বিদেশিদের ফেসবুক পোস্ট সরিয়ে ফেলার নির্দেশ সিঙ্গাপুরের

সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের ফেসবুক থেকে বিদেশিদের পোস্ট সরিয়ে ফেলতে ফেইসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটাকে নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিধিনিষেধ আরোপের নিয়ম প্রয়োগ করে এ সিদ্ধান্ত নিল সিঙ্গাপুর সরকার।

শুক্রবার দেশটির নির্বাচন বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বিদেশিদের কিছু পোস্ট দেখে মনে হয়েছে সেগুলো “কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর নির্বাচনী সাফল্য বা অবস্থান প্রচার বা ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে” করা হয়েছে। এটি নজরে আসার পরিপ্রেক্ষিতে ইনফোকম মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এ আদেশ জারি করেছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ নগর-রাষ্ট্রে নির্বাচন হবে আগামী ৩ মে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘নিয়ন্ত্রণে’ ২০২৩ সালে চালু হওয়া নিয়মের অধীনে এটি হতে যাচ্ছে সেখানকার প্রথম নির্বাচন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এবারের ভোটেও নিশ্চিতভাবেই পিপলস অ্যাকশন পার্টির আধিপত্য থাকবে, যারা ১৯৬৫ সালের স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই অধিকাংশ আসনে জয়ী হয়েছে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিরা অনলাইনে কোনো প্রচার চালাতে পারবেন না। কোনো দল বা প্রার্থীর সাহায্য কিংবা ক্ষতি হতে পারে, এমন যে কোনো প্রচারই নতুন নিয়মে ‘অনলাইন উপকরণ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হবে।

শুক্রবারের বিবৃতিতে বেশ কিছু বিদেশিদের নামও রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামপন্থি দল ‘পার্টি ইসলাম সে-মালয়েশিয়ার’ জাতীয় কোষাধ্যক্ষ ইস্কান্দার আব্দুল সামাদ; মালয়েশিয়ার এ দলটির সেলাঙ্গর রাজ্যের যুব প্রধান মোহাম্মদ সুকরি ওমর এবং ফেসবুক ব্যবহারকারী ‘জাই নাল’, যিনি জুলফিকার বিন মোহাম্মদ শরীফ নামে পরিচিত।

জুলফিকার বিন মোহাম্মদ শরীফ একজন অস্ট্রেলিয়ান, যিনি ২০২০ সালে তার সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। এ তিনজনের মধ্যে ইস্কান্দার তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে বিরোধী ওয়ার্কার্স পার্টির ফয়সাল মনাপের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে জুলফিকারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি মালয়-মুসলিম সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি এমনটাও বলেছেন যে, সিঙ্গাপুরের আর কোনো মালয় সংসদ সদস্যের প্রয়োজন নেই, যিনি মুসলমানদের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করেন না। জুলফিকারের পোস্টটি সুকরি ওমর নতুন করে পোস্ট করেছিলেন।

সিঙ্গাপুর সরকার বলেছে, তাদের এসব পোস্ট অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে এবং নাগরিকদের জাতিগত ও ধর্মীয় ভিত্তিতে ভোট দিতে প্রভাবিত করছে।

এ জুলফিকার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, সরকারের এ পদক্ষেপে এটাই বোঝায় যে ক্ষমতাসীন পিএপি এবং তার সমর্থকরা ‘ভয় পেয়েছেন’ এবং তারা ‘হতাশ’ হয়ে পড়েছেন।

তিনি বলেছেন, তিনি নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের জন্য নতুন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল ও ওয়েবসাইট তৈরি করছেন।

বিরোধী ওয়ার্কার্স পার্টি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের প্রার্থীদের সমর্থন জানানো বিদেশি দলগুলোর ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

এসব বিষয়ে পিএপি তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মেটা, ইস্কান্দার, সুকরি এবং পিএএসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সাড়া পায়নি রয়টার্স।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

7 + fifteen =