবল দল এশিয়া কাপে মূল পর্বে খেলার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। মায়ানমার, বাহরাইন, তুর্কমেনিস্তান, বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত এই গ্রূপের শীর্ষ দল ২০২৬ অস্ট্রেলিয়ায় খেলবে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে। বাংলাদেশ প্রথম খেলায় বাহরাইনকে ৭-০ গোলের বিশাল ব্যাবধানে বিধ্বস্ত করেছিল। গ্রূপের অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল তুর্কমেনিস্থানকেও বাংলাদেশ হারিয়ে দিবে আশা করা সমীচীন। পিটার বাটলারের পরিকল্পনায় বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে সেটি এখন প্রমাণিত।

মায়ানমার, বাহরাইন দুটি দলই বাংলাদেশ থেকে র‍্যাংকিংয়ে অনেক উঁচুতে। মাঠের খেলায় দুর্দান্ত দাপুটে ফুটবল খেলে বাংলাদেশের মেয়েরা সকল বাধা বিপত্তির অচলায়তন পেরিয়ে গেছে। কাল বাংলাদেশ থেকে ফেইসবুক বন্ধু উদয় সিনহা লিংক পাঠানোয় খেলাটি সরাসরি দেখেছি। নিজেদের থেকে শারিরকভাবে শক্তিশালী, সুঠামদেহী মায়ানমারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ খেলেছে কিপার গতি, কৌশল আর বুদ্ধিমত্তা দিয়ে। বিশেষ করে লেফট উইং দিয়ে দুরন্ত গতিতে ঋতু চাকমার আক্রমণ ছিল চোখ মেলে দেখার মত। দুই অর্ধে দুটি গোল করেছে ঋতু।  প্রথমটি ছিল ওর নেয়া ফ্রি কিক প্রতিপক্ষ রক্ষণ ভাগে ফিরিয়ে দিলে ফিরতি বলে জোরালো বাম পায়ের শটে গোল। দ্বিতীয়টি ছিল নিজ প্রচেষ্টায় উইং দিয়ে ঢুকে পরে বা পায়ের রেইনবো শটে মায়ানমার গোলরক্ষককে পরাজিত করা। দুটি গোল ছিল আন্তর্জাতিক মানের।

বাংলাদেশের এই মেয়ে দলে কিন্তু দেশ সেরা কিছু সিনিয়র খেলোয়াড় নেই। মূলত অধিকাংশ তরুণ খেলোয়াড় সমন্বিত এই দলের ফুটবলে হার না মন -মানসিকতা, এবং লড়াকু মেজাজ গড়ে তোলার কৃতিত্ব দিতেই হবে চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা পিটার বাটলারকে।

বাংলাদেশ এশিয়া কাপের মূল পর্বে শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে খেলতে হলে দলের রক্ষণ ভাগে অন্তত দুই তিন জন দীর্ঘ দেহি ফুটবল খুঁজে পেতে হবে। নিজেদের রক্ষণ ভাবে উঁচু বলে বাংলাদেশ কিছুটা বিচলিত হয়ে পরে। দেখতে হবে সাবিনা, মাসুরাদের অন্তত কয়েকজনকে ফিরিয়ে আনা যায় কিনা? আমি বাংলাদেশের মেয়েদের অনন্য অর্জনকে বাংলাদেশের খেলাধুলার ইতিহাসের অন্যতম সেরা অর্জন মনে করি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twenty + sixteen =