বাংলার বাঘিনীদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত

অনুর্ধ ২০ ওমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাই টুর্নামেন্ট ২০২৫

উদয়ের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের দাপুটে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। বাছাই পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বড়দের দল অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপের মূল টুর্নামেন্টে উত্তীর্ণ হবার পর, বয়স ভিত্তিক দল উপর্যুপুরি সাফ শিরোপা জয় করেছে। এখন অনুর্ধ ২০ দল লড়ছে এশিয়া কাপের বাছাই পর্বে।

লাওসের রাজধানী ঐতিহাসিক ভিয়েনটিএন নগরীতে অনুষ্ঠিত খেলায় প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ হারানোর পর কাল পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যাবধানে বিপর্যস্ত করে শেষ ম্যাচে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া দলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দারুন প্রস্তুতি নিয়েছে।

কাল দক্ষিণ কোরিয়া লাওসের বিরুদ্ধে জিতেছে ১-০ গোলে। এশিয়ান মেয়েদের ফুটবলে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দক্ষিণ কোরিয়া দলের বিরুদ্ধে জয় উচ্চ আশা মনে হলেও উদয়ের পথে উজ্জীবিত বাংলার বাঘনিরা হাল ছেড়ে দিবে বলে মনে হয় না।

বাংলাদেশ গ্রূপ সেরা না হয়েও গ্রূপ পর্যায়ে অন্যতম সেরা দ্বিতীয় দল হিসাবেও থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপের ফাইনাল খেলার সুযোগ রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের লক্ষ্য থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে লড়াই এবং পরাজিত হলেও ব্যাবধান সীমিত রাখা।

বাংলাদেশের চেয়ে রাংকিংয়ে নিচু সারির পূর্ব তিমুর দলের বিরুদ্ধে সহজ জয় শারীরিক, মানসিক ভাবে দারুন প্রস্তুত উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল সহজ জয় পাবে অনুমিত ছিল। কিন্তু শারীরিক ভাবে শক্তিশালী তিমুর দলের রক্ষণ ভাগ চূর্ণ গোলের জানালা খুলতে বাংলাদেশের কিছুটা কষ্ট হয়েছিল শুরুতে। কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে কৌশল পরিবর্তন করে পিটার বাটলারের যোগ্য শিষ্যরা।

মাঝ মাঠ থেকে ছোট গড়ানো পাসে আক্রমণ গোড়ার পাশাপাশি লম্বা উঁচু বলে ভুলের ফাঁদে জড়াতে শুরু করে সাফল্য পায় বাংলাদেশ। খেলার ২০ মিনিটে সপ্নার কর্নার থেকে শিখার হেড জালে জড়িয়ে গোলের জানালা খেলে ফেলে বাংলাদেশ। শুরু হয় গোল মুখে বাংলার বাঘিনীদের প্রলয় নৃত্য।

৩৩ মিনিটে শান্তি মার্ডির বাঁকানো কর্নার পোস্টে লেগে সরাসরি গোলে ঢুকে যায় (২-০)। কিছু পরেই শান্তির আরো একটি কর্নার থেকে চমৎকার হেডে গোল করে নবীরুন (৩-০) । প্রথমার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে সাগরিকার ডিফেন্স চেরা পাস থেকে গোল মিশন শুরু করে তৃষ্ণা (৪-০)।

দ্বিতীয়ার্ধ ছিল বাংলাদেশের একাধিপত্য।  একের পর এক বিচক্ষণ আক্রমণে বাংলাদেশ কোনঠাসা করে ফেলে তিমুরিয়ানদের।  তৃষ্ণা দুই গোল করে হ্যাট্রিক অর্জন করে। বাকি দুটি গোল আসে বাংলার মেয়েদের গোল মেশিন সাগরিকা আর সুযোগ সন্ধানী মুনকির পা থেকে। ৮-০ গোলের বিশাল ব্যাবধানে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

সবাই মানবেন বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলে রেনেসাঁ এসেছে। ফিফা রাংকিংয়ে ২৪ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১০৪। খেলার সুক্ষ কৌশল রপ্ত করা বাংলার মেয়েরা এখন দারুন আত্মবিশ্বাসী। শুরু থেকে শেষ অবধি একই ধারা বজায় রেখে প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা দেখে কৌশল চোখের পলকে পাল্টে ফেলে।

বক্সের ভেতর থেকে আলতো ছোয়া বা দূরপাল্লার নিখুঁত শটে গোল করার দক্ষতা অনেকের। কর্নার বা ফ্রি কিকের মত সেট পিস থেকেও আসছে গোল।  সর্বোপরি শারীরিক ভাবে অনেক সক্ষম দলটি এখন পুরো সময় জুড়ে একই ধারায় খেলেছে। আকাশ ওদের এখন সীমানা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × 1 =