সালেক সুফী
পাশের বাড়ির প্রতিবেশী ভারতের আঙ্গিনায় বিশ্বকাপ ক্রিকেট দুয়ারে কড়া নাড়ছে। স্বপ্ন ডিঙি ভাসিয়ে রাখার জন্য আজ থেকে ঘরের মাঠে শুরু হওয়া বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নানা কারণে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন আলো ছড়াতে পারেনি। তবে একেবারে আশাহত করেছে সেটিও বলা যাবে না।
ছয় দলের টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচের ২টি জয় নিয়ে তৃতীয় স্থানে শেষ করেছে টাইগার বাহিনী। তবে তিনটি ম্যাচ শ্রীলংকার সঙ্গে দুবার আর পাকিস্তানের সঙ্গে একবার যে তিনটি ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছে সেই হারগুলোর ধরন হতাশাব্যঞ্জক ছিল।
তিনটি ম্যাচেই বাংলাদেশ ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থতার কারণগুলো নিয়ে পোস্ট মর্টেম করেছি অনেক। চাইবো বাংলাদেশ যেন দলের দুর্বল স্থানগুলো মেরামত করার সুযোগ হিসেবে আজ থেকে শুরু হওয়া সিরিজটির সঠিক ব্যবহার করে।
বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে টুর্নামেন্ট শিরোপা অর্জনকারী ভারতের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নিয়ে প্রমাণ করেছে সীমাবদ্ধতা সামাল দিয়ে সামর্থের সবটুকু প্রয়োগ করে খেললে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে ডার্ক হর্স হিসেবেইে আলো ছড়াবে।
বেশ কিছুদিন পরে দলে ফিরবে ফিটনেসের অভাবে এশিয়া কাপ না খেলা তামিম ইকবাল। এশিয়া কাপে অন্যতম দুর্বলতা ছিল ওপেনিং পার্টনারশিপ। তামিম ছাড়াও শুরুর দিকে অসুস্থতার জন্য খেলতে পারেনি লিটন। আজ দুজনের আবারো সুযোগ তুখোড় কিউই পিসি বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে ম্যাচ অনুশীলন করে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার।
টপ অর্ডারে নাজমুল শান্ত নেই। স্কোয়াডে আছে আনামুল হক বিজয়, তানজিদ তামিম, জাকির হাসান। এদের থেকে দুইজন না হলেও অন্তত একজনকে বেছে নিতে হবে ব্যাক আপ ওপেনার হিসাবে। তরুণ তুর্কি তাওহীদ হৃদয় সুযোগ পাবে নিজের ব্যাটিং প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটানোর। সর্বোপরি অভিজ্ঞ এবং জনপ্রিয় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলে তার অপরিহার্যতার প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ পাবে।
দলে নেওয়া হয়েছে সৌম্য সরকারকেও একজন সিমিং অল রাউন্ডার খোঁজার প্রত্যাশায়। নুরুল হাসান সোহানকেও যাচাই করা হবে লেট্ মিডল অর্ডারে। সাকিব, মুশফিক, মেহেদী মিরাজ, তাসকিন, শরিফুল, হাসান মাহমুদ অন্তত প্রথম দুই ওডিআই ম্যাচে বিশ্রামে আছে। মুস্তাফিজ, তানজিম সাকিব, খালেদকে সামাল দিতে হবে পেস আক্রমণ। স্পিনার হিসাবে থাকছে নাসুম, শেখ মাহেদী।
মোটকথা এই সিরিজ থেকে বাংলাদেশের অর্জনের আছে অনেক কিছুই। এশিয়া কাপে এক্সপেরিমেন্টগুলো ব্যর্থ হবার শেষ সুযোগ বিশ্বকাপে সেইগুলো শুধরে নেওয়ার। ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করতে হবে।
১২ জন মোটামুটি নিশ্চিত। বাকি দুটি পজিশন নিশ্চিত হবে আজ থেকে শুরু হওয়া সিরিজের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। দুই ম্যাচের ফলাফল যাই হোক আমি চাইবো শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের মূল দল খেলে নিজেদের কম্বিনেশন ঝালাই করুক। শুভ কামনা বাংলাদেশ দলের জন্য। চাতক পাখির মতোই চেয়ে থাকবো বাংলাদেশের সাফল্য কামনায়।
সালেক সুফী: আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিশ্লেষক