বিবিসি বাংলা রেডিওর শেষ দু’টি অধিবেশন প্রচার হচ্ছে

দীর্ঘ ৮১ বছর পর বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হতে যাচ্ছে। আজ শনিবার রাতে প্রচারিত হবে বিবিসি বাংলা রেডিওর শেষ দুটি অধিবেশন।সংবাদ ও সাময়িক প্রসঙ্গের অনুষ্ঠান ‘প্রবাহ’ আর ‘পরিক্রমা’ শেষ বারের মত প্রচারিত হবে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা এবং রাত সাড়ে দশটায়।  অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন লন্ডনে মানসী বড়ুয়া আর ঢাকায় আকবর হোসেন।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে ব্যাপক পরিবর্তনের পটভূমিতে বিবিসি বাংলা রেডিও বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে ওয়ার্ল্ড সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বাংলায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

“বিবিসি বেশ কিছু দিন থেকে ডিজিটাল প্লাটফর্মের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে, এখন এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত করা হবে,’’ বলেন বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা।

যুদ্ধের মাঝে যাত্রা শুরু

বিবিসি বাংলা রেডিও যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৪১ সালের ১১ই অক্টোবর, একটি সাপ্তাহিক নিউজলেটার দিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তিকালে মিত্র পক্ষের  বক্তব্য ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল বিবিসি বাংলা রেডিওর যাত্রা। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে বিবিসি নামটি সব চেয়ে বেশি পরিচিতি পায় ১৯৭১ সালে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়।

বিবিসির খবরের ওপর শ্রোতাদের আস্থা আর বিবিসি বাংলা রেডিওর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। মানুষ তখন যুদ্ধের খবরের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করত বিবিসি বাংলার ওপর।

রেডিও সম্প্রসারণ

বিগত আট দশকে বিবিসি বাংলার রেডিও অনুষ্ঠানমালা এবং ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। রেডিওর চূড়ান্ত সম্প্রসারণ ঘটে ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে যখন চতুর্থ একটি দৈনিক অধিবেশন শুরু করা হয়।

তার চার বছরের মাথায় সকালের দুটি রেডিও অধিবেশন লন্ডন থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়, এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিবিসি বাংলার সাংবাদিক সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ ঘটে।

তবে রেডিওর শ্রোতা কমে যাওয়ায় বিবিসি বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে। চ্যানেল আই-এর সহযোগিতায় ‘বিবিসি প্রবাহ’ নামক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান নিয়ে ২০১৫ সালে বিবিসি বাংলা বাংলাদেশের টেলিভিশন জগতে প্রবেশ করে।

কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রেডিও শ্রোতা সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে, বিশেষ করে সংবাদ এবং সাময়িক প্রসঙ্গের ক্ষেত্রে। বিবিসির গবেষণায় দেখা গেছে বিভিন্ন দেশে মানুষ সংবাদের চাহিদা মেটানোর জন্য টেলিভিশন এবং ডিজিটাল মাধ্যমকে বেছে নিচ্ছেন।

বিবিসি বাংলা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

ten + 18 =