রাফায় ইসরায়েলি হামলায় তাঁবুতে আগুন ধরে প্রাণহানির ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড়

গাজা উপত্যকায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলা থেকে রেহাই পেতে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনী দক্ষিণের রাফা শহরের একটি তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেখানে ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে তাঁবুতে বসবাসকারীদের মধ্যে ৪৫ জন আগুনে পুড়ে মারা যায়।

ইসলায়েলি বাহিনী রাফায় রোববার হামলা চালানোর পর কয়েকটি তাঁবুতে আগুন ধরে যায়। এতে ৪৫ জন নিহত হয়। ইসরায়েলের এই হামলার সমালোচনা ও  নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, তারা রোববার সন্ধ্যায় দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা এলাকায় হামলা চালিয়ে সিনিয়র দুই হামাস কর্মীকে হত্যা করেছে।

কিন্তু এই হামলার কারণে সেখানে আগুন ধরে যায়। এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনী ও বেশকিছু আরব দেশ একে হত্যাকা- হিসেবে উল্লেখ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদের এক মুখপাত্র বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় ইসরায়েলকে অবশ্যই সম্ভাব্য যে কোন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।

ইসরায়েল বলেছে, তারা এই ঘটনার তদন্ত করছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছেন, ‘গাজায় কোন নিরাপদ জায়গা নেই।’ এই ভয়াবহতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

এদিকে মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এই হামলার বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।

এছাড়া যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো কাতার ও মিসরসহ আশেপাশের বিভিন্ন দেশ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

মিসর বলেছে, প্রতিরক্ষাহীন বেসামরিক নাগরিকদের উদ্দেশ্য করে হামলা চালানোর লক্ষ্য হলো গাজা উপত্যকায় মৃত্যু ও ধ্বংসের সুযোগ বিস্তৃত করে একে বসবাসের অনুপযোগী করে তোলা।

জর্ডান ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বর্ণনা করেছে। সৌদি আরব অব্যাহত এই হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িফ এরদোয়ান খুনিদের জবাবদিহির আওতায় আনার অঙ্গীকার করেছেন।

কাতার একে আর্ন্তজাতিক আইনের বিপদজনক লংঘন হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এদিকে মঙ্গলবার স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের ১৪০টিরও বেশি সদস্য রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এদের মধ্যে পশ্চিমা বিশ্বের দেশ খুব কমই আছে।

ইসরায়েল এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে সোমবার মাদ্রিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ ঘোষণা করে ১জুন থেকে ফিলিস্তিনীদের সেবা দেয়া বন্ধ করতে জেরুজালেমে তাদের কনুস্যলেটকে নির্দেশ দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনী সংগঠন হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এই সময়ে তারা প্রায় এক হাজার ১৭০ ইসরায়েলীকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে। এখনও হামাসের কাছে ১২১ জন জিম্মি আটক রয়েছে।

এদিকে ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে যা এখনও চলছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ৩৬ হাজার ৫০ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

12 − one =