সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে সফরকারী শ্রীলংকার কাছে বড় ব্যবধানে হেরে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে। ম্যাচের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনেই আজে লংকানদের কাছে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারতে হয়েছে টাইগারদের। শ্রীলংকার ছুঁড়ে দেওয়া ৫১১ রানের বিশাল টার্গেটে মোমিনুল হকে লড়াকু ৮৭ রানের পরও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮২ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ম্যাচের দুই ইনিংসে শ্রীলংকা যথাক্রমে ২৮০ ও ৪১৮ রান করে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৮৮ রানে অলআউট হয়েছিলো।
এই নিয়ে সপ্তমবার ৩শর বেশি রানের ব্যবধানে টেস্ট ম্যাচে হারলো বাংলাদেশ। রান বিবেচনায় শ্রীলংকা কাছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে হারের লজ্জা পেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে রান বিবেচনায় এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয় শ্রীলংকার। প্রথমটিও বাংলাদেশের বিপক্ষে, ৪৬৫ রানে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার ছুঁড়ে দেওয়া টার্গেটে খেলতে নেমে তৃতীয় দ্বিতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ৪৭ রান করেছিলো বাংলাদেশ। মোমিনুল হক ৭ ও তাইজুল ইসলাম ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। জয়ের জন্য ৩ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ৩৮২ রান করতে হতো টাইগারদের।
আজ, চতুর্থ দিনের তৃতীয় ওভারেই শ্রীলংকান পেসার কাসুন রাজিথার শিকার হয়ে ৬ রানেই থেমে যান তাইজুল। দলীয় ৫১ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর ক্রিজে মোমিনুলের সঙ্গী হন মেহেদি হাসান মিরাজ।
দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়া বাংলাদেশকে লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করতে শ্রীলংকার বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মোমিনুল ও মিরাজ। তাদের লড়াইয়ে দলীয় ১শ রান স্পর্শ করে টাইগাররা। দলীয় ১১৭ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে রাজিথার বলে আউট হন ৬টি চারে ৩৩ রান করা মিরাজ। মোমিনুলের সাথে সপ্তম উইকেটে ৬৬ রান যোগ করেন মিরাজ।
এরপর শরিফুল ইসলামকে নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মোমিনুল। মিরাজের মত শরিফুলের সাথে হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়ার পথে ছিলেন তিনি। কিন্তু সেটি হতে দেননি রাজিথা। ধৈর্য্যশীল ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে ১২ রান করা শরিফুলকে শিকার করেন তিনি।
শরিফুলের বিদায়ে ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটার খালেদ আহমেদকে পরের ডেলিভারিতে আউট করে ইনিংসে ৫ শিকার পূর্ণ করেন রাজিথা। ১৬৪ রানে যখন বাংলাদেশের যখন নবম উইকেট পতন হয়, তখন ৬৯ রানে ব্যাট করছিলেন মোমিনুল।
শেষ ব্যাটার নাহিদ রানাকে নিয়ে শ্রীলংকার বোলারদের উপর চড়াও হন মোমিনুল। স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার করা ৪৭তম ওভারের শেষ তিন বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কা মেরে ৯০এর ঘরের কাছাকাছি পৌঁছে যান মোমিনুল।
৫০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রানাকে শিকার করে বাংলাদেশের ইনিংস ১৮২ রানে থামিয়ে দেন পেসার লাহিরু কুমারা। সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থেকে মাঠ ছাড়েন মোমিনুল। ১২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৪৮ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। শ্রীলংকার রাজিথা ৫৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন। এছাড়া বিশ্ব ফার্নান্দো ৩টি ও কুমারা ২টি উইকেট নেন।
এই হারে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে সপ্তমস্থানে নেমে গেল বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচে ১ জয় ও ২ হারে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ পয়েন্ট আছে টাইগারদের। টেবিলে বাংলাদেশের মত একই অবস্থা থাকলেও ষষ্ঠস্থানে উঠলো শ্রীলংকা।
আগামী ৩০ মার্চ থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।