শুভ জন্মদিন ফারহান আখতার

এক কথায় তাকে বলা যায় বহুমুখী প্রতিভা। একাধারে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্য লেখক, অভিনেতা, গায়ক, টিভি হোস্ট এমন একাধিক অভিধা তার নামের আগে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি স্বকীয়, স্বতন্ত্র।

ছবি তিনি নিজে বানাবেন এ স্বপ্ন অনেকের মতো তারও ছিল। এর প্রস্তুতি হিসেবে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন ১৯৯১ সালের “লামহে” ও ১৯৯৭ সালে “হিমালায়া পুত্র” ছবিতে। ১৯৯৯ সালে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এক্সেল এন্টারটেইনমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০১ সালে তার ছবি “দিল চাহতা হায়” ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে সিনেপাড়ায়। অনেকে এ ছবিকে সাক্ষ্য দেন বলিপাড়ার নিউ ওয়েভ রূপে। ভারতীয় তারুণ্যকে এমন চোখে এর আগে চিত্রায়িত করতে পারেননি কেউই। এই প্রথম ছবিতে নিজের জাত চেনান ফারহান আখতার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন এই ছবির জন্য।

২০০৪ সালে ফারহান আখতার পরিচালিত “লক্ষ্য” ছবিটি তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। তবে যুদ্ধের ছবি হিসেবে বলিউডে ভিন্নমাত্রা যোগ করে এ ছবি। একই বছর “ব্রাইড এন্ড প্রেজুডিস” ছবির সাউন্ড ট্র্যাক নিয়ে হলিউডে আবির্ভূত হন তিনি। বিশ্ব সিনেমা জগত এক প্রতিভার আগমনের সাক্ষ্য হয়। এর গীতিকার ছিলেন ফারহানের বোন জয়া আখতার।

এরপর আরেক ব্লকব্লাস্টার নিয়ে ফারহান হাজির। সেটি ২০০৬ সাল। তার শাহরুখ খান অভিনীত “ডন” ছবিটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। পরের বছর এইচআইভি সচেতনতা নিয়ে তার নির্মিত স্বল্প দৈর্ঘ্যরে ছবি “পজিটিভ” মুক্তি পায়।

অভিনেতা ফারহানকে প্রথম দেখা যায় কমেডি ছবি “দি ফকির অফ ভেনিস” ছবিতে। ছবিটি দেরিতে মুক্তি পাওয়ায় দর্শক তার প্রথম অভিনয় প্রতিভা অবলোকন করে “রক অন” ছবিতে। এর জন্যও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন তিনি। তবে এবার প্রযোজক হিসেবে। এরপর একাধিকবার স্ক্রিনে এসেছেন ফারহান। উল্লেখ করা যায়, “লাক বাই চান্স”, “কার্তিক কলিং কার্তিক”, “জিন্দেগি না মিলেগা দেবারা” ছবির নাম। তবে তার শ্রেষ্ঠ অভিনয় বলা যায়, “ভাগ মিলখা ভাগ” ছবিতে। রাকেশ ওম প্রকাশ মেহরা পরিচালিত ভারতের কিংবদন্তি অ্যাথলেট মিলখা সিংয়ের বায়োপিক এ ছবি। মিলখা চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে নিজেকে যেন নিংড়ে দেন ফারহান। ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন এ ছবির জন্য।

২০১১ সালে “ডন টু” ছবি পরিচালনা করে আবার বক্স অফিস মাত করেন ফারহান আখতার। এরপর আবার কিছু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখ করা যায় “দিল ধাদকানোকো”, “ওয়াজির”, “সাদি কি সাইড ইফেক্টস”। ২০১৭ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ছবি “লাখনৌ সেন্ট্রাল” এ তিনি ভিন্নভাবে পর্দায় আসেন। ২০১৯ সালে “দি স্কাই ইজ পিংক” ছবিটিও তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। গত বছর আমাজনে মুক্তি পাওয়া রাকেশ ওম প্রকাশ মেহরা পরিচালিত “তুফান” ছবিতেও আরেক রূপে পর্দায় এসেছেন তিনি।

সব মিলিয়ে ফারহান আখতার মানেই যেন এক ভিন্ন প্যাকেজ। চিত্রনাট্যে, অভিনয়ে, সঙ্গীত, পরিচালনা, প্রযোজনা- সবটা মিলিয়েই একজন ফারহান আখতার। অনাগত দিনে আরও সাফল্যে কীর্তিময় হোক তার জীবন; এ প্রার্থনাই আজকের দিনে তাকে ঘিরে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

four × 2 =