‘মুখ ও মুখোশ’র স্ক্রিপ্ট ফিল্ম আর্কাইভে

দেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’র দুর্লভ স্ক্রিপ্টের কপি তুলে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের জাদুঘরে। বুধবার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের কার্যালয়ে ‘মুখ ও মুখোশ’র অন্যতম প্রযোজক নুরুজ্জামানের মেয়ে ড. জেসমিন জামান সিনেমাটির দুর্লভ স্ক্রিপ্ট, স্থিরচিত্র ও গান রেকর্ডিংয়ের পিয়ানো (১৮৯২ সালে তৈরিকৃত) ফিল্ম আর্কাইভে আনুষ্ঠানিকভাবে দান করেন।

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীরের কাছে ‘মুখ ও মুখোশ’র এসব দুর্লভ জিনিস তুলে দেওয়া হয়। সেসময় আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের পরিচালক ড. মো. মোফাকখারুল ইকবালসহ অনেকে।

হস্তান্তর শেষে নুরুজ্জামানের মেয়ে ড. জেসমিন জামান  বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর এসব জিনিস আমরা খুব যত্ন করে ঢাকার বাসায় সংরক্ষণে রাখি। ফিল্ম আর্কাইভ থেকে যখন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলো, তখন মনে হলো, এসব জাদুঘরে রাখা হলে সবাই দেখতে পারবেন, বাবার সম্পর্কে জানতে পারবেন। এরপরই ফিল্ম আর্কাইভে এসব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ’

‘মুখ ও মুখোশ’ মুক্তি পায় ১৯৫৬ সালের ৩ আগস্ট। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আব্দুল জব্বার খান। ইকবাল ফিল্মসের প্রযোজনায় এই সিনেমাটি নির্মিত হয়। আর এই ইকবাল ফিল্মসের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন নুরুজ্জামান। তিনি ১৯৭৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর মারা যান।

নুরুজ্জামানের কন্যা আরো জানান, ‘মুখ ও মুখোশ’র মূল স্ক্রিপ্টটি সিনেমা মুক্তির পর পরিচালক আব্দুল জব্বার খান নুরুজ্জামানকে দিয়ে দেন। এছাড়াও নুরুজ্জামানের কাছে ‘মুখ ও মুখোশ’র মহরতের দুর্লভ স্থিরচিত্র এবং সিনেমাটিতে সমর দাসের সুর করা পিয়ানো যন্ত্রটিও ছিল। পিয়ানোটি নুরুজ্জামান ক্রয় করেন নারায়ণগঞ্জের ঢাকেশ্বরী কটন মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিটিশ নাগরিকের কাছ থেকে।

পিয়ানোটি লন্ডনের জে অ্যান্ড জে হপকিনসনের ব্র্যান্ডের। যা নির্মিত হয়েছে ১৮৮১ থেকে ১৮৯২ সালের মধ্যে। নুরুজ্জামান একজন সঙ্গীত অনুরাগী ছিলেন এবং পিয়ানোটি নিজেই বাজাতেন। পেশায় ছিলেন তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার ও কন্ট্রাক্টর।  ১৯৭৫ সালের নুরুজ্জামান মৃত্যবরণ করলে এই দুর্লভ জিনিসগুলো তার স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা আমেরিকা প্রবাসী ডা. জেসমিন জামান সিদ্ধেশ্বরীর বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখেন।

ডা. জেসমিন জামান দাবি করেন, তার বাবা ‘মুখ ও মুখোশ’র অন্যতম প্রযোজক হলেও কোথাও তার নামটি প্রযোজক হিসেবে পাওয়া যায় না। তার বাবা যে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অংশ, তা যেন দর্শক এবং তরুণ প্রজন্ম জানতে পারেন, সেটাই তার পরিবারের পক্ষ থেকে চাওয়া।

বাংলানিউজ

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × four =