বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩০৫তম হয়ে তার পছন্দের বিষয়ে (EEE) পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে, নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী সাদমান উদ্দিন আহমেদ। এছাড়া তিনি সিকে, রুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় সেরাদের তালিকায় স্থান লাভ করেন। কীভাবে প্রস্তুতি নিয়ে তিনি এতোগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন বা অন্যরা কীভাবে প্রস্তুতি নিলে তার মতো রেজাল্ট করতে পারবেন, সে বিষয়ে জানিয়েছেন কিছু পরামর্শ।
সাদমান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকার উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে বুয়েট ক্যাম্পাসের পাশ দিয়ে প্রতিদিন যাওয়া আসা করতাম । তখন থেকেই মনে একটা স্বপ্ন ছিল আমিও একদিন বুয়েটে পড়বো। নবম শ্রেণি থেকেই আমার পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন আর গণিতের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল। এরপর নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়ে আরো বেশি করে পড়াশোনার প্রতি জোর দেই এবং তখন থেকে প্রকৌশলী হওয়ার দিকে আমার লক্ষ্য ঠিক করি। আর বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়াটাকে একপ্রকার নিজের স্বপ্ন বানিয়ে ফেলি। যেহেতু আমার গৃহ শিক্ষক ছিলেন না তাই আমি নিজেই বরাবরই কলেজের ক্লাস এবং মূল বইয়ের উপর অনেক বেশি জোর দিতাম। কারণ বোর্ড পরীক্ষা হোক বা ভর্তি পরীক্ষা, মূল বইয়ের কোনো বিকল্প নেই।
মূল বইয়ের প্রতিটা কনসেপ্ট পরিষ্কার রাখার জন্য ইন্টারনেট, কলেজের শিক্ষক, সিনিয়র ভাইদের,আমার বন্ধুদের সাহায্য নিতাম। উচ্চ মাধ্যমিক শুরু থেকেই বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মান, পরীক্ষা পদ্ধতি আর প্রস্তুতির ধরন নিয়ে আমি ভালো ধারণা অর্জন করি,তাই বুয়েটের জন্য প্রস্তুতির বিষয়টাকে আমি পুরোপুরি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরবর্তী সময়ের জন্য ফেলে রাখিনি ৷
বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার জন্য অবশ্যই মূল বই ও প্রশ্ন ব্যাংকের সবকিছু বুঝে পড়তে হবে। বইয়ের উদাহরণ ও অনুশীলন গুলোও ভালোমতো সমাধান করতে হবে ৷ এর পাশাপাশি প্রচুর অনুশীলন করতে হবে ঘড়ির সময় ধরে, যেন ভর্তি পরীক্ষায় সহজ বা পারার মতো প্রশ্নগুলো ভুল না হয়।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি বিষয়ে সাদমান উদ্দিন বলেন, পদার্থবিজ্ঞান – এই বিষয়ে ভালো মার্ক পেতে প্রতিটি কনসেপ্ট পরিষ্কার থাকা এবং নতুন সমস্যা সমাধান করার সামর্থ্য থাকা জরুরি। এজন্য কোনো কিছু মূল বই পড়ে না বুঝতে পারলে ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে ৷ গণিত – এটাতে ভালো করার জন্য বিভিন্ন লেখকের মূল বইয়ের অংকগুলো বারবার সমাধান করতে হবে। বিভিন্ন সূত্রের বা কনসেপ্টের (যেমন জটিল সংখ্যা) বহুবিধ প্রয়োগগুলো শিখে রাখতে হবে। রসায়ন – এটাতে ভালো করতে মূল বই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বুয়েটে বরাবরই রসায়ন থেকে মুখস্তের কিছু প্রশ্ন এসে থাকে। যার জন্য মূল বই ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে ৷
ভর্তি প্রস্তুতিতে কোচিংয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি বলেন, বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেতে প্রচুর অনুশীলন প্রয়োজন (ঘড়ির সময় ধরে) তাই মূল পরীক্ষার আগে অবশ্যই অনেকগুলো নমুনা পরীক্ষা দিলে ভালো হয়। যার জন্য ভর্তিচ্ছুরা কোচিংয়ের মডেল টেস্টে অংশ নিতে পারেন।