দেশে বছরে সোলার উৎস থেকে ১৫০০ মে.ও. বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব

কপ২৭: রোড টু শার্ম ইল শেখ

আফরোজা আখতার পারভীন: বর্তমান বিশ্বপ্রেক্ষাপটে ফসিল জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে যে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে তা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে বিশ্বের দেশগুলোকে উৎসাহিত করবে তাতে সন্দেহ নেই। আমি মনে করি আসন্ন কপ২৭ সংকট উত্তরণে বিশ্ব নেতারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন। তবে গ্রিন ক্লাইমেট তহবিলে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি। আর লস এন্ড ড্যামেজ তহবিল গঠনও এক বড় চ্যালেঞ্জ। আমার প্রত্যাশা কপ২৭ নেগোসিয়েশনে বিয়ষগুলোতে সাফল্য আসবে। কথাগুলো বলেছেন দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া।

বাংলাদেশে রিনিয়েবল এনার্জি’র প্রসার এবং বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলার জন্য এখন সোলার প্যানেলে যে ২৬% আর ইনভার্টারে ৩৭% আমদানি শুল্ক আছে তা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন ফাস্ট জায়েদ ফিউচার এনার্জি প্রাইজ উইনার ব্রাইট গ্রিন এনার্জি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সোলার এন্ড রিনিয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জনাব দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া। এনার্জি এন্ড পাওয়ার সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় বিসিপিসিএল-ইপি ক্লাইমেট টকস-এ অতিথি হয়ে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) তিনি এ প্রস্তাব দেন।

প্রত্যেক উপজেলায় ১২ থেকে ১৫ মেগাওয়াট সোলার প্যানেল তৈরির প্রস্তাবনা সমর্থন করে দীপাল বড়ুয়া বলেন, এটি করা গেলে রিনিয়বল এনার্জি দ্রুত প্রসার পাবে। ব্যক্তিখাতে রুফটপে সোলার দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তবে রুফটপে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের এক বছর মেয়াদি কর্মসূচি নেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগে সুদহার কমাতে হবে, ইনসেনটিভ দিতে হবে। কারণ প্যানেল স্থাপনে বড় অংকের প্রাথমিক বিনিয়োগ করতে হয়। এ সমস্ত সোলার প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিডে সঞ্চালনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ট্যারিফ হার নির্ধারণ করে দিতে হবে।

তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি বিভাগের মতো আলাদা রিনিয়বল এনার্জি বিভাগ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, রিনিয়বল এনার্জির জন্য মানবসম্পদ তৈরি করাও জরুরি। এছাড়া বর্তমান জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্রেডাকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। বর্তমানে সোলার প্যানেল স্থাপনে বিনিয়োগের জন্য বেশ কয়েকটি ধাপ পার হতে হয়। যা সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। স্রেডাকে সোলার স্থাপনের অনুমতি প্রদানের একক প্রতিষ্ঠান করা গেলে দ্রুত সুফল পাওয়া যাবে।

দীপাল বড়ুয়া বলেন, স্রেডার নেট মিটারিং একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্ত রিনিয়বল এনার্জির জন্য এখনও পূর্ণাঙ্গ পলিসি তৈরি হলো না। বাজেটও তেমন নেই। উদ্যোগে দ্রুততা নেই। তবে রিনিয়বল এনার্জি নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। বিশিষ্টজনরা এগিয়ে এসেছেন। জনসচেতনতা তৈরি হচ্ছে।

তার মতে সোলার ইরগেশনে তেমন সাফল্য আসছে না। বেশ কিছু জায়গায় করা হয়েছে। যদি সেচ ব্যবস্থা ১০০ ভাগ সোলারে প্রতিস্থাপন করা যায় তাহলে ডিজেল আমদানি কমান যাবে। অর্থ যেমন বাঁচবে তেমন কার্বন দূষণ কমবে। এছাড়া সোলার ইরিগেশনে স্থাপন করা প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। সোলার পাম্প সেচের বাইরে গ্রিডে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম। তার জন্য আরইবি এখন যে ট্যারিফ দিতে চাচ্ছে তা খুব কম। ট্যারিফ চূড়ান্ত করতে পারলে আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে সকল ডিজেল পাম্প সোলার দিয়ে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। যা হবে বাংলাদেশের জন্য হবে এক বড় অর্জন।

তিনি জানান, কার্বন ট্রেডিং বা গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড থেকে সামান্য অর্থ বাংলাদেশ পেয়েছে। কারণ এ অর্থদাতারা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ দিতে চায়। দেশের স্কুল কলেজ মাদ্রাসা মসজিদে যদি সোলার প্যানেল স্থাপন করা যায় তাহলে তারা যেমন উপকৃত হবে তেমনই গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড থেকে অর্থ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। উদ্বৃত্ব বিদ্যুৎ গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে।

বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপক সম্ভাবনার কথা জানিয়ে ফসিল ফুয়েল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো রিনিয়বল এনার্জি উৎপাদনে এগিয়ে আসছে বিষয়টির প্রশংসা করেন তিনি।

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 − 1 =