সালেক সুফী
তিন ফরম্যাটের পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট সফরে টেস্ট সিরিজ ০-১, ওডিআই সিরিজ ১-২ বাংলাদেশ সমর্থকদের হতাশ করেছে। আজ ক্যান্ডির পালেকেলেতে শুরু হবে তিন ম্যাচের টি ২০ সিরিজ। ১৩ জুলাই ডাম্বুলায় দ্বিতীয় এবং ১৬ জুলাই কলম্বোতে শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ কখনো এই ফরম্যাটে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে সিরিজ জিততে পারেনি। ১৭ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে শ্রীলংকা জিতেছে ১১ ম্যাচ, বাংলাদেশ ৬ ম্যাচ। আইসিসি রাংকিংয়ে শ্রীলংকার অবস্থান ৭ম, বাংলাদেশ রয়েছে তলানিতে ১০ম স্থানে। দুই দলের বর্তমান শক্তি সামর্থের বিবেচনায় স্বাগতিক শ্রীলংকা পরিষ্কার ফেভারিট। তবে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ালেও বিস্ময়ের কিছু নেই।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হাসান ইমন, শেখ মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ নাঈম শেখ ,তাওহীদ হৃদয়ে, জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
স্কোয়াডে নেই কিছু দিন আগেও তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক এবং বর্তমান সফরে ভালো ব্যাটিং করতে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। স্কোয়াডে নেয়া হয়নি সাদা বল ক্রিকেটে ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুন ফর্মে থাকা নুরুল হাসান সোহান এবং মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। নেয়া হয়েছে নাসুম আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে। অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। লিটনকে ফর্মহীন থাকায় ওডিআই সিরিজের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ম্যাচে বাদ দেয়া হয়। বাংলাদেশ দলের মূল সমস্যা ব্যাটিং। দলে টপ, মিডল, লেট অর্ডারে স্ট্রোকস মেকার্স থাকলেও দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস বড় করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সামর্থ্য প্রশ্নাতীত নয়। ওডিআই সিরিজে শেখ নাঈম এবং রিশাদ হোসেনকে সুযোগ দেয়া হয়নি। তানজিদ তামিম, পারভেজ ইমন দুইজন যথেষ্ট ভালো খেললেও টপ অর্ডারে নাঈমকে সুযোগ দেয়া উচিত। সেই ক্ষেত্রে তাওহীদ হৃদয় ৪ এবং লিটন ৫ নম্বরে ব্যাটিং করতে পারে। আমি জাকের অনিক, রিশাদ হোসেন এবং শেখ মেহেদীকে দলে রেখে তাসকিন, মুস্তাফিজ এবং তানজিম সাকিবকে একাদশে রাখার সুপারিশ করবো। একাদশে আমি মেহেদী মিরাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারছি না।
শ্রীলংকা স্কোয়াড: চরিথা আসালংকা (অধিনায়ক), পাথুম নিঃশঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, আভিস্কা ফের্নান্দো, কামিন্দু মেডিস, দীনেশ চান্দিমাল, দাসুন্ শঙ্কা, দুনিথ ওয়ালালাগে, চামচিকা করুনারত্নে, মাহীস থাকসিনা, জেফরি ভাডার্সি ,মহিষ পাথিরানা, নুয়ান তুষারা, বিনুরা ফের্নান্দো এবং এসান মালিঙ্গা।
পূর্ণ শক্তির ভারসাম্যপূর্ণ স্কোয়াডে শুধু লেগ স্পিনার অলরাউন্ডার আহত হয়ে পড়ে খেলতে পারছে না ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দলের টপ, মিডল এবং লেট্ অর্ডারে তুখোড় এবং ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান রয়েছে। পাথুম নিঃশঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, চরিথা আসালংকা টেস্ট এবং ওডিআই সিরিজে দারুন ফর্মে ছিল। যোগ হয়েছে চৌকষ খেলোয়াড় দাসুন শানাকা। বাংলাদেশকে ম্যাচ জিততে হলে শ্রীলংকাকে ১৫০-১৬০ সীমিত রাখতে হবে। সেই কাজটি করতে হলে পেস, স্পিন দুই ধরণের বোলিং অনেক উন্নত এবং ফিল্ডিং তুখোড় করতে হবে। শ্রীলংকা ১৭০-১৮০ করে ফেললে বাংলাদেশ ম্যাচ জয় করা সামর্থের বাইরে চলে যাবে।
বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ থাকবে সঠিক একাদশ নির্বাচন। নাসুম উইকেট টেকিং বোলার, ওকে একাদশে রাখা হলে মাহেদিকে বাদ দিতে হবে। অথবা দুই পিসির খেলিয়ে তিন স্পিনার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সিরিজে অন্তত একটি ম্যাচে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে সুযোগ দিতে হবে। আমি নিশ্চিত নই লিটন এবং তাওহীদ হৃদয় দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলতে পারবে কিনা। আমি বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছিনা। কিন্তু কাজটি আদৌও সহজ হবেনা। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ কিন্তু টি ২০ র্যাংকিংয়ে তলানিতে পড়ে আছে।