ঢাকা, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বাংলা চলচ্চিত্রকে স্বমহিমায় প্রস্ফুটিত করতে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলকে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২’ প্রদান উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এ আহবান জানান।
আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২’ প্রদান উপলক্ষ্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী, কলাকুশলী, নির্মাতা, প্রযোজক, পরিবেশক, দর্শকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, দেশে সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগাবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, অমিত শক্তিশালী গণমাধ্যম চলচ্চিত্র মানুষকে আনন্দ দেয়, ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং আশা-আকাঙ্খা তুলে ধরে মানুষকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে। একটি ভালো চলচ্চিত্র মানবিক গুণাবলির বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এছাড়া চলচ্চিত্র মাটি ও মানুষের কথা বলে, মানুষের স্বপ্ন ও সাধনাকে সেলুলয়েডে বন্দি করে পর্দায় ফুটিয়ে তোলে। চলচ্চিত্রের অপরিমেয় শক্তির কথা অনুধাবন করেই স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তদানীন্তন প্রাদেশিক সরকারের শিল্প, বাণিজ্য ও শ্রমমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ১৯৫৭ সালের ২৭ মার্চ প্রাদেশিক পরিষদে ইপিএফডিসি বিল উপস্থাপন করেন, যা সে বছরের ৩ এপ্রিল পাস হয়। জাতির পিতার এ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলা চলচ্চিত্রের অগ্রযাত্রার একটি মাইলফলক হিসেবে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় আজকের বিএফডিসি।
জাতির পিতার প্রদর্শিত পথ ধরেই সরকার চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ৩ এপ্রিল ‘জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস’ এবং চলচ্চিত্রকে ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষণা, কবিরপুরে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটি স্থাপন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বিএফডিসির আধুনিকায়ন এবং জেলায় জেলায় আধুনিক সিনেপ্লেক্স সংবলিত তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া পুরানো সিনেমা হলগুলোর সংস্কার ও বন্ধ সিনেমা হলসমূহ চালু করার লক্ষ্যে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন, চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুদানের পরিমাণ বৃদ্ধি ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন- ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে। চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন প্রদান এবং সার্টিফিকেশন প্রাপ্ত চলচ্চিত্র সুষ্ঠুভাবে প্রদর্শনের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন, ২০২৩’ প্রণীত হয়েছে।
তিনি জানান, সরকারের যুগোপযোগী উদ্যোগে ইতোমধ্যে চলচ্চিত্র শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সুস্থ ধারার বিনোদনমূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দর্শক প্রেক্ষাগৃহমুখী হতে শুরু করেছে। দেশের চলচ্চিত্র বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শন ও প্রশংসিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি আশা করি, সরকারের পাশাপাশি চলচ্চিত্র শিল্পী, কলাকুশলী, নির্মাতা, প্রযোজক, পরিবেশক, দর্শকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্যোগে বাংলা চলচ্চিত্র স্বমহিমায় প্রস্ফুটিত হবে’।
তিনি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।