বিয়ের ৬ বছর পর জানলেন তারা ভাই-বোন!

ছয় বছর হলো তাদের বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে দুটি শিশু এসেছে তাদের জীবনে। কিন্তু, এরপরই তাদের জীবনে ঝড় ওঠে। কারণ, সম্প্রতি ডাক্তারি পরীক্ষায় এই দম্পতি জানতে পেরেছেন, তারা আসলে ভাই-বোন! সংবাদ মাধ্যম দ্য মিররের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ দম্পতি নিজেই তাদের আশ্চর্যজনক গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। তবে প্রতিবেদনে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। জানা যায়, খুব ছোটবেলায় তারা একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যায়।

স্বামী দাবি করেছেন, তাকে খুব অল্প বয়সে দত্তক নেওয়া হয়েছিল এবং তার জৈবিক পিতামাতা কে তা জানেন না। বিশ্বের অনেক দেশেই ভাই-বোনের বিয়ের প্রচলন রয়েছে। দুই সন্তান হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী জানতে পারেন, তারা আসলে ভাই-বোন, এমন ঘটনা বোধহয় আগে কখনো ঘটেনি।

দ্য মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যক্তিটি জন্মের পর কোনো কারণে তার পিতামাতার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। একই শহরের আরেক দম্পতি তাকে দত্তক নেন। বড় হওয়ার পর সে ওই শহরের এক তরুণীর প্রেমে পড়ে। তারপর তাদের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর প্রথম সন্তান হওয়ার পরও তারা জানত না তারা ভাই বোন। দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর জানা গেল এ তথ্য। স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। কিডনি দান করার জন্য তার কোনো আত্মীয়র সঙ্গে পরীক্ষায় মিলছিলো না। তার স্বামীও পরীক্ষা করান।

পরীক্ষার ফলাফল আসতেই চিকিৎসকরা হতবাক হয়। কারণ, চিকিৎসকরা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভাই-বোনের মতো মিল খুঁজে পেয়েছেন। স্বামী বলেছেন, ‘আমি কিডনি দান করতে পারি কিনা তা দেখার জন্য আমার পরীক্ষা করা হয়েছিল। আমি জানতাম এটা অসম্ভব। কারণ আমরা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু, ডাক্তাররা আমাকে ফোন জানালেন, মিল পাওয়া গেছে।’

এরপর, ডাক্তাররা তার টিস্যু এইচএলএ (হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন) পরীক্ষা করেন। সেই পরীক্ষার ফলে দেখা গেছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিলের হার অনেক বেশি। যা বেশ অস্বাভাবিক, কারণ সাধারণত ভাই বোনের মধ্যে এ মিল দেখা যায়। ভাই-বোনের মধ্যে ডিএনএ মিল শতভাগের কাছাকাছি। আর অভিভাবক ও সন্তানদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ মিল থাকে। তাই এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী আসলে ভাই-বোন বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।

স্বামী আরও জানিয়েছেন, তাদের বাচ্চাদের মধ্যে কোনো জেনেটিক ডিসঅর্ডার ধরা পড়েনি। তবে, তারা ভাইবোন তা জানার পরে, ব্রিটিশ দম্পতি কী করবেন তা নিয়ে অনিশ্চিত। নেটিজেনদের পরামর্শ চেয়েছেন তারা।

বেশিরভাগের মতে, তারা বিবাহিত এবং ইতোমধ্যে সন্তান রয়েছে। তাই আর পিছিয়ে যাওয়ার কিছু নেই। তাছাড়া শিশুদের মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়নি। দুজনেই সুস্থ আছেন। তাই তাদের উচিত সন্তানের ভালো মা-বাবা হওয়া। আর ভাই বা স্বামী তার বোন বা স্ত্রীকে তার কিডনি দিয়ে সুস্থ করে তোলা উচিত। কিছুই পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × 3 =