বিজয় দিবসে সবাই মিলে মুক্ত কণ্ঠে দেশের গান

সকলে মিলে দেশের গান গাইবার, দেশের কথা বলবার ধারবাহিকতায় এবারো মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে ছায়ানট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত হয় এই অনুষ্ঠান। ২০১৫ সাল থেকে মহান বিজয় দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাঠে দেশগান গাইবার সফল আয়োজন করছে ছায়ানট। আগ্রাসী কোভিড ১৯-এর কারণে ২০২০ সালে এই আয়োজনে ছেদ পড়ে। ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানের জন্য বিজয় দিবসের আয়োজন উক্ত স্থানে করা সম্ভব হয়নি।

এবারের আয়োজনে ছিল ৮টি সম্মেলক গান, সাথে সম্মেলক নৃত্য। একক গান পরিবেশন করেন নাসিমা শাহিন ফ্যান্সী ও সুমন মজুমদার এবং আবৃত্তি করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয়সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান যথারীতি বিকেল পৌনে চারটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠান শেষ হয় ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ১৬ই ডিসেম্বরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ ও বাঙালির পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের ক্ষণকে স্মরণ করে সম্মিলিত কণ্ঠে ৪টা ৩১ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত গাইবার মধ্য দিয়ে।

সকলে মিলে নৃত্যশৈলীর সঙ্গে মুক্তকণ্ঠে দেশগান গাওয়ার এবং দেশকথা শোনার-বলার গোটা আয়োজনকেই প্রতীকীভাবে জাতীয় পতাকার রঙ দিয়ে সজ্জিত করার প্রয়াস ছিল এ আয়োজনে। মিলিত কণ্ঠে দেশের গান গাইবার এই আয়োজনের নিরাপত্তা বিধানে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আয়োজনটি সরাসরি সম্প্রচার করে দীপ্ত টেলিভিশন।

পাকিস্তান আমলে বাঙালির মনে আত্ম-পরিচয়ে বাঁচবার বিশ্বাস জাগিয়ে তুলতে ১৯৬৭ সালে ছায়ানট বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান শুরু করেছিল। আজ বিশ্ব জুড়ে ধর্ম-বর্ণ-আদর্শ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখ বাঙালির সবচে বড়ো প্রাণের উৎসব। সেই সাংস্কৃতিক জাগরণের সঙ্গে মানবিক বোধসঞ্চারের লক্ষ্যে ‘সকলে মিলে দেশ-গান গাইবার, দেশ-কথা বলবার’ এই মিলনানুষ্ঠান শুরু হয় ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের মহান বিজয়-দিবসে। মহান বিজয়-দিবসের দিনে ভেদাভেদ দূরে ঠেলে জাতীয় পতাকার সবুজে দেহ ও মন রাঙিয়ে সর্বান্তকরণে ষোল আনা বাঙালি হয়ে উঠবার ব্রত নিতে সবাইকে আহ্বান জানায় ছায়ানট।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

12 + 18 =