বার্ধক্যজনিত কারণে এখন বাসায় সময় কাটে একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা মাসুদ আলী খানের। খুব প্রয়োজন না হলে বাসা থেকে বের হন না। বের হলেও হুইলচেয়ার ব্যবহার করেন। অনেক দিন হলো তাই অভিনয়ে নেই তিনি। যদিও ৯৪ বছর বয়সী এই অভিনেতার মন পড়ে রয় অভিনয়ে। নিজের সঙ্গে যায় এমন চরিত্র হলে অভিনয়টা করতে চান। ঘরে বসেই খোঁজখবর নেন সহশিল্পীদের। ২৯ জানুয়ারি বিকেলে তাঁকে চমকে দিয়ে তাঁর গ্রিন রোডের বাসায় হাজির হলেন কিংবদন্তি পাঁচ শিল্পী। অভিনেতাকে দেখার জন্য, তাঁর সঙ্গে কিছুটা সময় গল্প আর আড্ডা দিতে একত্র হয়েছিলেন অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, অভিনেতা আবুল হায়াত, আমীরুল হক চৌধুরী, খায়রুল আলম সবুজ ও দিলারা জামান। আসাদুজ্জামান নূরের আহ্বানে এবং সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এই আড্ডার।
বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে প্রাণবন্ত এই আড্ডা। দীর্ঘদিন পর শিল্পীদের দেখা হয় একে অন্যের সঙ্গে। পুরোটা সময় দারুণ আনন্দে কাটিয়েছেন তাঁরা। বিশেষ করে মাসুদ আলী খানকে কাছে পেয়ে সবাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। পুরোনো দিনের নানা গল্পে মগ্ন হয়ে ওঠেন।
আড্ডার একসময় আসাদুজ্জামান নূরের আহ্বানে গান গেয়ে শোনান শিল্পী রাইসা ও তাঁর ছোট বোন প্রতিভা। আড্ডার শেষ পর্যায়ে প্রয়াস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদ্যুৎ কুমার তালুকদারের সৌজন্যে উপহার তুলে দেওয়া হয় অভিনেতা মাসুদ আলী খানের হাতে। মাসুদ আলী বলেন, ‘আমি তোমাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ যে তোমরা সবাই আমাকে দেখতে এসেছ। এই ৯৪ বছর বয়সে আরও বহুদিন বাঁচার সাহস পেলাম। সবার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম।’
আড্ডা শেষে অভিনেত্রী দিলারা জামান বলেন, ‘জীবনের অনন্য সাধারণ কিছু মুহূর্ত পার করলাম। আগামী প্রজন্মের জন্য উদাহরণ রেখে গেলাম যে আমরা এই বয়সেও বিচ্ছিন্ন নই। সবার কাছে দোয়া চাই।’আবুল হায়াত বলেন, ‘আমার মনে হলো এটাই একটা বড় উৎসব। এ ধরনের উৎসব জীবনের এই পর্যায়ে এসে ভীষণ প্রয়োজন। বিশেষ ধন্যবাদ নূর ও অভিকে।’
আমীরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মাসুদ ভাইকে দেখতে আসার খুব ইচ্ছে ছিল, আমার সেই ইচ্ছেটা পূরণ হলো।’আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘একসঙ্গে হওয়ার ইচ্ছেটা অনেক দিনের। তাই অভির এই উদ্যোগের কথা শুনে আমিও এগিয়ে এলাম আগ্রহ নিয়ে। আশা করছি মাঝেমধ্যেই এ ধরনের চমৎকার আড্ডার আয়োজন করা যাবে।’
খায়রুল আলম সবুজ বলেন, ‘অনেক দিন পর আমরা একসঙ্গে হলাম। ভালো সময় কাটালাম। এই বয়সে এমন নির্ভেজাল একটি আড্ডা মনকে ফুরফুরে করে দেয়। আমি চাই এমন আয়োজন নিয়মিত হোক।’