দীর্ঘ ১৭ বছর একসঙ্গে থাকার পর ‘লালন’ ব্যান্ড ছাড়লেন দলনেতা ও ড্রামার থেইন হান মং তিতি। ‘ব্যান্ডের চেয়ে ব্যক্তির প্রাধান্য’ বেড়ে যাওয়ার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই ড্রামার। গত ৯ মার্চ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) কনসার্টে শেষবার লালন ব্যান্ডের সঙ্গে বাজিয়েছেন তিতি।
গত মার্চে কুয়েটে কনসার্টের পর ফেসবুকে ‘লেফট জব’ স্ট্যাটাস দেন তিতি। আজ শুক্রবার এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিতি লালন ব্যান্ড ছাড়ার কথা নিশ্চিত করেন।
ব্যান্ড ছাড়ার বিষয়ে ড্রামার তিতি আজকের পত্রিকাকে বলেন, লালন ব্যান্ডের জনপ্রিয়তার কারণে কণ্ঠশিল্পী সুমি যতটা পরিচিতি পেয়েছেন, সে তুলনায় বাকি সদস্যরা অনেকটা আড়ালে থেকে গেছেন। ফলে কনসার্ট আয়োজকদের কাছে লালন ব্যান্ডের চেয়ে সুমির গুরুত্ব বেশি। বেশির ভাগ সময়ই কনসার্টে একা সুমিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ব্যান্ড ফেলে সুমিও সেগুলোতে অংশ নিতে পারেন না। এতে করে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিলেন। তিতি চান, সুমি নিজেকে মেলে ধরুন। এ কারণেই ব্যান্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত।
তিতি বলেন, ‘অনেকের মতো ব্যান্ডকে ব্যবহার করে ব্যবসা, বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানও করতে পারেননি সুমি। ও যত বড় শিল্পী, সে তুলনায় তাঁর আর্থিক সফলতা আসেনি। এটা ব্যান্ডের প্রতি ভালোবাসার কারণেই। দেশ–বিদেশের যেকোনো অনুষ্ঠানে সবাই সুমিকে খোঁজে, ব্যান্ডকে নয়। কারণ, ব্যান্ডকে নিলে অনেক খরচ। কিন্তু সুমি একা কোথাও যাননি। বিষয়টি আমি নিজে থেকে বুঝতে পেরেছি। আমি চাই না, ব্যান্ডের কারণে তাঁর সফলতা আটকে থাকুক। এ বিষয়গুলো দলের প্রধান হিসেবে পীড়া দিচ্ছিল। তাই ব্যান্ড ছাড়ার সিদ্ধান্ত।’
তবে সুমির বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে তিতির। তিনি বলেন, অনেক সময় স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিতেন সুমি। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করত দলের প্র্যাকটিস ও কনসার্ট। তিতি বলেন, ‘কিছু সময় প্রিয় জিনিস ছেড়ে আসতে হয়। আমি লালন ব্যান্ড ও সুমিকে সর্বোচ্চ জায়গায় নিয়ে গেছি। খারাপ সময়ে ফেলে যাইনি।’
এ ব্যাপারে সুমির ব্যবহৃত নম্বরে কল করা হলে রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
২০০৭ সালে লালন ব্যান্ডে যোগ দেন তিতি। ব্যান্ডটির বেশির ভাগ গানের সংগীত আয়োজন তাঁর করা। লালন ব্যান্ডে যোগ দেওয়ার আগে ব্যান্ড ফেইথ, আর্ক, স্বাধীনতা, কানিজ সুবর্ণার সঙ্গে বাজিয়েছেন এই ড্রামার।