শব্দসৈনিক শাহীন সামাদের জন্মদিন আজ

‘মুক্তির গান’র শিল্পী হিসেবে ১৯৭১ সালে গানের ফেরিওয়ালা হয়ে ঘুরেছেন শরণার্থী শিবির থেকে রণাঙ্গন পর্যন্ত। গানে গানে সাহস জুগিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আর সাধারণ মানুষকে। গানের এই পাখির নাম শাহীন সামাদ। আজ ২৭ ডিসেম্বর এই সংগীতশিল্পীর জন্মদিন।

১৯৫২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন শাহীন সামাদ। তার দাদার বাড়ি নোয়াখালীতে। তবে শৈশব কেটেছে ভারতের শিলিগুড়িতে। তার বাবার নাম শামসুল হুদা ও মা শামসুন্নাহার রহিমা খাতুন। তার স্বামীর নাম হাবিব-উস-সামাদ।

সংগীতপ্রেমীরা নজরুল সংগীতশিল্পী হিসেবে চিনলেও তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি ১৯৭১-এর কণ্ঠসৈনিক। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী। তবে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষকে জাগাতে মাত্র ১৮ বছর বয়সে দলের সঙ্গে পথে পথে গান করে বেরিয়েছেন শাহীন সামাদ।

সেসময় ১৪৪ নাম্বার লেলিন স্মরণীতে ‘বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’ নামে একটি সংগঠন গঠিত হয়। সেখানে ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম, মুস্তাফা মনোয়ার, আলী যাকের, আসাদুজ্জামান নূর, তারেক আলী, মুসাদ আলী, বিপুল ভট্টাচার্য্য, শারমীন মুরশেদ, নায়লা, বুলবুল মহানুবীশ, লতা চৌধুরীর মতো সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ও বুদ্ধিজীবীরা। সেখানে তিনি গেয়েছেন ‘জনতার সংগ্রাম চলবেই’, ‘চলো যাই চলো যাই’, ‘দেশে দেশে’, ‘কারার ওই লৌহ কপাট’, ‘শিকল পরার ছল’, ‘জাগো জাগো প্রতিবাদী হও’, ‘আমার প্রতিবাদের ভাষা’, ‘এসো মুক্তি রণের সাথী’, ‘পাক পশুদের মারতে হবে’, ‘শোনেন শোনেন ভাই সবে’সহ আরও কিছু গান। এই সংগঠনের হয়ে দেশের জন্য কাজ করার স্মৃতিই শাহীন সামাদের জীবনের সেরা স্মৃতি বলে মনে করেন তিনি।

শাহীন সামাদ ১৩ বছর বয়সে প্রবেশ করেন সংগীত শিক্ষালয় ছায়ানটে। তিনি রাম গোপাল, সনজীদা খাতুন, সুধীন দাশ, ফজলুল হক মিয়া, ফুল মোহাম্মদের মতো গুণী মানুষদের কাছ থেকে গানের তালিম নিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর নিজেকে নজরুল সংগীতশিল্পী হিসেবে গড়ে তুলেন তিনি। করিম-উল আলম, ফিরোজা বেগম, ফেরদৌসি রহমানসহ আরও অনেকের গান শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছেন নজরুল গানে।

এখনো তিনি নিয়মিতই গান করেন। নিয়মিতই করেন সংগীত চর্চা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পেয়েছেন নানা রকম সম্মাননা ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে অন্যতম একুশে পদক প্রাপ্তি।

জাগো নিউজ

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twenty − 10 =