বুমরাহ-জয়সোয়ালের নৈপুণ্যে চালকের ভূমিকায় ভারত

সালেক সুফী

বল হাতে ভারত অধিনায়ক জাসপ্রিত বুমরার স্মরণীয় নৈপুণ্য (৫/৩০) প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়া ভারতের জবাবে অস্ট্রেলিয়াকে ১০৪ রানে সীমিত রাখার পর তরুণ প্রতিভা যশস্বী জয়সোয়াল ( ৯০*) এবং কে এল রাহুলের (৬২*) অনবদ্য ব্যাটিং নৈপুণ্যে দ্বিতীয় দিন শেষে ভারত আছে চালকের ভূমিকায়। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ভারত ইতিমধ্যে ২১৮ রান এগিয়ে।

পার্থের সবুজ ঘাসে ঢাকা গতিময় উইকেট কাল ছিল দুই দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য মাইন ফিল্ড। সেই উইকটে আজ ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নৈপুণ্যে পরিণত হলো ব্যাটিং স্বর্গে। এটাই টেস্ট ক্রিকেট যেখানে সকালের সূর্য দেখে দিন চেনা যায় না। যেখানে ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টায়, মেজাজ বদলায়।

কাল যে উইকেটে ছিল গতি, অসম বাউন্স, ল্যাটারাল মুভমেন্ট আজ যখন সেই অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বমানের পেসাররা বল করলো তাদের অনায়াসে খেললো ভারতের দুই ওপেনার। জীবনে প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ার কঠিন উইকেটে তরুণ ভারতীয় প্রতিভা জয়সোয়াল ৯০ রানের জ্বলজ্বলে অপরাজিত ইনিংস খেলে বিশ্বকে জানিয়ে দিল আগামী দিনের ব্যাটিং নায়ক হতে চলেছে।

প্রথম দিনে ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়া ভারত ইনিংসের জবাবে দিন শেষে ৬৭ রান করতেই ৭ উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।  আজ লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত ব্যাটিং করে অস্ট্রেলিয়া করলো ১০৪। ব্যাবধান ৪৬ রানের। ভারত অধিনায়ক বুমরা অসাধারণ বোলিং করে ৩০ রান দিয়ে একাই অধিকার করে ৫ উইকেট। সঙ্গী এই টেস্টে অভিষিক্ত হরসিত রানা ৪৫ রানে অধিকার করে ৩ উইকেট।

লাঞ্চ বিরতির পর যখন ব্যাটিং শুরু করে ভারত দেখা যায় উইকেটের চরিত্র একেবারে পাল্টে গেছে। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফিরে যাওয়া জয়সোয়াল বিজলি চমকের মত জ্বলে ওঠে, সঙ্গী রাহুল ছিল সপ্রতিভ। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ব সেরা বোলিংকে কোণঠাসা করে ওপেনিং জুটি দিন শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থেকে ১৭২ রানের জুটি গড়ে তুলে ভারতকে নিয়ে যায় চালকের আসনে। জয়সোয়াল ৯০ এবং রাহুল ৬২ রানে অপরাজিত থাকে। ভারত সব কটি উইকেট হাতে নিয়ে এগিয়ে আছে ২১৮ রানে।  ম্যাচের বাকি তিন দিন। বলা যায় নাটকীয় কিছু না ঘটলে টেস্ট জয় ভারতের করায়ত্ত।

কে ভেবেছিল কাল প্রথম ইনিংস শেষে ভারত যখন ১৫০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। একারণে ক্রিকেট পণ্ডিতরা বলেন, গৌরবোজ্জ্বল অনিশ্চয়তার খেলা টেস্ট ক্রিকেট। এই আজ খেলার এমন অবস্থা, কাল যে আবার পাল্টাবে না কেউ কি দিব্বি দিয়ে বলতে পারবে।

তবু বলতেই হবে এযাবত দুইদিনে যতটুকু খেলা হয়েছে ভারত সুবিধাজনক ভাবেই অনেক ব্যবধানে এগিয়ে আছে। যে দলটি এই কিছু দিন আগেই দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ড দলের কাছে ধবল ধোলাই হলো তাদের এই উঁচু মার্গের ক্রিকেট প্রমাণ করে গুনে মানে ওরা কোন পর্যায়ের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × 3 =