রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে গুজরাটকে হারিয়ে পঞ্চম শিরোপা চেন্নাইয়ের

প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ২১৪ রানের পাহাড় গড়ে গুজরাট টাইটান্স। বৃষ্টি আইনে ১৫ ওভারে ১৭১ রানের টার্গেট পায় চেন্নাই সুপার কিংস। ম্যাচের শেষ দুই বলে ১০ রানের প্রয়োজনে ১টি করে চার-ছক্কায় চেন্নাইকে অবিশ্বাস্য জয়ের স্বাদ দেন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা। এমন রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে গতবারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাটকে বৃষ্টি আইনে ৫ উইকেটে হারিয়ে পঞ্চমবারের মত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) শিরোপা জিতলো মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সমান সর্বোচ্চ পাঁচবার আইপিএলের শিরোপা জয়ের মালিক এখন চেন্নাই।

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রিজার্ভ ডে’তে গড়ানো গতরাতের ফাইনালে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে চেন্নাই। ব্যাট হাতে নেমে গুজরাটকে ৭ ওভারে ৬৭ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা ও সুবমান গিল। জাদেজার বলে ধোনির দুর্দান্ত স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ২০ বলে ৭টি চারে ৩৯ রান করে থামেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা গিল। এ নিয়ে আইপিএলে নিজের ২৫০তম ম্যাচে  ৩০০তম ডিসমিসাল করেন ধোনি।

গিল ফেরার পর তিন নম্বরে নামা সাই সুদর্শনকে নিয়ে গুজরাটের রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়েছেন ঋদ্ধি। দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ বলে ৬৪ রান যোগ করেন তারা। এই জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে পেসার দীপক চাহারের বলে আউট হন ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৪ রান করা ঋদ্ধি।

১৪তম ওভারে দলীয় ১৩১ রানে ঋদ্ধি ফিরলেও গুজরাটের রান তোলায় ভাটা পড়েনি। ব্যাট হাতে চেন্নাইয়ের বোলারদের শাসন করেছেন সুদর্শন। তার চার-ছক্কায় তোপে ১৯তম ওভারেই ২শ রান পায় গুজরাট। ঐ সময় ৮৪ রানে অপরাজিত ছিলেন সুদর্শন। পেসার মাথিশা পাথিরানার করা ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম দুই ছক্কা মেরে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগান সুদর্শন। কিন্তু তৃতীয় বলে আউট হলে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন । ৮টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৪৭ বলে ৯৬ রান করেন সুদর্শন। শেষ দিকে অধিনায়ক হার্ডিক পান্ডিয়ার ১২ বলে অপরাজিত ২১ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২১৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় গুজরাট। চেন্নাইয়ের পাথিরানা ৪৪ রানে ২ উইকেট নেন।

এরপর চেন্নাই ইনিংসে ৩ বল হবার পর বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। প্রায় আড়াই ঘন্টা খেলা বন্ধ থাকলে বৃষ্টি আইনে ১৫ ওভারে ১৭১ রানের নতুন টার্গেট পায় চেন্নাই। ৩৯ বল খেলে ৭৪ রানের সূচনা করেন চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার ঋুতুরাজ গায়কোয়াড় ও নিউজিল্যান্ডের ডেভন কনওয়ে। সপ্তম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমনে এসে চেন্নাইয়ের দুই ওপেনারকে বিদায় দেন গুজরাটের আফগানিস্তানী স্পিনার নূর আহমেদ। গায়কোয়াড় ১৬ বলে ২৬ এবং কনওয়ে ২৫ বলে ৪৭ রান করেন।

৭৮ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়লেও আজিঙ্কা রাহানের মারমুখী ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের থাকে চেন্নাই। ২টি করে চার-ছক্কায় ১৩ বলে ২৭ রান করে আউট হন রাহানে। উইকেটে এসেই রাহানের পথ অনুসরণ করে দ্রুত ব্যাট চালিয়ে ৮ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৯ তুলে ফিরেন আইপিএলে শেষ ম্যাচ খেলতে নামা আম্বাতি রাইদু। এরপর ক্রিজে এসে প্রথম বলেই ক্যাচ আউট হন অধিনায়ক ধোনি। রাহানে-রাইদু ও ধোনির উইকেট নেন পেসার মোহিত শর্মা।

শেষ দুই ওভারে ২২ রানের প্রয়োজন পড়ে চেন্নাইয়ের। ১৪তম ওভারে ৮ রান তুলতে পায় চেন্নাই। মোহিতের করা শেষ ওভারে ১৩ রানের দরকারে প্রথম চার বলে মাত্র ৩ রান পায় চেন্নাই। এতে শেষ দুই বলে ১০ রানের সমীকরণ পায় তারা। পঞ্চম বলে লং-অন দিয়ে ছক্কা মারেন জাদেজা। শেষ বলে ৪ রানের দরকারে শর্ট ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি আদায় করে জয় নিশ্চিত করেন জাদেজা। ৬ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন জাদেজা। ২টি ছক্কায় ২১ বলে অনবদ্য ৩২ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন শিবম দুবে। গুজরাটের মোহিত ৩টি ও নূর ২টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন কনওয়ে এবং টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন গিল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five + seventeen =