অধিনায়ক সিকান্দার রাজা এবং ওপেনার ব্রায়ান বেনেটের ব্যাটিং নৈপুন্যে বাংলাদেশের কাছে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো সফরকারী জিম্বাবুয়ে। আজ সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ে ৮ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। উইকেট বিবেচনায় সংক্ষিপ্ত ভার্সনে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই সবচেয়ে বড় জয় জিম্বাবুয়ের। সেই সাথে ২০২২ সালের আগস্টের পর টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল জিম্বাবুয়ে। রাজা অপরাজিত ৭২ এবং বেনেট ৭০ রান করেন। শেষ ম্যাচ হারলেও ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।
সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলের পক্ষে ৪৪ বলে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন। জবাবে রাজা ও বেনেটের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৯ বল বাকী রেখে সিরিজে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় জিম্বাবুয়ে।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৩৩ রান করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে পেসার ব্লেসিং মুজারাবানির বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন চলতি সিরিজে ২টি হাফ-সেঞ্চুরি করা ওপেনার তানজিদ হাসান।
পরের ওভারে স্পিনার ব্রায়ান বেনেটের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলে ১টি ছক্কায় ৭ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার।
দলীয় ৯ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেই চাপ আরও বাড়ে পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে তাওহিদ হৃদয়ের বিদায়ে। বেনেটের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন ১ রান করা হৃদয়।
১৫ রানে ৩ উইকেট পতনের পর বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদুল্লাহ। উইকেটে সেট হয়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন দু’জনে। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে ১০ ওভারে শেষে ৭০ রান পায় বাংলাদেশ।
১২তম ওভারে নাজমুল-মাহমুদুল্লাহ জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। সুইপ করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ বলে ৩৬ রান করা নাজমুল। চতুর্থ উইকেটে ৪৫ বলে ৬৯ রান যোগ করেন নাজমুল-মাহমুদুল্লাহ।
দলীয় ৮৪ রানে অধিনায়কের বিদায়ের পর সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রেখে ৩৬ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদুল্লাহ।
মাহমুদুল্লাহর হাফ-সেঞ্চুরির পর বিদায় নেন সাকিব। লুক জঙ্গিকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে জোনাথন ক্যাম্পবেলের দারুন ক্যাচে সাজঘরে ফিরেন ১টি ছক্কায় ১৭ বলে ২১ রান করা সাকিব। মাহমুদুল্লাহ-সাকিব ৩৩ বলে ৩৯ রানের জুটি গড়েন।
সাকিব ফেরার কিছুক্ষণ পর মুজারাবানির করা ইনিংসের ১৮তম ওভারের শেষ বলে রাজাকে ক্যাচ দিয়ে থামেন মাহমুদুল্লাহ। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৪ বলে ৫৪ রান করেন তিনি।
এরপর ইনিংসের শেষ ১২ বলে ঝড়ো গতিতে অবিচ্ছিন্ন ২৯ রান যোগ করে বাংলাদেশকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন জাকের আলি ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে টাইগাররা। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১১ বলে অপরাজিত ২৪ রান করেন জাকের। ৪ বলে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফুদ্দিন।
জিম্বাবুয়ের মুজারাবানি-বেনেট ২টি করে উইকেট নেন।
হোয়াইওয়াশ এড়াতে ১৫৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওপেনার বেনেটের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৪ ওভারে ৩৮ রানের সূচনা পায় জিম্বাবুয়ে। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে আরেক ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে শিকার করে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন সাকিব। ৭ বলে মাত্র ১ রান করেন মারুমানি।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন বেনেট ও তিন নম্বরে নামা রাজা। ১২তম ওভারে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৬ বল খেলা বেনেট। তার অর্ধশতকে ১৪তম ওভারে ১শতে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে।
১৬তম ওভারে সাইফুদ্দিনের প্রথম বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন দিয়ে থামার আগে ৫টি করে চার-ছক্কায় ৪৯ বলে ৭০ রান করেন বেনেট। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৬ বলে রাজা-বেনেট ৭৫ রান যোগ করেন ।
বেনেট ফেরার পর ৪১ বলে টি-টোয়েন্টিতে ১৪তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন রাজা। তৃতীয় উইকেটে জোনাথন ক্যাম্পবেলকে নিয়ে ২০ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৫ রানের জুটি গড়ে জিম্বাবুয়ের জয় নিশ্চিত করেন রাজা । ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় রাজা ৪৬ বলে অপরাজিত ৭২ এবং ক্যাম্পবেল অপরাজিত ৮ রান করেন। বাংলাদেশের সাকিব ও সাইফুদ্দিন ১টি করে উইকেট নেন।
বাসস