২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত নাট্যদল ‘অনুস্বর’ তাদের নবম প্রযোজনা ‘হার্মাসিস ক্লিওপেট্রা’ মঞ্চস্থ করছে। ইতিহাসের এক আলোচ্য চরিত্র ‘ক্লিওপেট্রা’-কে উপজীব্য করে নাটকটি মঞ্চায়িত হচ্ছে। ২৩-২৬ আগস্ট পর্যন্ত বেইলি রোডের মহিলা সমিতির মঞ্চে নাটকটির টানা ৪টি শো মঞ্চস্থ হবে। রাহমান চৌধুরীর লেখা এ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ বারী।
প্রায় আড়াইশ’ বছর আগের প্রাচীন মিসরের রানী ও রহস্যময়ী নারী ক্লিওপেট্রাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে নাটকটির ঘটনাপ্রবাহ। এই অনন্য সুন্দরী ও বুদ্ধিমতীর সাম্রাজ্য সামলানো রাজনৈতিক কৌশলের সমান্তরালে উঠে এসেছে প্রেম ও ছলনার গল্প।
প্রাচীন মিসরের প্রেক্ষাপটে প্রেম ও বাস্তবতার মধ্যে একটি বেছে নেওয়ার রূঢ় বয়ান হচ্ছে ‘হার্মাসিস ক্লিওপেট্রা’। ক্লিওপেট্রাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ক্ষমতাচ্যুত করার মিশনে নামে হার্মাসিস। কিন্তু সে লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারে না সে। ক্লিওপেট্রার সম্মোহনী সৌন্দর্যের টানে নিজের উদ্দেশ্য থেকে সরে আসতে থাকে। হত্যার বদলে ক্লিওপেট্রার প্রেমের জালে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।
এদিকে ক্লিওপেট্রার প্রধান দাসী চারমিওন স্বপ্ন দেখতে থাকে ক্লিওপেট্রাকে হত্যা করা হলে সেই হবে মিসরের সম্রাজ্ঞী। কারণ ভেতরে ভেতরে হার্মাসিসের সঙ্গে চারমিওনেরও ভালোবাসার সম্পর্ক। কিন্তু হার্মাসিসকে লক্ষ্যচ্যুত হতে দেখে ঈর্ষাকাতর হয়ে ক্লিওপেট্রার কাছে তাকে হত্যা করার সব ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দেয় চারমিওন। এর ফলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়। চারমিওনের কথা বিশ্বাস করে ক্লিওপেট্রা হার্মাসিসকে গ্রেপ্তার করে।
নাট্যকার রাহমান চৌধুরী বলেন, ‘নাটকটির মূল চরিত্র হচ্ছে ক্লিওপেট্রা এবং হার্মাসিস। ক্লিওপেট্রা ইতিহাসের চরিত্র হলেও হার্মাসিস ইতিহাসের চরিত্র নয়। ক্লিওপেট্রার সঙ্গে হার্মাসিসের সম্পর্কের মাঝে জড়িয়ে আছে গ্রিক টলেমী বংশের হাত থেকে মিসরের স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি। কারণ টলেমীদের পক্ষ থেকে হার্মাসিস আবির্ভূত হয় মিসরে। তাই এই নাটকে ইতিহাসের চেয়ে বড় সত্য হয়ে ধরা দিয়েছে প্রতিটি জাতির স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্ক্ষা। সেখানে নতুন রূপে পল্লবিত হয় নর-নারীর প্রেম। প্রতিপক্ষ হার্মাসিসের সঙ্গে ক্লিওপেট্রার প্রেমে জড়িয়ে পড়া নাটকে যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা। সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক টানাপড়েন।’
নাটকে ক্লিওপেট্রার চরিত্রে অভিনয় করছেন ফৌজিয়া করিম অনু। তার অভিনয় দর্শকদের দৃষ্টি কাড়তে সমর্থ হয়েছে। হার্মাসিস চরিত্র রূপায়ন করছেন এস আর সম্পদ। তা ছাড়া অন্য অভিনয়শিল্পীরা হলেন— মেরিনা মিতু, যাজ্ঞোসিনী মৌ, সাইফ সুমন, মোহাম্মদ বারী, প্রশান্ত হালদার, মাহফুজ সুমন, পিয়ার মোহাম্মদ, নুরুজ্জামান সরকার, আরিফুর রহমান প্রমুখ।
সাকিল সিদ্ধার্থের মঞ্চ সজ্জায় সংগীত পরিকল্পনা করেছেন ইউসুফ হাসান অর্ক। অম্লান বিশ্বাসের আলোক পরিকল্পনায় কোরিওগ্রাফি করেছেন অনিকেত পাল বাবু। পোশাক পরিকল্পনায় তামান্না হক সিগমা।
রাইজিংবিডি