মিনা কার্টুন জনক রামমোহনের প্রয়াণ দিবস আজ

জনপ্রিয় কার্টুন ‘মীনা’র রূপদানকারী রামমোহন ৮৮ বছর বয়সে ১১ অক্টোবর ২০১৯ মারা যান। রামমোহনকে বলা হয় ‘ফাদার অফ ইন্ডিয়ান অ্যানিমেশন’। ইন্ডিয়ার অ্যানিমেশন ইন্ডাস্ট্রির যাত্রা একরকম তার হাত ধরেই শুরু। বাংলাদেশের মানুষ তাকে চেনেন তার সৃষ্টি মীনা চরিত্রটি দিয়ে। রাম মোহন ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে ‘মীনা’ কার্টুনের ষোলোটি পর্ব পরিচালনা করেছেন। এই সিরিজের জন্য ১৯৯৬ সালে কমিউনিকেশন আর্টস গিল্ডের দেওয়া হল অব ফেইম অ্যাওয়ার্ডে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন তিনি।

১৯৯০-এর দশকে উপমহাদেশের মেয়েদের অধিকার সুংসহত করার লক্ষ্যে মীনা কার্টুন প্রচারের উদ্যোগ নেয় ইউনিসেফ। সে সময় সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি মুখাবয়ব সৃষ্টির জন্য তারা দ্বারস্থ হয় রামমোহনের। পরে তার রং-তুলিতেই ফুটে ওঠে মীনা কার্টুনের সবার পছন্দের রূপটি। ফিলিপাইনের ম্যানিলাতে অবস্থিত হান্না-বারবারা স্টুডিওতেও মীনার প্রথম দিককার বেশ কিছু পর্ব নির্মিত হয়। পরে ভারতের রাম মোহন স্টুডিওতে মীনার বাকি পর্বগুলো নির্মাণ করা হয়। সিরিজগুলো পরিচালনা করেছিলেন রাম মোহন নিজেই। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মেয়েশিশুদের যেসব সমস্যা রয়েছে, তার সুন্দর সমাধান এই কার্টুন সিরিজগুলোর মাধ্যমে অত্যন্ত সহজভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

১৯৫৬ সালে ফিল্মস ডিভিশন অব ইন্ডিয়ার কার্টুন ফিল্মস ইউনিটে কর্মজীবন শুরু করেন রামমোহন। ১৯৬৮ সালে তিনি চলচ্চিত্র বিভাগ থেকে সরে দাঁড়ান। কাজ শুরু করেন প্রসাদ প্রোডাকশনের অ্যানিমেশন বিভাগের প্রধান হিসেবে। ১৯৭২ সালে নিজের প্রতিষ্ঠান রামমোহন বায়োগ্রাফিক্স চালু করেন, যা বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিল। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন মুম্বাই-ভিত্তিক অ্যানিমেশন কোম্পানি গ্রাফিটি মাল্টিমিডিয়া। তিনি ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার এবং চেয়ারম্যান। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন গ্রাফিটি স্কুল অব অ্যানিমেশন।

জাপানের ইউগো সাকোর সহযোগিতায় যৌথভাবে জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড ছবি ‘রামায়ণ: দ্য লিজেন্ড প্রিন্স রামা’ পরিচালনা করেছিলেন রামমোহন। সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’, মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ ইত্যাদি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

fourteen − one =