রিয়ালকে বিদায় করে সেমিফাইনালে আর্সেনাল

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আর্সেনাল। বুধবার কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আর্সেনাল ২-১ গোলে জয়ী হয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে এগিয়ে শেষ চারের টিকেট পায় ইংলিশ জায়ান্টরা।

গত সপ্তাহে ঘরের মাঠে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে জয়ী হয়ে সেমিফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল আর্সেনাল। ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মত শেষ চারের টিকেট পেয়েছে গানার্সরা। শেষ চারে তাদের প্রতিপক্ষ পিএসজি।

প্রথমার্ধে পেনাল্টি মিস করেন বুকায়ো সাকা। কিন্তু সাকার গোলেই ৬৫ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্সেনাল। ভিনিসিয়াস জুনিয়র দুই মিনিটের মধ্যে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। স্টপেজ টাইমে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির গোলে দ্বিতীয় লেগেও আর্সেনালের জয় নিশ্চিত হয়।

প্রথম লেগে দুটি দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোল করা ডিক্লান রাইস বলেন, ‘আমরা জানতাম ম্যাচটি মোটেই সহজ হবে না। কিন্তু প্রথম লেগের তিন গোল আমাদের এগিয়ে রেখেছিল। আজকের রাতটা আমাদের ক্লাবের জন্য সত্যিই বিশেষ একটা রাত। ক্লাবের জন্য এটি ঐতিহাসিক এক রাত, আমরা এই প্রতিযোগিতা জিততে চাই।’

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা এখনো পর্যন্ত জিততে পারেনি আর্সেনাল।

গত মৌসুম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগার ডাবল শিরোপা জয়ী রিয়ালের সাথে গতকালকের দলটিকে কোনভাবেই মেলানো যায়নি। আর্সেনালের কঠিন রক্ষনভাগের সামনে ভিনিসিয়াস, এমবাপ্পে, রডরিগো, বেলিংহামরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। প্রিমিয়ার লিগের দলটি নিজেদের নার্ভ ধরে রেখে তৃতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে।

রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়া বলেছেন, যোগ্য দলের বিপক্ষেই আমরা পরাজিত হয়েছি। এটা আমাদের মেনে নিতেই হবে।

কিলিয়াম এমবাপ্পে শুরুতেই রিয়ালকে এগিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটি স্পষ্ট অফসাইড ছিল। সাকাকে ফাউলের অপরাধে ডেভিড আলাবা হলুদ কার্ড পান। লন্ডনে মাদ্রিদ যেভাবে আত্মসমর্পন করেছে তার থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা শুরু থেকেই করেছে। রাউল আসেনসিও ফরোয়ার্ড মিকেল মেরিনোকে ফাউলের অপরাধে আর্সেনালকে পেনাল্টি উপহার দেয় ফরাসি রেফারি ফ্রাঙ্কোয়িস লেটেক্সিয়ার। ১৩ মিনিটে সাকার পেনাল্টি সেভ করেন কুর্তোয়া। এই ঘটনায় উজ্জীবিত রিয়াল কিছুক্ষন পরেই পেনাল্টি উপহার পায়। ডি বক্সের ভিতর একটি ক্রস থেকে ভিনিকে আটকাতে গিয়ে রাইস তাকে ফেলে দেন। কিন্তু ভিএআর দীর্ঘ পরীক্ষার পর রেফারিকে সিদ্ধান্ত জানাতে বলে। রেফারি মনিটরে দেখে জানিয়ে দেয় অফসাইডও হয়নি, পেনাল্টি দেবার মত ফাউলও হয়নি।

প্রথমার্ধ গোলশুন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। প্রায় এক দশক আগে আর্সেনালে যোগ দেয়া ‘ওয়ান্ডারকিড’ মার্টিন ওডেগার্ডই দলের প্রথম গোলের মূল যোগানদাতা ছিলেন। নরওয়েজিয়ান এই মিডফিল্ডারের পাস থেকে মেরিনোর এ্যাসিস্টে সাকা ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়ান। এই গোলে চার গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় আর্সেনাল। তখনই কার্যত মাদ্রিদের ভাগ্য লেখা হয়ে যায়। ৬৭ মিনিটে ডিফেন্ডার উইলিয়াম সালিবার কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে পজিশনে না থাকা গোলরক্ষক রায়াকে পরাস্ত করেন ভিনিসিয়াস। ম্যাচ শেষের ১৫ মিনিট আগে গোঁড়ালির ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন এমবাপ্পে। ইনজুরি টাইমে মেরিনোর এ্যাসিস্টে মার্টিনেলি আরো এক গোল দিলে দাপুটে জয়ে আর্সেনালের শেষ চার নিশ্চিত হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

19 − 16 =