সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিকাংশ অর্জন ক্ষয়িষ্ণু শক্তির পাকিস্তান দলের বিরুদ্ধে। স্মরণে আছে ভালো খেলে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজে ধবল ধোলাই করেছিল। অবশ্য নিজেদের শক্তিমত্তার ফরমেট ওডিআই সিরিজে আবার নিজেরাই ধবল ধোলাই হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ শ্রীলংকা সফরে শ্রীলংকার সাথে টি ২০ সিরিজ ২-১ জয়ের পর দেশের মাটিতে চলতি টি ২০ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জয়ী হয়ে পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ করার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তানের খর্বশক্তির অপেক্ষাকৃত নবীন দল মিরপুরের ধীর গতির গ্রিপিং উইকেটের সঙ্গে ধাতস্ত হতে পারছে না. অপরদিকে চেনা পরিবেশে বাংলাদেশ আছে ফুরফুরে মেজাজে। সতর্ক থেকে স্মার্ট ক্রিকেট খেললে বাংলাদেশ তৃতীয় ম্যাচেও জয়ের এবং বাংলাওয়াশ অর্জনের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাগিদ রয়েছে ৩-০ সিরিজ জিতে রাংকিং ১০ থেকে ৯ উন্নীত করার।
বাংলাদেশের উচিত হবে তানজিদ তামিম এবং পারভেজ ইমনকে দিয়েই ইনিংস সূচনা করার। এই জুটিকে ক্রমাগত সুযোগ দিয়ে আরো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করার। দুইজনের হাতে প্রচুর স্ট্রোকস আছে, খেলতে পারে সাবলীল দক্ষতায়। তবে ম্যাচ এবং উইকেট পরিস্থিতি বিবেচনায় স্ট্রাইক রোটেট করে কিছু দুর্বলতা আছে. স্মার্ট বোলারদের বিরুদ্ধে প্রতিটি বল মান অনুযায়ী খেলতে হয়. ওভারে ৩-৪ সিঙ্গেলস নিয়ে স্ট্রাইক রোটেট করলে প্রতিপক্ষ বোলারকে দুই ভিন্ন ব্যাটসম্যানকে বোলিং করার কৌশল পরিবর্তন করতে হয়, বড় শট খেলার সুযোগ এসে যায়. ওপেনার দুইজনের একজন ১৪-১৫ ওভার উইকেটে থাকলে মীরপুর উইকেটেও ১৫০-১৬০ রান করা সম্ভব। পাকিস্তান বর্তমান দলের বোলিং আক্রমণ সীমিত। জানিনা প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান কেন প্রথম চয়েস স্পিনার খেলায় নি. লিটন শ্রীলংকায় দুটি ভালো ইনিংস খেলার পর আবারো ব্যাট হাতে দিবা নিদ্রায়। শেষ ম্যাচে তাকে জেগে উঠতেই হবে। লিটন ভালো ইনিংস খেললে দল অবশ্যই লড়াই করার পুঁজি সংগ্রহ করবে। তাওহীদ হৃদয়কে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে. ইনিংসের ভালো সূচনা হলে জাকের আলী, শামীম পাটওয়ারী মিডল অর্ডারে দলকে টেনে নিবে। এই দলে এই মুহূর্তে আমি মেহেদী মিরাজের সুযোগ দেখি না. ব্যাট বল দুটি হাতে দারুন খেলছে মাহেদী হাসান। এখন ভাবতে হবে বাড়তি স্পিনার নাসুম আহমেদকে খেলানো যায় কিনা। সেই ক্ষেত্রে তাসকিন আর মুস্তাফিজকে পেস বোলিং দায়িত্বে রেখে তিন স্পিনার খেলতে হবে। তবে তানজিম সাকিব কিন্তু গুরুত্বপূর্ন মুহূর্তে উইকেট তুলে নিচ্ছে। দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো বোলিং করার পর শরিফুলকে বিশ্রাম দেয়ার সিদ্ধান্ত সহজ হবে না.
পাকিস্তানকে নিয়ে কি বলার আছে. ওদের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা নানাভাবে দলের দুর্বল কৌশল নিয়ে মিডিয়া বিশ্লেষণ করছে। প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তানের ব্যাটিং কৌশল ছিল ভ্রান্ত। মীরপুর উইকেটে নতুন বলে বাড়তি সিম সুইং বিবেচনায় না রেখেই ধুম ধারাক্কা ব্যাটিং করে বার্থ হয়েছে। ফকর জামান ছাড়া অন্য সবাই টপ অর্ডারে নাদান মনে হয়েছে। সাইম আয়ুব ,হারিস ,সালমান আগা সম্পূর্ণ বার্থ হয়েছে। উইকেট কঠিন কিন্তু প্রথম ম্যাচে ১১০ রানে গুটিয়ে যাওয়া পাকিস্তান দলকে অপ্রস্তুত এবং দিকভ্রান্ত মনে হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের ১৩৩ রানের জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে। ফাহিম আশরাফ একা যুদ্ধ করে ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা জাগালেও শেষ রক্ষা হয় নি. দেখতে হবে পাকিস্তান প্রথম দুই ম্যাচ থেকে ধারণা পেয়ে তৃতীয় ম্যাচে কিভাবে মুস্তাফিজ ,তাসকিন ,শরিফুলকে সামাল দেয. পাকিস্তান বোলিং অতি সাধারণ মনে হচ্ছে। অবাক হই পাকিস্তান প্রথম সারির পেস বোলারদের দেশে রেখে কেন অনভিজ্ঞদের নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আমি বাংলাওয়াশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। সবাই জানে বাংলাদেশ এখনো মাইলস্টোন ট্রাজেডি নিয়ে গভীর শোকের চাদরে আবৃত। এই মুহূর্তে দলটি দাপুটে সিরিজ জিতে উৎসর্গ করতে মুখিয়ে আছে কোমলমতি শিশু কিশোরদের জন্য।