হতে পারত ক্যাচ, হয়ে গেল সেঞ্চুরি। নিগার সুলতানার শতরানের জন্য তখন বাকি চার রান। শেষ ওভারে বলও বাকি চারটি। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে থাইল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনারকে উড়িয়ে মারলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মিড উইকেটে ফিল্ডার ছুটে এসে বলের নিচে গিয়েও পারলেন না হাতে জমাতে। উল্টো হয়ে গেল বাউন্ডারি। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে নিগার পৌঁছে গেলেন রেকর্ডের ঠিকানায়। এভাবেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে ঝড়ো সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা। বিডিনিউজ২৪.কম
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে ঝড়ো সেঞ্চুরি উপহার দিলেন নিগার। লাহোরে বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন তিনি ৮০ বলে ১০১ রানের ইনিংস।
যদিও সেঞ্চুরি পথে ছিলেন আগে শারমিন আক্তার। ২৮তম ওভারে যখন ক্রিজে যান নিগার, শারমিনের রান তখন ফিফটির কাছাকাছি।
৪০ ওভার শেষে শারমিনের রান ছিল ৭৪, নিগারের ৪৫। তবে পরে আগ্রাসনের পথে ছুটে শারমিনকে পেরিয়ে শতরানের সীমানায় পা রাখেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শারমিন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১২৬ বলে ৯৪ রান করে।
তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটিতে রান আসে ১৫২। ওয়ানডেতে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের প্রথম দেড়শ রানের জুটি এটি।
এই দুজনের আগে এ দিন ফিফটি করেন অভিজ্ঞ ওপেনার ফারজানা হকও। এই প্রথম একই ওয়ানডেতে পঞ্চাশ ছুঁতে পারলেন বাংলাদেশের তিন ব্যাটার।
পরপর দুই জুটিতে শতরান বাংলাদেশের এই প্রথম। একই ওয়ানডেতে শতরানের দুটি জুটির প্রথম নজিরও এটি।
লাহোর টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ চতুর্থ ওভারে হারায় ওপেনার ইশমা তানজিমকে (৮)। সেই ধাক্কা সামলে দল ভালো ভিত গড়ে দেন ফারজানা ও শারমিন।
ফারজানার ফিফটি আসে ৭৪ বলে। দুটি ওয়ানডে সেঞ্চুরি করা ব্যাটার এবার আউট হয়ে যান ৮২ বলে ৫৩ রান করে।
গত কিছুদিন ধরেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শারমিন শুরু থেকে আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন। নিগার যখন উইকেটে সঙ্গী হন, শারমিন তখন খেলছেন ৪৬ রানে। একটু পরই বাউন্ডারিতে ফিফটি পেরিয়ে যান তিনি ৭৪ রানে।
ফিফটির পর তার রানের গতি একটু বাড়ে। তবে একের পর এক বাউন্ডারিতে দ্রুততায় এগোতে থাকেন নিগার। ফিফটিতে পা রাখেন তিনি ৪৫ বলে। এরপর অধিনায়কের ব্যাটের ধার বাড়ে আরও। ৪৭তম ওভারে দুটি বাউন্ডারিতে তিনি পেরিয়ে যান শারমিনের রান। পরের দুই ওভারেও তার ব্যাট থেকে আসে দুটি বাউন্ডারি। এরপর শেষ ওভারের ওই বাউন্ডারিতে পূর্ণ হয় সেঞ্চুরি।
এতদিন বাংলাদেশের একমাত্র ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন ফারজানা। দুটি সেঞ্চুরি তার। এখন তার পাশে যোগ হলো নিগারের নাম।
ফারজানার একটি সেঞ্চুরি ছিল ১৫৬ বলে, আরেকটি ১৬৫ বলে। নিগারের ৭৮ বলের সেঞ্চুরি তাই অনায়াসেই বাংলাদেশের দ্রুততম।
বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ বলে নিগারের ইনিংসও শেষ হয়। জুটি থামে ১৫২ রানে। গত ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ফারজানা ও শারমিনের ১৪৩ রানের জুটি ছিল আগের রেকর্ড।
এই ম্যাচে নিগারের ৮০ বলে ১০১ রানের ইনিংসে চার ১৫টি। বাংলাদেশের হয়ে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারির রেকর্ড এটিই। পেছনে পড়ে যায় গত ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ বাউন্ডারি।
আইরিশদের বিপক্ষে সেদিন শতরানের সম্ভাবনা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত ৮৯ বলে ৯৬ করে আউট হয়ে যান শারমিন। এবার থাইল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি অপরাজিত রইলেন শতরান থেকে ছয় রান দূরে।
নব্বইয়ে একাধিকবার আটকে পড়া বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটার এখন তিনিই।
ব্যক্তিগত আর জুটির এসব রেকর্ডের ফুলে গাঁথা হয়ে যায় দলীয় রেকর্ডের মালা। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ২৭১ রান। ওয়ানডেতে যা তাদের সর্বোচ্চ।
আগের সর্বোচ্চ ২৫২ ছিল গত নভেম্বরে আয়াল্যান্ডের বিপক্ষে।
ছয় দলের এই বাছাইপর্ব থেকে দুটি দল খেলবে আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে।