মৃণালরূপী চঞ্চল দেখা দেবেন ১৫ আগস্ট ‘পদাতিক’-এ

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘পদাতিক’ নামের সিনেমা বানিয়েছেন সৃজিত মুখার্জি। এ বায়োপিকে মৃণালের চরিত্রে আছেন বাংলাদেশের চঞ্চল চৌধুরী। টালিউডে এটিই চঞ্চলের প্রথম কাজ। পদাতিকের লুক থেকে শুরু করে টিজার—সবখানে মৃণালরূপে প্রশংসিত হয়েছেন চঞ্চল। সবার অপেক্ষা ছিল, কবে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। গতকাল জানা গেল মুক্তির তারিখ।

নতুন পোস্টার প্রকাশ করে পদাতিকের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। নতুন পোস্টারে মৃণাল সেনের যুবক ও বয়স্ক—দুই চরিত্রে হাজির হয়েছেন চঞ্চল। আর নির্মাতার কিশোর বয়সের চরিত্রে দেখা গেছে কোরক সামন্তকে।

এর আগে গত ১৪ মে প্রকাশ করা হয় পদাতিক সিনেমার দেড় মিনিটের টিজার। এতে প্রথমেই উঠে এসেছে বাইশে শ্রাবণের ঘটনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ যাত্রার মিছিলে শামিল হতে ওই দিন কলকাতার রাস্তায় নেমে এসেছিল লাখো জনতা। সেই ভিড়ের মধ্যে অসহায় এক লোক, তার শিশুর মরদেহ নিয়ে এসেছে দাহ করতে। কিন্তু এত মানুষের মধ্যে সে সুযোগই পাচ্ছে না শ্মশান পর্যন্ত পৌঁছানোর। একপর্যায়ে মানুষের ভিড়ে লোকটা হারিয়ে ফেলে নিজের সন্তানের লাশ। দূর থেকে অসহায় চোখে এ দৃশ্য দেখেন তরুণ মৃণাল। নির্মাতা তাঁর বিভিন্ন লেখায় এ ঘটনার কথা বলেছেন। সেটিই উঠে এসেছে পদাতিকের টিজারের প্রথমে।

এরপর দেখানো হয় কখনো মৃণাল সম্পাদনার টেবিলে, কখনো নৌকায় বসে লেখায় নিমগ্ন, ক্যামেরার পেছনে তাঁর চিন্তিত মুখ, দু-একটা শুটিংয়ের দৃশ্য, কলকাতার রাস্তায় প্রতিবাদী মানুষের জমায়েত, উত্তাল রাজনীতি; এসব পেরিয়ে মৃণালকে দেখা যায় বিদেশের চলচ্চিত্র উৎসবে। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও ধরা পড়েছে। টিজার শেষ হয়েছে সেই ঐতিহাসিক দৃশ্য দিয়ে, যেখানে মৃণাল ফাঁকা রাস্তায় প্রায় শুয়ে পড়েছেন। পেছনে তাকিয়ে এক হাত উঁচু করে বলেন, ‘কাট’।

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমার জীবনে কোনো চরিত্রের জন্য এত স্ট্রাগল করতে হয়নি। কারণ, আমি যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করি বা যেভাবে চরিত্র হয়ে উঠি; সেগুলো থেকে তো মৃণাল সেনের চরিত্র আলাদা। ওই মানুষটিকে হুবহু ধারণ করা তো সম্ভব নয়। আর দেখতে এক রকম হলেও তাতে কিছু যায় আসে না। হুবহু দেখতে অনেক মানুষ আছে। কিন্তু ভেতরের যে মৃণাল সেন, তাঁর যে ব্যক্তিত্ব; সেটা যদি আমি ফুটিয়ে তুলতে পারি, সেটাই সাফল্য। আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক একটা দুঃসময় চলছিল তখন। শুটিংয়ের আগে আগে আমার বাবা মারা যান। সেই শোক বুকে চেপে রেখে কাজটি করেছি। যদি কিছু পেরে থাকি, সেটার কৃতিত্ব পরিচালক সৃজিত মুখার্জির।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × 5 =