লন্ডনের মেঘে ঢাকা গুমোট পরিবেশে লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে প্রথম দুই দিনে ১৪+১৪= ২৮ উইকেটের পতন দেখেছিলো ক্রিকেট বিশ্ব। ব্যাটসম্যানদের জন্য সমাধিস্থল উইকেটে দ্বিতীয় দিন শেষে ২১৮ রানে পিছিয়ে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। খেলার ধারা এবং উইকেটের চরিত্র দেখে অনেকের মনে হয়েছিল নিশ্চিত জয়ের পথে সর্ব জয়ী অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ক্রিকেট যে অপরূপা লাস্যময়ী রমণীর মত রহস্যময়ী। সকালের সূর্য দেখে দিনটি কেমন যাবে বোঝা যায় না সব সময়। যেই না গুমোট মেঘ কেটে সূর্য উঠলো পাল্টে গেলো উইকেট চরিত্র। সিম সুইং উধাও হয়ে গেলো। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়র ২১২ রানের জবাবে ১৩৮ রান করে ৭৪ রানে পিছিয়ে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৩ রানে ৭ উইকেট তুলে নিলেও ক্যাঙ্গারু বাহিনীর লেজ মুড়ে দিতে পারেনি প্রোটিয়ান্সরা। মিচেল স্টার্ক (৫৮*) আর জোশ হেজেল উড শেষ উইকেট জুটিতে অমূল্য ৫৯ রান জুড়ে দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮২। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ব সেরা বোলিংয়ের বিরুদ্ধে পরিবেশ পরিহিতি বিবেকনায় যা ছিল দুর্গম গিরি কান্তার মরু। কিন্তু নিঃসন্দেহে ইতিহাস সৃষ্টির মোক্ষম খান এসে ধরা দিলো দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে। আমি আমার দুই ছেলে শুভ্র অভ্র একসাথে ছিলাম। অভ্র আজ মেলবোর্ন থেকে সন্ধ্যায় ব্রিসবেন এছেছে। অভ্র ছোটবেলা থেকে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট সমর্থক। শুভ্র দক্ষিণ আফ্রিকার অন্ধ ভক্ত। ব্রিসবেন এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে গাড়িতে বাকরুদ্ধ ছিল দুইজন। শাসরুদ্ধ পরিবেশে দেখলাম প্রোটিন ব্যাটসম্যানদের লড়াই। দুই বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান এইডেন মারকরাম ( ১০২* ) আর অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ( ৬৫*) অবিচ্ছিন্ন ১৪৩ রানের তৃতীয় উইকেট জুটির সুবাদে ইতিহাস সৃষ্টি থেকে ৬৯ রানে পিছিয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কি মধুর টেস্ট ক্রিকেট। এমন অবস্থায়ও ১০০% নিশ্চিত বলা যাবে না জিতে গাছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জানি হাল ছাড়েনি অস্ট্রেলিয়া। তবে খেলার ভাগ্যের দোলক অনেকটাই ঝুকে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে। নিতান্তই দুর্ভাগ্য না হলে রূপকথার স্বপ্নযাত্রায় জয়ী হতে চলেছে বিশ্ব আসরে “চোকার ” খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। অঘটন ঘটনা পটিয়সী বলে বরণীয় ক্রিকেট লেখিয়েরা লিখেছেন ” তবু ক্রিকেট ভালোবাসি”।